I realized it doesn't really matter whether I exist or not.
দাজ্জাল সম্বন্ধে সচেতন মুসলমানরা আমরা কিছুটা হলেও জানি। নবী (স) শেষ জামানায় দাজ্জালের আবির্ভাব নিয়ে মুসলিম জাতিকে সতর্ক করে দিয়েছেন। দাজ্জাল হবে মুসলিম জগতের সবচাইতে বড় উদ্রেকের বিষয় ও সবচাইতে ভয়াবহ ফিতনা সৃষ্টিকারী, একথা বহু সহীহ হাদীস আমাদেরকে বলে।
কিন্তু আজ দুপুরে একটা কাজে ভাসানী স্টেডিয়াম যাবার সময় বাসে একটা লোককে "দাজ্জাল - ইহুদী খ্রিষ্টান সভ্যতা" নামক একটি বই বিক্রি করতে দেখলাম। প্রথমে ভাবলাম, যাক খারাপ না।
দাজ্জাল সম্বন্ধে মানুষ যেন জানে, এটা সবারই কাম্য। কিন্তু বিক্রেতা ছেলেটা একনাগাড়ে এসে যেভাবে বিজ্ঞাপণ করে গেল, তা শুনে তো আমি মহা চিন্তিত। একজন মুসলমান হিসেবে বিষয়টা নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। কারণ, লেখক বইটিতে দাজ্জালের ধারণাকে তুলে ধরেছেন সম্পূর্ণ ভুল ও বানোয়াট একটি চিত্রে। বইটি পড়িনি, তবে যিনি বিক্রি করছিলেন, তার কথাবার্তায় বোঝা গেল, বইটিতে প্রমাণ করা হয়েছে যেঃ
"দাজ্জাল হবে আখেরি জামানায় মুসলমানদের জন্য ভয়াবহ এক ফিতনা।
কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে দাজ্জাল ইতিমধ্যেই দেখা দিয়েছে। না, দাজ্জাল কোন জন্তু বা জানোয়ার নয়। সমগ্র ইহুদী খ্রিষ্টান সভ্যতাই হচ্ছে সেই দাজ্জাল। আল্লাহর নবী (স) বলেছেন, দাজ্জালের নির্দেশে আকাশ হতে বৃষ্টি ঝড়বে। আজকাল উন্নত দেশে ক্ষুদ্র মেঘের উপর হেলিকপ্টারের সাহায্যে রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানো সম্ভব হচ্ছে।
মূলত আল্লাহ বৃষ্টি ঝড়াবে বলে রূপক অর্থে আজকের ইহুদী-খ্রিষ্টানদেরই বুঝিয়েছেন। এই ইহুদীরাই হচ্ছে সেই দাজ্জাল। হিসাবমতে, এই দাজ্জালের বয়স ৩০০+ বছর। এই দাজ্জাল সম্পর্কে সচেতন হতে ও আরো জানতে এই বইটি পড়ুন। দাম নিচ্ছি মাত্র চল্লিশ টাকা।
"
ছবিঃ নাফিস ইফতেখার ভাইয়ের সৌজন্যে।
টাকা থাকলে বইটা কিনতাম। দেখতাম কীভাবে এতবড় একটি ভুল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ইহুদী খ্রিষ্টানরা যাই করুক, তারা দাজ্জাল নয়। দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে কেয়ামতের কিছুদিন আগে এবং দাজ্জাল হবে দৈত্যরূপী।
দাজ্জালের এক হাতে থাকবে [কৃত্রিম]বেহেশত, আরেক হাতে [কৃত্রিম] দোযখ। দাজ্জাল এক ইশারায় যেকোন মৃত মানুষকে জীবিত করে তোলার ক্ষমতা বহন করবে। দাজ্জালের কপালে আরবিতে লেখা থাকবে কাফির। দাজ্জাল চাইলে মানুষকে হত্যা করে তাকে পুনরায় জীবিত করতে পারবে, যাতে আরেকজন মুসলমান তাকে খোদা বলে মেনে নেয়। দাজ্জালকে নিয়ে আরো অনেক কথা বর্ণিত আছে সহীহ হাদীস সমূহে।
এজাতীয় শত মু'জেযা বা ক্ষমতা দেয়া থাকবে দাজ্জালের হাতে। কিন্তু প্রকৃত মুসলমান কখনোই এসবে ভুলবেনা।
প্রশ্ন হচ্ছে, ইহুদী খ্রিষ্টানরা কি মৃত মানুষকে জীবিত করতে পারছে? তাদের হাতে কি কৃত্রিম বেহেশত দোযখ আছে? তাদের কপালে (!) কি আরবিতে কাফির লেখা আছে? বিদেশি সভ্যতা কি মানুষ হত্যা করে পুনরায় জীবিত করতে পারছে?
ইচ্ছে করছিল প্রশ্নগুলো ঐ লোকটাকে করি। কিন্তু কোন লাভ হবে না ভেবে কিছু বললাম না। পাশের সিটে আম্মু ছিল।
বললাম, কী বলে গেল খেয়াল করেছো? আম্মু বলল, হ্যাঁ, বাজে কথা। দেখলি না, কেউ কিনলো না।
আমি বললাম, কেউ কিনলো না সেটা বড় ব্যাপার না। বড় ব্যাপার হচ্ছে এই যে, একটা বড় ভ্রান্ত ধারণামূলক প্রচারণা চলছে শহরজুড়ে। যাদের ধর্মীয় গ্রন্থসমূহের সরাসরি জ্ঞান নেই, তারা বুঝে নিবে এটাই সঠিক।
বেশকিছু মুসলমান সরে যাবে সহীহ হাদিসসমূহে বর্ণিত আসল সত্য থেকে। এটাই চিন্তার বিষয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।