নিজেকে শিক্ষিত ভাবতে চাই, কারন আমি যা শিখি আমি তা বিশ্বাস করি। আমার শিক্ষা আমার বিবেক কে জাগ্রত করে। এবং অপশক্তির কাছে মাথা নত করতে আমার বিবেকে বাঁধে। খুব বেশি দিন আগের কথা বলছি না। এইতো ২০০৭! আমাদের প্রান প্রিয় ভিকারুন নিসায় আমার শেষ বছর ছিল।
এই স্কুল্টিতে আমি আমার জীবনের ১২ টি বছর কাটিয়েছি। ৫ বছরের ছোট্ট বালিকা থেকে ১৭ বছরের কৈশোর জীবনের বেড়ে ঊঠাটা আমার এখানেই।
এখানে আমি শিখেছি কিভাবে মানুষ হতে হয়। কিভাবে নিজের আত্তসম্মান অর্জন করতে হয়। পরিক্ষায় আমরা বরাবরই ভালো।
কিন্তু আমার আপারা আমাদের কে পরিক্ষার জন্য যতটা না তৈরি করতেন তার চেয়ে বেশি তৈরি করতেন জীবনের পথের জন্নে।
আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকারা ছিলেন আমাদের বাবা মায়ের মত। শিক্ষিকাদের কে বলতাম আপা আর স্যার রা বাবাদের মতই স্নেহপ্রবন ছিলেন। উনাদের কাছে আমরা ছিলাম 'মেয়েরা। শুধু স্যারদের কথাই বলবো কেন! আমাদের ঘণ্টা মামা, দারোয়ান মামা সবাই তো আমাদেরকে স্নেহ আর পিত্রি মমতায় দেখে শুনে রাখতেন।
একদিন এর কথা! আমি তখন স্কুল বাসে যাওয়া আসা করতাম। ফাক পেলেই আচার কিনতে গেইটের বাইরে ভো দৌড়। দারওয়ান মামা তাই সবসময় চোখে চোখে রাখতেন। একদিন তাকে জিজ্ঞাশ করেছিলাম 'আপনি কেন আমাকে আচার আনতে দেন না?'
সদা হাস্য সেই মামা বলেছিলেন' বড় হলে বুঝবে'।
কেন জানি না, এতো বছর পর আজ ও সেই কথাটা মনে আছে।
আর যখন জীবনের প্রতি পদে পুরুষের কামনা বিদ্ধ চোখে প্রতিনিয়ত জর্জরিত হতে হয়, তখন সেই মামার কথা খুব মনে পড়ে।
কিছুদিন আগেও আমাদের যখন একটা রিউনিওন হোল, তখনও আমাদের মামা রা ওয়ার্ল্ড কাপের উদ্বোধনী অনুস্ঠান মিস করে আমাদের রিহারসেলের সময়, আমাদের নিরাপত্তার জন্য থেকেছেন। এর আগের রই ইউনিয়নের সময় রাত ৯টা পর্যন্ত আমাদের পিটি আপা আর মুজিবর স্যার ছিলেন আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
এখন প্রায়ই একটা কথা শুনি, আমাদের স্কুলের টিচারদের কাছে না পড়লে না কি নম্বর পাওয়া যায়না। না! বলছিনা আমাদের সময় আমরা কোচিং করতাম না।
আমরাও করতাম। আর ক্লাস ১০এ মডেল টেস্ট টা দেওয়া একটা ফ্যাশনই ছিল আমাদের জন্য। কিন্তু মনে পড়ে আমাদের ক্লাসে একদিন আমাদেরি এক আপা বলেছিলেন,'মডেল টেস্ট নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে সময় নষ্ট কর না। প্রি-টেস্ট, টেস্ট আর প্রিপারেশন টেস্টের প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়, সব কমন পাবে। ' অনেকে কোচিং করাতেন কিন্তু কোনদিন কাউকে কোচিং এ আসতে কাউকেই জোর করেন নি।
এমন ও হত আপারা কোচিং করাতে চাইতেন না। মায়েরাই বারং বার অনুরধ করতেন।
আজ এতো দিন পর,ব্লগ আর পেপারগুলতে যখন আমাদেরই এক বোনের নির্যাতনের খবর দেকছি। তাও আমাদের এই প্রতিষ্ঠানেরি একজনের দ্বারা, (দুঃখিত একে শিক্ষক বলতে আমার বাধছে) তখন আর কিছু ভাবতেই পারছিনা। এটাও কি সম্ভব! এর কি কোনো বিচার হবে না! আমাদের ভিকারুন্নিসা আমাদের কাছে শুধু একটা প্রতিষ্ঠান নয়।
বিশ্বাস করুন, আমরা যারা এখানে পড়ে গেছি আমাদের কাছে এ এক প্রান পূর্ণ আশ্রয়।
কোন ভাবে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের কারো সম্মান হানি হতে দেবনা। কোন শক্তি বলে রাজউকের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে একই অপরাধে বিতারিত এই লোক আমাদের এই অঙ্গনকে নংরা করে, আমরা আজ তা জানতেছাই। ,এই লোক নাকি আবার বিসিএসে পাশ ও করেছে! এর মত পশু বসবে আমাদের রাজ কর্মকাণ্ডে! এই লোকের অবিলম্বে বিচার চাই। আজ শোনা যায় এই পশুর বাড়ি গোপালগঞ্জ বলেই নাকি এই প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে পেরেছে আজ বিচার চাই তাদের ও যারা একে নিয়োগ দিয়েছে।
এক ব্লগার ভাইয়ের ব্লগের বোল্ড করা অংসটুকু পড়ে রিতিমত আকাশ থেকে পড়লাম দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির বলি আমাদের দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান হয়েছে। আর একটিও নয়, অন্তত আমাদের ভিকারুন নিসা কে তো এর শিকার হতে দেওাই যাবে না। এই প্রতিষ্ঠান আমাদের সবার গর্ব। আসুন আমরা এক হই।
এই অমানুষের বিচারের দাবিতে এবং
আমাদের প্রতিষ্ঠানে যে স্বজনপ্রীতি শুরু হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।