হুমায়ুন আজাদের ‘আমার অবিশ্বাস’ বইটি পড়া শেষ করে যেই না কোলের ওপর রাখলাম তখনি দেখলাম আমার পাশেবসা দাড়িওয়ালা ভদ্রলোক পাশ ফিরে আমার কোল থেকে বইটি তুলে নিলেন। নিতান্ত তাচ্ছিল্যের সাথে বইটিরকয়েকপাতা উল্টিয়ে আমাকে ফেরত দিলেন। আমাকে নাম জিজ্ঞেস করে কোথায় যাচ্ছি জানতে চাইলেন। তিনিও তাঁরনাম জানালেন। আবূ আব্দুলাহমুহাম্মদ আইনুল হুদা।
আরো জানালেন, তিনি নিউইয়র্কের মদীনা মসজিদের খতিব। তাঁরকাছে ধর্মীয় প্রসঙ্গে লেখা অনেকগুলো বই দেখতে পেলাম। যেহেতু আমার হাতের কাছে আর পড়বার মতো কোন বইনেই, তাই তাঁর বইগুলো থেকে ‘কান দাজ্জালের আবির্ভাব’ বইটি তুলে নিলাম। শিরোনামটাই, আমাকে বোধহয় বইটাহাতে তুলতে আকৃষ্ট করলো। বইতে লেখকের নাম দেখে নিশ্চিত হলাম আমার পাশে বসা ব্যক্তিটিই এই বইয়ের লেখক।
তারপরও তাঁকে প্রশড়বও করলাম তিনি লেখেছেন কি-না? তিনি মাথা নেড়ে জানালেন তিনিই লেখেছেন। তিনি আরোজানালেন, এটি নাকি ইতিপূর্বে মাসিক ‘পরওয়ানা’ নামক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়ে খুব পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল, তাইএটিকে বই আকারে বের করেছেন। হুদা সাহেবের কাছ থেকে জানতে পারলামÑ হযরত আদম সৃষ্টির পর থেকেকিয়ামতের পূর্ব-পর্যন্ত দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে মারাত্মক ফিতনা আর নেই। ’আমি আমার সংশয়বাদী পরিচয় প্রকাশ না করে তার সাথে কথা চালিয়ে যেতে লাগলাম :
মু আ হুদা : আমি এই বইটি লেখেছি ঈসা (আঃ) এর পুনরাগমনের এবং ইমাম মেহদীর আত্মপ্রকাশের পরের সর্বশেষদাজ্জালকে নিয়ে। এই দাজ্জালের আগমনের পূর্বে আরো ২৯ জন দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে।
হযরতমুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, “ততোদিন কেয়ামত হবেনা যতোদিন না (কমপক্ষে) ত্রিশজন মিথ্যা নবুয়ত এরদাবিদার দাজ্জালের আবির্ভাব না হয়েছে’’।
জাহিদ : ও, দাজ্জাল তাহলে একজন না। তা, সর্বশেষ এই দাজ্জালের আবির্ভাব কখন হবে?
