ইতিহাসের পেছনে ছুটি তার ভেতরটা দেখবার আশায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই। দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো কখনও আদিবাসী ছিল না। এই ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীগুলোকে সংবিধানে উপজাতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র সম্প্রদায় হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হবে।
গতকাল সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ভূগোল সমিতি আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা
বলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, আইএলও কনভেনশন-১৬৯ অনুযায়ী, যারা কোনো অঞ্চলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগে থেকেই বসবাস করে, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তারা সেখানকার আদিবাসী হিসেবে বিবেচিত হয়।
এ কনভেনশন অনুযায়ী আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ান এবং অস্ট্রেলিয়ার অ্যাবঅরিজিনরা আদিবাসী হিসেবে গণ্য। তিনি আরও বলেন, ওই কনভেনশন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে পার্বত্যাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেসব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বসবাস করছে তারা আদিবাসী নয়—তারা উপজাতি জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন।
বাংলাদেশ ভূগোল সমিতি (বিজিএস) ৫৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষে ‘রাজধানী ঢাকার বৃদ্ধি ও পরিবেশ’ শীর্ষক দিনব্যাপী এ সেমিনারের আয়োজন করে। বিজিএস সভাপতি একিউএম মাহবুবের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাজিম। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ।
সেমিনারে সংবিধান ও সংসদ সম্পর্কে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধান আমাদের সর্বোচ্চ আইন। সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের অভিভাবক। কোর্ট যা রায় দেবেন তা সবাইকে মেনে নিতে হবে। এ ব্যাপারে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই। সংসদ সংবিধানের সৃষ্টি।
সংবিধান এর সৃষ্টিকর্তা। তাই সংসদ চাইলেই ইচ্ছামতো সংবিধান পরিবর্তন করা যায় না।
আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৯ সালে বিএনপি সরকারের আমলে দেশের সংবিধানকে এক ব্যক্তি গায়ের জোরে সংশোধন করেছিলেন। তিনি বলেন, ’৭২-এর মূল সংবিধানকে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল। দেশে কোনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ তখন ছিল না।
সময় সময় সামরিক ফরমান জারি করে গায়ের জোরে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে, যা বেআইনি। তিনি বলেন, এজন্য সংবিধানের পঞ্চম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী মূল সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় সুপ্রিমকোর্ট যে রায় দিয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। তিনি আরও বলেন, সংবিধান সৃষ্টিকর্তা। এটাকে ধ্বংস করা যায় না।
পরিবেশের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও জলাধার রক্ষায় আইন পাস করেছে।
সংবিধান সংশোধন চূড়ান্ত হলে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সংবিধানে পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নের সুষ্ঠু নীতিমালা থাকবে। এটা দেশ পরিচালনার মূলনীতির অন্তর্ভুক্ত হবে। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে শহরের আয়তনও বাড়ছে। পাশাপাশি সরকারও নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করছে।
এখন থেকে জলাধার কিংবা পুকুর ভরাট করে আবাসিক এলাকা নির্মাণ করা যাবে না। বরং এসব রক্ষা করেই আবাসিক এলাকা নির্মাণ করতে হবে। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের আশপাশে এবং অভ্যন্তরে যত খাল-বিল ও নদীনালা ছিল, তা সংরক্ষণে কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এমনকি নিজের বাড়িতেও কোনো গাছ কাটতে হলে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এ ধরনের আইন সরকার প্রণয়ন করতে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন আইনমন্ত্রী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।