আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরিমিত দুঃখের বচন-"মুদ্রার ওপিঠ"

পরিমিত দুঃখের বচন-"মুদ্রার এপিঠ" তারপরও জীবন চলে তার নিজস্ব নিয়মে। ভাল থাকার অভিনয় ঠিক মত করতে পারি বা না পারি জীবন চলেই যায়। নদী যেমন কখনও সংকীর্ণ পথ,কখনও বিস্তীর্ণ সোজা পথ আবার কখনও বা দুর্গম পাহাড়ের উপর দিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন ছুটে চলে আপন গতিতে কারণ তার তো সাগরের সাথে মিলিত হওয়ার আগে থামার উপায় নেই। জীবনও কখনও কারও জন্য বা কোনও কিছুর জন্য থেমে থাকে না। শূন্যস্থান ঠিক ই পূরণ হয়ে যায়।

হয়ত আগের মত পূরণ হয় নাহ। কেউ এটা নিয়ে আফসোস করে যে কেনও আগের মত অথবা তার চেয়ে ভালভাবে পূরণ হল নাহ,আবার কেউ সহজ ভাবে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়। মানব মনও বড় বিচিত্র। আমরা যা পাইনি সেইগুলা নিয়েই সব সময় মাতামাতি করি,অথচ আমাদের যা আছে তা আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। অন্যদের জীবনের সাথে নিজের জীবনের তুলনা করে অনর্থক কষ্ট পাওয়ার বিলাসিতায় আমরা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত, ভবিষ্যতের অনাগত দুঃখ-কষ্টের কথা ভেবে ভীত।

আমাদের যাদের এই অবস্থা তারা অতৃপ্ত থাকবে আজীবন । ভার্সিটির সময়টা জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়,এতে কোনও সন্দেহ নেই। জীবনটা উপভোগের অনুকূল সময়। এই উপভোগ ব্যক্তি ভেদে এক এক রকম হয়। কেউ কেউ নতুন গার্ল ফ্রেন্ডের মোহে পুরানো বন্ধুকে ভুলতে দ্বিধা বোধ করে নাহ, অনেকে গার্ল ফ্রেন্ড থাকলেও বন্ধুত্তের মর্যাদা ঠিক রাখার চেষ্টা করে।

আবার অনেকে টিউশনির মাঠে চার, ছয় হাকাতে ব্যস্ত থাকে। আর কতিপয় কিছু অভাগা থাকে যারা নিজেদের শুধু পড়াশুনায় আবদ্ধ রাখে। আর যারা আমাদের(আমি ও আমার টোটো বাহিনী) মত তারা সর্বদা সর্বাবস্থায় হিট ও ফিট। ভার্সিটিতে আসার পর কম বেশি সবাই চায় যে একজন মনের মানুষ থাক, যার সাথে সব কিছু শেয়ার করা যাবে, যে অসুস্থতার কথা শুনে দুশ্চিন্তা করবে, পড়াশুনায় উৎসাহ দেবে। আব্বু আম্মু তো ভালবাসেই কিন্তু এই পর্যায়ে এসে তা যেন আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়।

মুখে বলি আর নাই বা বলি সবাই চাই যে আহা!আমারও যদি কেউ একজন থাকত যার সাথে মন খারাপ থাকলে কথা বলব, নিজের জন্মদিনটা তার সাথে কাটাব, তার জন্মদিনে রাত ঠিক বারটায় উইশ করব.........(আরও অনেক কিছু) এই আশা সবার পূরণ হয় নাহ। অনেকের পূরণ হয়েও হয় নাহ কারণ তার ভালবাসার মানুষটা হয়ত তার থেকে অনেক দূরে। নাই বা হল, এইখানে কয়েকজন সোনার মানুষ আছে যারা সকল আনন্দে দুঃখে বিপদে ছায়ার মত পাশে থাকে। গার্ল ফ্রেন্ডের হাত ধরে নাই বা হাঁটতে পারলাম, যখন এই মানুষদের সাথে হাঁটি, আড্ডা দেই ক্যাম্পাসে বসে তখন জীবনটা সার্থক ই মনে হয়, আনন্দগুলো অনেক গুণে বেড়ে যায়, বুকের জমাট বাধা কষ্টগুলো হাল্কা হয়ে যায়। এই মানুষদের মধ্যে আছে আমার স্কুলের বন্ধু, বড় ভাই।

জন্মদিনটায় যখন এদের দাওয়াত দেই তখন এরা আমার জন্য কেক কিনে নিয়ে আসে,কেক কাটার পর সেই কেক দিয়ে আমার বন্ধুরা অতি যত্ন সহকারে আমার মুখের যত্ন নিতে মারাত্মক রকম ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর উপহারের কথা বলাই বাহুল্য। আমি ভাগ্যবান যে এরকম বন্ধু আর বড় ভাই আমার আছে। গার্ল ফ্রেন্ড থাকলেও অনেক সময়ই তিনি আউট অফ নেটওয়ার্ক হন, কিন্তু বন্ধুরা সব সময় নাগালের মধ্যে। একটি ডাকই যথেষ্ট।

সব বন্ধু তো আর প্রকৃত নয় আমার বন্ধুদের মত কারণ সবাই তো আর ভাগ্যবান হয় নাহ(একটু পার্ট নিলাম) । জীবনটাকে বেশি সিরিয়াসলি নিয়া উচিত নাহ। আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অতিত নিয়ে আফসোস করি আর ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা করি। তাই আমাদের বর্তমান উপভোগ করার আগেই আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যায়। জীবনে অনেক কিছুই ঘটে যা আমাদের জীবন উলটপালট করে দিয়ার জন্য যথেষ্ট, তারপরও মানুষ টিকে যায়।

জীবন ভাল লাগুক মন্দ লাগুক জীবন তো চলবেই, কাজেই যা আছে যে পেয়েছি তাই নিয়ে ভাল থাকার চেষ্টা করাই কি শ্রেয় নয়????????? (পাঠক, বেশি দর্শন আর ভারি কথার জন্য বিরক্ত লাগলেও মেনে নিবেন। জানেনই তো জীবনে অনেক কিছু মেনে নিতে হয়। ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।