মু আ হুদা : হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন,Ñ“ততোদিন পর্যন্ত দাজ্জাল বের হবে না যতোদিন না মানুষ বেমালুম
দাজ্জালকে ভুলে যাবে এবং মসজিদের ইমামগণ মিম্বরে দাঁড়িয়ে দাজ্জালের কথা বলা ছেড়ে দেবে। ”
দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ হবে প্রাচ্যের খোরসান বা তৎপাশ্ববর্তী এলাকায়। মনে করা হয়, সিরিয়া এবং
ইরাকের মধ্যবর্তী কোন জনপদ থেকে সে বের হবে।
হযরত মুহাম্মদ (সা.) আরো বলেছেনÑ“ত্রিশ বছর
যাবত দাজ্জালের মা-বাবার কোন সন্তান সন্তানাদি হবে না; ত্রিশ বছরের পর তাদের একটি কানা, অত্যধিক
মন্দ স্বভাবের একটি ছেলে সন্তান হবে। তার দুই চোখ ঘুমাবে কিন্তু অন্তর ঘুমাবে না। তার পিতা লম্বা
হীনকায়, গাঁইতির মতো দীর্ঘ নাসিকা বিশিষ্ট হবে। তার মা বিশালকায় উনড়বত বক্ষ, লম্বা হাত বিশিষ্ট হবে।
বিভিনড়ব হাদিসে মুহাম্মদ দাজ্জালের দৈহিক পরিচয় দিয়েছেন এভাবে, সে একজন পুরুষ, এক চোখ ফোলা,
এক চোখের উপর মোটা চামড়া থাকবে, দুই চোখের মাঝখানে কাফ, ফা, রা অর্থাৎ কাফির লিখা থাকবে, সে
হবে নিঃসন্তান।
[আমার মনের মাঝে ভেসে উঠলো ৪/৫বৎসর আগে বিটিভিতে প্রচারিত সিন্দাবাদ সিরিয়ালে সেই সমুদ্রদস্যু “কেহেরমানের”
মুখখানি। তার শারীরিক বৈশিষ্ট্যও অনেকটা দাজ্জাললের শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে যায়। বিভিনড়ব গল্প উপন্যাসে ভিলেনের
চরিত্রগুলোর প্রতি পাঠক-পাঠিকার মনে ঘৃনা ও ভীতি সঞ্চায়ের জন্য যেমন তাদের শারীরিক দিকটিকে কদর্য ও ভয়াবহ করে
তোলা হয় দাজ্জালের শারীরিক কাঠামো বর্ণনা সেই একই রীতি অনুসরণ করা হয়েছে। ]
জাহিদ : দাজ্জাল সর্ম্পকে আর একটু বলুন, শুনি।
মু আ হুদা : দাজ্জালের বাহন সর্ম্পকে বলা যায় “তার বাহন হবে এমন একটি গাধা যার দুই কানের মধ্যে ব্যবধান হবে
চলিশ
হাত।
সে বায়ুতাড়িত মেঘের মতো দ্রুত গতিসম্পনড়ব”।
[দাজ্জালের গাধার বর্ণনা শুনে আমি হা হয়ে গেলাম। যেই গাধার দু-কানের মধ্যে ব্যবধান (মাত্র) ৪০ হাত, সে ঘোড়া কথিত
অন্য আসমান থেকে পড়বে নাকি ডারউইনের তত্ত্ব সত্য প্রমাণ করে এই সময়ের ছোট খাটো গাধাগুলো দানবীয় রূপ লাভ করবে,
তা ভাবতে লাগলাম। ]
মু আ হুদা : (হুদা সাহেব মনে হয় আমার মনের কথা বুঝতে পারলেন তিনি বলতে লাগলেন) আরে এইটা নিয়ে এতো
ভাবনার কিছু নাই। আসলে দাজ্জালের বাহনটি রূপক অর্থে বোঝানো হয়েছে হয়তো।
এটা হতে পারে কোন
তঁর¹¡ (নপ্পী ১, ংৃকণধ ১ )- ঢ়প্পন ২ মুক্তমনা
সে সময়ের কোন বিশেষ বাহন। তাছাড়া দাজ্জালের অনুসারী হবে ইহুদিরা, এদের তো আলাহপাক
গাধা
বলেছেন। আর যে গাধার ঘাড়ের প্রস্ত ৪০ হাত তার গতিতে বায়ুতাড়িত মেঘের মতো হতেই পারে।
[আজ যখন মানুষ শব্দের বেগ পরাজিত করে আলোর বেগে ছুটে চলার বাহন তৈরি করতে প্রস্তুত তখন আজ থেকে আরো পরে
কেয়ামতের আগে (মরা মানুষ জীবিত করার মতো ক্ষমতাধারী) দাজ্জাল কেন যে বায়ুতাড়িত মেঘের মতো ধীরগতির বাহন নিয়ে
চলবে, তাও ভাববার বিষয়। এক্ষেত্রে পাঠকদের মনে রাখা দরকার এই গাধা দ্বারা ৪০ দিনে তিনি পৃথিবীর সব স্থানে যাবেন।
আসলে আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে মরুভূমিতে প্রধান বাহন ছিল উট। তাই সেই সময় বায়তাড়িত মেঘের বেগে চলা বাহন
অপেক্ষা দ্রুতগতির বাহন কল্পনা করা সম্ভব হয়নি। ]
জাহিদ : তা, দাজ্জাল রাজত্বের স্থায়িত্ব কত দিন হবে।
মু আ হুদা : দাজ্জালের রাজত্বের স্থায়িত্বকাল সম্পর্কে মুহাম্মদ বলেনÑ“যে দুনিয়ায় চলিশ
দিন থাকবে। এই চলিশ
দিনের একদিন হবে একবছরের সমান, একদিন একমাসের সমান, এক দিন এক সপ্তাহের সমান, অবশিষ্ট
দিনগুলো তোমাদের স্বাভাবিক দিনের সমান”।
[হুদা সাহেব তার বইয়ের ২৫ পৃষ্ঠা খুলে আমাকে দাজ্জালের রাজত্বের স্থায়িত্ব সম্পর্কে পড়তে দিলেন। আমি দেখলাম, বইয়ে
উলেখিত
কোনো কোনো হাদিসে বলা হয়েছে, দাজ্জালের রাজত্বের মেয়াদ ৪০ দিন আবার কোথাও বলা হয়েছে ৪০ বছর। কিন্তু
এই কথার গড়বড়কে রূপকে হিসেবে ধরে নিয়ে বিভিনড়ব ইসলামি মুহাদ্দিসগণ নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন।
মুসলমানেরাও খুব ভালো ছেলে; ওরা প্রশড়ব করে না, যা পায় তাই খায়। ]
জাহিদ : তা, দাজ্জাল আর কী কী করবে?
