আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রিমিরা কোনদিনই আমাদের হয়না।

http://rmpalash.blogspot.com/ ইএমই। তিনশ সতের নাম্বার। সিড়ি দিয়ে উঠে হাতের বামে কড়িডোর দিয়ে কিছুদুর গেলেই পাবে। তুমি অবশ্য লিফটে ও যেতে পার। তবে বুয়েটের লিফট হল গিয়ে বুড়ো ঘোড়া।

কিছুদুর গিয়ে হয়তো হাটু গেড়ে বসে পড়বে। আর তুমি মাঝখানে আটকা পড়ে হার্ট এটাক করবে। কি দরকার তার চেয়ে হেটেই যাও। এই রুমটা খুবই গুরুত্বপুর্ন। কারন এই রুমে আমি ক্লাস করি।

রিমি ক্লাস করে। তোমাদের কি বলেছি রিমির কথা! তার সমুদ্র গভীর চোখের কথা? মেঘ কাল চুলের কথা? না কিছুই তো আমি বলিনি! ------------------------------------------------ মাইক্রোপ্রসেসর ক্লাস টেষ্ট দিলাম। ম্যাডাম যে কি না!এত সহজ প্রশ্ন কেউ করে?তার জন্যে আবার আধাঘন্টা টাইম!দশমিনিট টাইমই ফার দেন এনাফ। ম্যাডামের আর কি দোষ পোলাপান একেকটা গাধার এক শেষ। মাইক্রোপ্রসেসরের এম ও বোঝেনা।

এত সহজ জিনিসে কিভাবে জিরো পায়?আমার অবশ্য ভালই আছে। গত তিনটায় ষাটে ষাট আছে। এইটা না দিলেও কিছু হইতোনা যত ঝামেলা ঐ গাধা রিমি মেয়েটার জন্যে। কিছু পারেনা। এরে দেখানোর জন্যে আমার পরীক্ষাটা দিতে হয়।

মাইয়াটা দেখতে যেমন সুন্দর পড়ালেখায় তেমনই ফাকিবাজ। তার প্রিয়কাজ হচ্ছে সিনেমা দেখা। আর এইটা সেইটা আইনা আমারে খাওয়ানো। আর খাওয়াইতে খাওয়াইতে আগেরদিন দেখা সিনেমার কাহিনী আমারে বলা। বিকালে একটু ঘুমাবো।

ক্রিং ক্রিং মোবাইল বাজছে। ধরতে ইচ্ছা করছেনা। এই সময়ে কে মোবাইল করে। মানুষের কি কমন সেন্স নাই। এই গুলারে থাপড়াইয়া পাবনা পাঠায়া দেয়া উচিত।

যত্তসব। এক বার রিং হয় ধরিনা। দুইবার ধরিনা। আমি জিদ করে ফেললাম মোবাইল ধরবোনা। কিন্তু অপর পক্ষও যেন জিদ ধরেছে আমি না ধরা পর্যন্ত কল করেই যাবে।

অবশেষে হার মানলাম। সপ্তম বারে ধরলাম। রিমি ফোন করেছে। -ফোন ধরছনা কেন? -ঘুমাচ্ছিলাম। তুমি এই সময়ে।

-আমি তোমাদের গেষ্টরুমে শিগগির নিচে নামো। এই শোন তুমি কিন্তু আবার লুঙ্গী পড়ে চলে এসোনা। পুরাই ক্ষ্যাত লাগে। ঘুম ঘুম চোখে গেষ্টরুমে গেলাম। সোফাগুলোর কাভার লাল।

নিচের কার্পেট লাল। জানালার বাইরে নীল অপরাজিতা। প্রতিটা জিনিস সুন্দর। একটার চেয়ে আরেকটা বেশি সুন্দর। পাল্লা দিয়ে সুন্দর।

কিন্তু ডানদিকের সোফায় হলুদ সবুজ ডোরা জামা গায়ে যে মেয়েটা বসে আছে,মনে হল তার কাছে বাকি সব কিছু ম্লান । এর চেয়ে সুন্দর কিছু নেই,কখনো ছিলোনা। আমি যদি কবি হতে পারতাম। অন্তত একদিনের জন্যে!লিখে ফেলতাম নতুন এক বনলতা সেন। হাজার বছর আমি পথ হাটিতেছি পৃথিবীর পথে……………………… -এই রাসেল,কি হল তোমার? আমার ধ্যান ভাংগে।

-আরে না কিছু না। চিন্তা করছিলাম। -কি চিন্তা করতে ছিলা। বলোনা শুনি -এইতো সারা দুনিয়ায় এত সুন্দর মেয়ে থাকতে আমার ভাগ্যে তোমার মত এত কম সুন্দর মেয়ে কই থেকে জুটলো? তারপরে আর কি?খাওয়া,গল্প,আদর-ভালবাসা। এভাবে সুখে দিন কাটে।

পিউর ফোর সিজি নিয়ে বের হই। একসময় রিমির সাথে আমার বিয়ে হয়। ইত্যাদি ইত্যাদি। ------------------------------------------------------ সুন্দর জীবন,আনন্দময় জীবন। মধুর জীবন।

স্বপ্ন আর বাস্তব কি এক হতে পারে? তাই আমি মাইক্রোপ্রসেসরে কোন দিনই ফুল এন্সার করতে পারিনা। কোন টার্মেই ফোর পাইনা। গেষ্টরুমে বসে গার্লফ্রেন্ড কখনোই নিজের হাতের রান্না মুখে তুলে খাইয়ে দেয়না। নীল অপরাজিতার মত সুন্দর মেয়ে গুলো রিকসার হুড তুলে কেবল দুরেই চলে যায়। বাস্তবের রিমিরা স্বপ্নের মত ফাকিবাজ হয়না।

তাদের সিজি ফোরই থাকে। আর আমার মত ল্যাগারদের জন্যে তাদের মনে কোন জায়গা থাকেনা। তাদের চোখে থাকে সুদর্শন ভাল ছাত্র পাজেরো হাকানো সুমনদের চোখ। আমরা খালি স্বপ্নই দেখে যাই। রিমিরা কোনদিনই আমাদের হয়না।

(পরের পর্বঃরিমিরা কখনোই আমাদের হয়না -রিমিরা আমাদের জন্যে না। (দ্বিতীয় ভাগ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।