অনেকদিন ধরে, অনেকদিন মানে প্রায় ১০ বছর যখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এস এস সি, এইচ এস সি রেজাল্ট বের হলে যখন সংবাদত্রের প্রথম পাতায় ছবি ছাপানো হতো তখন বন্ধুদের মধ্যে, বিশেষ করে যারা টিউশনি করে তাদের আলোচনা থেকে কোন ভাবেই মনে হতোনা এতে স্কুল/কলেজের বা শিক্ষকদের কোন ভুমিকা আছে। আমাদের দূর্ভাগ্য যে ঢাকা শহরে প্রত্যেক টি ছেলে/মেয়ের স্কুল/কলেজে ভর্তির নিশ্চয়তা নেই, তার উপর নাম সর্বস্ব ভালো স্কুলে ( রেজাল্ট ভালো, পরাশুনা নয়) ভর্তি করাতে পারাটাতো অতি শৌভাগ্যের ব্যপার। এসব ভালো স্কুল/কলেজ গুলো এবং এর শিক্ষকেরা আরো শৌভাগ্যবান যে তাদের কিছুই করতে হয়না ভালো রেজাল্ট এর জন্য, কারন অভিভাবকেরা এখন অনেক সচেতন। ছেলে/মেয়ের পরাশুনার জন্য সর্বস্ব ব্যবহার করেন, নিজের যোগ্যতার পুরোটা দিয়ে চেস্টা করেন।
তারপর ও কোচিং, বাসায় টিউটর এবং অবশ্যই প্রত্যেক বিষয়ের ক্লাস টিচারের কাছে তার বিষয় আলাদা তার বাসায় পরাতে বাধ্য হন। নইলে স্কুলে ভালো পরীক্ষা দিয়েও ভালো ফল পাওয়া যাবেনা তাদের বিষয়ে।
এবার আমি কয়েকটি অভিজ্ঞতা বলছি, আমার ছোট বোন ভিকারুননিসা আজিমপুর শাখায় গত বছর অষ্টম শ্রেনীতে থাকা অবস্থায় ক্লাস টাইমে ২ টি রুটিন ক্লাস বাদ দিয়ে কোচিং চালু করে জ়েএস সি পরীক্ষার জন্য। ক্লাস বাদ দিয়ে ক্লাস নয় কোচিং, ক্লাস টাইমে এবং ক্লাস রুমেই এটা কি শুধুই টাকার জন্যে নয়?
এবার জ়ে এস সি রেজাল্ট সাইন্স পাওয়ার উপযুক্ত নয় তাই কমার্স পরতে হবে। একদিন স্কুলে গেলাম সকল শিক্ষকের জ্ঞানের কথা শুনলাম তাদের কথা মতো বন্ড সই করে সাইন্স পাওয়া গেলো নবম শ্রেনীতে প্রথম পরীক্ষায় ভালো ফল করার নিশ্চয়তা দিয়ে।
আরো অনেক অভিভাবক একই কাজ করলেন মেয়েকে সাইন্স পরাতে! এবার প্রথম পরীক্ষার রেজাল্ট বের হলে আমার বোন পঞ্চম হলে এটাও যেন অপরাধ ও তো খারাপ ছাত্রী! ওর গনিতের অংক কেটে দেওয়া হলো তার নিয়মে হয়নি। পদার্থ বিজ্ঞানের গ্রাফ অক্ষ রেখা পরিবর্তন করে আঁকতে বলা হয়েছে সংশ্লিস্ট শিক্ষক বুঝতে না পেরে অন্যদের ভুল গ্রাফে নাম্বার দিলেন কিন্তু ওর সঠিক গ্রাফ একবার কেটে পরে অর্ধেক নাম্বার দিলেন। রসায়নের শিক্ষক করলেন আরো মজার ঘটনা ও সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছে এবং যোগের ভুলে ১ নাম্বার বাড়াতে গেলে পুনরায় ওর খাতা অনেক্ষন দেখে আরেকটা সঠিক প্রশ্নে ১ নাম্বার কেটে তার সাথে এমন আচরন করেছে যে তার মত পঁচা ছাত্রী এতো মার্কস পেতে পারেনা। এরকম অনেক উদাহরন দেয়া যেতে পারে আমাদের দেশের সবচেয়ে বিখ্যাত এই স্কুলের আমার গত অল্প কিছু দিনের সরাসরি অভিজ্ঞতা থেকে।
গত বছরের ভর্তিতে লাটারীর নামে ২ লক্ষাধিক টাকায় বেশির ভাগ কোমলতি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হলো এবং সর্বশেষ বসুন্ধরা শাখার ঘটনায় বের হয়ে আসলো বেশিরভাগ শিক্ষক একটি বিশেষ জেলার বিশেষ যোগ্যতা সম্পন্ন।
যেখানে অনেক সর্বোচ্চ যোজ্ঞতা সম্পন্ন মেধাবিরা সহজে কোন চাকরী পাচ্ছেনা সেখানে আমাদের এই ভালো স্কুলের জন্য এই মানের শিক্ষক নিলে এর ফল এমনি হওয়ার কথা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।