মু আ হুদা : ঈমানের সর্বোচ্চ পরীক্ষা হবে দাজ্জালের সময়।
যেমনÑদাজ্জাল এক ব্যক্তিকে পাকড়াও করবে, তাকে
করাত দিয়ে দ্বিখণ্ডিত করে বলবে। তারপর তাকে আবার জীবিত করে তুলবে এবং তাকে প্রশড়বও
করবেÑ“তোমার প্রভু কে”। লোকটি উত্তর দেবে আলাহ।
সেই লোকটি হবে জানড়বাতে রাসুলের উম্মতের
মধ্যে সবচেয়ে প্রিয়। দাজ্জাল আসবে লাখো পাপ পঙ্কিলতায় পূর্ণ তাগুতি বিশ্বকে নাফরমানিতে পূর্ণ করতে।
আর অন্যদিকে ইমাম মাহদী আসবেন আলাহর
দুনিয়াকে এসকল নাফমানির প্রভাত থেকে মুক্তি দিয়ে
দুনিয়াতে আলাহর
শাসন কায়েম করতে। বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বলা যায়Ñকানা দাজ্জালের
শাস্তির বিশ্ব কায়েম হয়ে গেছে। আমরা মুসলমানেরা যেমন ইমামমেহদী আত্মপ্রকাশ এবং ঈসা (আ.) এর
পুনরাবিভার্বের জন্যে অপেক্ষা করছি তেমনি কোনো কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ দাজ্জালের জন্যে অপেক্ষা
করছে যব রং পড়সরহম ¯োগান
নিয়ে। দাজ্জাল আসার আগে তার রাজত্ব কায়েম হয়ে যাবে। বিশ্বের
আনাচেকানাচে যেকোনো ভাবে তার বাহিনী পৌঁছে যাবে।
আপনি যদি বাংলাদেশের দিকে তাকান তবে
দেখবেন-বাংলাদেশে বিভিনড়ব নামে, বিভিনড়ব পরিচয়ে, বিভিনড়ব কায়দায়, বিশেষ মতাদর্শে বিশ্বাসী কতিপয় লোক
অতিসম্প্রতি তাদের বিশেষ কাজ শুরু করে দিয়েছে। তাদের দেখে মানবতার পরম হিতৈষী বন্ধু মনে হয়।
কিন্তু এরা দাজ্জালের রাজ্যের বিস্তারে সাহায্য ছাড়া কিছুই করছে না।
জাহিদ : আমি ঠিক বুঝলাম না আপনি কাদের কথা বলছেন?
মু আ হুদা : অনেকেই তো আছে, কেন এই যে নামে বেনামে এনজিও গড়ে উঠছে এরাইবা কম কিসের।
জাহিদ : কেন ওরা তো অনেক ভালো কাজ করছে, যেমন মানুষকে স্বনির্ভর, শিক্ষা বিস্তার, দারিদ্র্য বিমোচন,
নারীদের...
মু আ হুদা : নারী স্বাধীনতা? জাহিলিয়া যুগের লক্ষণই হলো, নারীরা ঘরের বাইরে বের হয়ে আসবে-ব্যভিচার শুরু
হবে।
এই এনজিও এগুলো বৃদ্ধি করছে।
জাহিদ : দাজ্জালের অনুসারি কারা হবে?
মু আ হুদা : দাজ্জালের অনুগামীরা মূলত ইহুদিদের থেকেই হবে। তারপর বেদুইন পলীবাসী
এবং মহিলারা।
জাহিদ : আলাদাভাবে মহিলাদের কথা বলার কী দরকার?
মু আ হুদা : ভণ্ডপীর, ভণ্ডনবী আর ভণ্ডবাদের তাবেদারিতে মহিলারা হরহামেশাই পুরুষের চেয়ে পাকাপোক্ত।
দাজ্জালের ডাকে তাই মহিলারা সবচেয়ে বেশি সাড়া দেবে।
দাজ্জালের ডাকে সাড়া দেবে তাই তখন মানুষ
তার স্ত্রী, মা, মেয়ে, বোন ও ফুফুকে দড়ির সাহায্যে বেঁধে রাখবে।
[নারীদের ব্যাপারে একটা নতুন তথ্য জানা গেল! অবশ্য ধর্ম নারীদের পর্দার নামে বোরকা বন্দি করে রাখে, সে ধর্ম নারীদের
তঁর¹¡ (নপ্পী ১, ংৃকণধ ১ )- ঢ়প্পন ২ মুক্তমনা
ব্যাপারে এ ধারনা পোষণ করতেই পারে, তাতে অবাক হবার বেশি কিছু নেই। ]
জাহিদ : দাজ্জালের কাহিনীটা শুনি তাহলে।
মু আ হুদা : দাজ্জালের অভ্যুত্থান সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী স্থানে হবে। ইস্পাহানের ৭০ হাজার তলোয়ারধারী ইহুদি
তার তাবেদার হবে।
অনেক দেশ জয় করবে এবং ধর্ম ভ্রষ্টও লোক তার অন্তর্ভূক্ত হবে। সে মক্কা ও মদিনায়
প্রবেশের চেষ্টা করলে আলাহর
নিযুক্ত ফেরেস্তা তাকে বাধা দেবে। দাজ্জাল তখন সিরিয়ার ্অভিমুখে যাত্রা
করবে। দামেস্কে তখন ইমাম মাহদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেবেন। একদিন আছরের সময় হঠাৎ ঈসা
দু-জন ফেরেস্তার কাঁধের উপর ভর করে আসমান হতে অবর্তীণ হবেন।
দামেস্কের জামে উমাওয়ী মসজিদের
পূর্ব দিকের মিনারের উপর এসে দাঁড়াবেন। ইমাম মাহদী তার উপর যুদ্ধের সমস্ত ভার ন্যস্ত করতে চাইবেন।
কিন্তু তিনি বলবেন, ভার তো সব আপনার উপর থাকবে, আমি শুধু দাজ্জালকে বধ করবার জন্য এসেছি।
ঈসা একটি ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে একটি বলম/
বর্শা হাতে দাজ্জালের দিকে ধাবিত হবেন। অন্যান্য মুসলমান
সৈন্যগণ দজ্জালের সৈন্যগণের উপর আক্রমণ করবে।
ভীষণ যুদ্ধ হবে। ঐ সময় ঈসার নিঃশ্বাসের মধ্যে
এমন এক তাছির হবে যে, যতদূর দৃষ্টি যাবে ততো দূর শ্বাস যাবে এবং যে কাফিরের গাঁয়ে শ্বাসের একটু
বাতাস লাগবে সে হালকা হয়ে যাবে। দাজ্জাল ঈসাকে দেখে ভাগবে। ঈসা তাকে পিছু নেবেন। ‘বাবে লোদ’
নামক স্থানে গিয়ে দাজ্জালকে বধ করবেন এবং তার বর্শায় দাজ্জালের রক্ত দেখাবেন।
তারপর ঈসা যত
জায়গায় দাজ্জাল অশান্তি স্থাপন করেছে, সেই সব স্থানে গিয়ে জনগণকে শান্তি দান করবেন। আলাহ
ইহুদিদের নির্মূল করবেন, আলাহর
সৃষ্টির মধ্যে এমন কিছু থাকবে না যার আড়ালে গিয়ে প্রাণে বাঁচবে।
পাথর, গাছ, দেয়াল, চতুষ্পদ জানোয়ার সবাই মুসলমানদের ডেকে লুকিয়ে থাকা ইহুদিদের দেখিয়ে দিয়ে
হত্যার কথা বলবে। শুধু গারক্বাদ বৃক্ষ কোন কথা বলবে না। কারণ এটা ইহুদিদের গাছ।
জাহিদ : তাহলে গাছেরও আলাদা ধর্ম আছে!
মু আ হুদা : কী বলে নাই আবার। তুলসি গাছও তো একটা হিন্দু গাছ। আর সব গাছপালাও তো আলাহর
ইবাদত
করে।
জাহিদ : যুদ্ধে তাহলে তলোয়ার, বর্শা ও ঘোড়া ব্যবহৃত হবে। আজকের দুনিয়ায় যুদ্ধে যেখানে
পারমানবিক-রাসায়নিক আধুনিক অস্ত্র, বিমান-রাডার ব্যবহৃত হচ্ছে সেখানে কেয়ামতের পূর্বে যে যুদ্ধ হবে
তাতে কেন মধ্যযুগ বা প্রাচীন যুগে ব্যবহৃত তলোয়ার বর্শা ও ঘোড়া ব্যবহৃত হবে এটা হাস্যকর নয় কি?
আসলে আমার মনে হয় প্রাচীনকালে যারা এই ধরনের গল্প ফাঁদেন বা অন্য কোনো প্রাচীন গল্প থেকে সংগ্রহ
করেন, তারা ভাবতেও পারেননি, দেড় দু-হাজার বছর পর পৃথিবীটাকে মানুষ কতোটা এগিয়ে নেবে।
অবশ্য
তার শুন্য মস্তিষ্কের অধিকারী অনুসারীরা এসকল গাঁজাখুরি গল্পের ফাঁক-ফোঁকর ঢাকতে বিভিনড়ব রূপক অর্থ
খোঁজায় খুবই দক্ষ। আর এই যে আপনি বলেছেন কেয়ামতের বিভিনড়ব আলামত দেখা যাচ্ছে, দাজ্জালের
রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে, এই সব আলামতের লক্ষণ আপনারা বহু শ বছর ধরে পেয়ে আসছেন আরো বহু
শ বছর পাবেন। কিন্তু চোখের পর্দাটা সরালে দেখতে পাবেন মানুষ সেই প্রাচীন অন্ধার সভ্যতাটাকে আলোর
পথে অনেকদূর টেনে নিয়ে এসেছে, টেনে নিয়ে যাবে হয়তো আরো বহু দুর। আর এই সভ্যতা এগিয়ে
যাবার পথে প্রধান সমস্য আপনাদের কাল্পিক দাজ্জাল নয়। প্রধান বাধা আপনাদের অজ্ঞতা, অন্ধবিশ্বাস,
কুসংস্কার।
এই সব গাঁজাখুরি গল্প অনেকটা রোগের মতো। এর সব গল্পে বিশ্বাস করে অনেকে নিজেকে
মানবসমাজের উদ্ধারকারী হিসেবে নিজেকে ইমাম মাহদী ঘোষণা করবে, ঘৃণা জন্মাবে ইহুদি সহ অন্য
ধর্মালম্বীদের প্রতি। গত বৎসর ও পাকিস্তানে এমনি এক স্বঘোষিত ইমাম মাহদী তার কিছু অনুসারী সহ
পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। দাজ্জালের মতো কাল্পনিক শক্র তৈরি করে আর এধরনের গাঁজা খুরি গল্পে
বিশ্বাস করে কাজের কাজ যা হয়েছে তা হলো মানুষে মানুষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে...
মু আ হুদা : বেয়াদপের মতো কথা বলবে না। খুব বেশি বুইজ্জা ফেলছো, আমার আগেই বোঝা উচিত ছিল, যে ছেলে
হুমায়ুন আজাদের মতো একটা নাস্তিকের বই পড়ে তার সাথে এসব জ্ঞানের কথা বলতে যাওয়া মানে সময়
নষ্ট করা।
আলাহপাক
তোমার হেদায়েত করুন।
উনি রেগে হন হন করে চলে গেলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।