আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়- বিশ্বের ১০ সবচেয়ে দূর্গম মন্দির/মঠ (কত অজানা রে পার্ট-৪৩)

আমার "কত অজানা রে" সিরিজের সব গুলো পোষ্ট সংগ্রহে থাকা বই, গুগোল মামা ও বিভিন্ন সাইট থেকে অনুবাদ করা, তবে কোন ভাবেই কপি-পেষ্ট নয়। জানার জন্য পড়ন, ভুল হলে সঠিকটি বলার দায়িত্ব আপনাদের। আনন্দের সাথে পড়ুন। আমার ব্লগ কেচাল মুক্ত। বলা হয়ে থাকে কিছু ভালবাসা মনে কালশিটে দাগ তৈরি করে।

কথাটা সত্য। এটাও সত্য যে প্রভুর প্রতি ভালবাসা অনেক সময় শরীরে দাগ তৈরি করে। কিভাবে? আজ বলবো এমন ১০টি মঠ বা উপাশনালয়ের কথা যাদের অবস্থান স্বর্গের কাছাকাছি শুধু নয়, সেখানে পৌছানোটা আপনার মনে প্রভুর প্রতি ভালবাসার কঠিন একটা পরীক্ষা হয়ে যাবে। ১০) The Monastery Of Ostrog, Montenegro এটি একটি সার্বিয়ান অর্থডক্স চার্চ যা "Greda-Ostroška" পাহাড়ের এর পাথর খুরে বানানো। এটা মন্টিনিগ্রোর সবচেয়ে জনপ্রিয় তীর্থস্থান এবং হাজার হাজার মানুষ প্রতি বছর তীর্থযাএা করতে আসে।

এটি ১৭ শতকে হারজেগোভিনার মেট্রোপলিটন বিশপ "Vasilije" প্রতিষ্ঠা করেন। মঠটির বর্তমান চেহারা দেওয়া হয় ১৯২৩-২৬ সালে যখন এটিতে আগুন লেগে প্রায় ধবংশ হয়ে যায়। বিশপ ১৬৭১ সালে মৃত্যুবরন করেন। তার মরদেহ এখানে সমাহিত করা হয়। কথিত আছে তার মরদেহের কাছে বসে পার্থনা করলে আরোগ্য লাভ হয় ও সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায় তাই প্রতি বছর সেখানে হাজার হাজার মানুষের জাময়েত হয়।

আপনার জীবনে কোন সমস্যা থাকলে যেতে পারেন। ৯) Metéora, Greece Metéora মানে হলো "middle of the sky", "suspended in the air" or "in the heavens above"। এখানে ছয়টা মঠ আছে। প্রায় ২৩,০০০ বছর আগে তৈরি হওয়া বিম আকৃতির পাথরের মাথায় এই মঠগুলো ১৪ শতকের মাঝামাঝি থেকে ১৬ শতকের ভিতর প্রতিষ্ঠিত হয়। এই Eastern Orthodox monasteries গুলো UNESCO World Heritage List এর অন্তরভুক্ত।

মিথ বলে যে, মঠগুলোর প্রতিষ্ঠাতা St. Athanasius যখন মঠগুলো তৈরি করতেন তখন তাকে পাহাড় বেয়ে উঠতে হতো না, একটি বিশাল ইগল পাখি তাকে ও মালামাল পরিবহন করতো। চোখে পরে না এমন পেচানো শিড়ি বেয়ে চুড়ায় উঠা যায়। ১৯২০ সালের আগে এই চুড়ায় উঠতে দড়ি ও জাল ব্যবহার করা হতো। জেমস বন্ড সিরিজের ছবি "For Your Eyes Only" কিছু অংশ এখানে করার পর থেকে এটি টুরিষ্টদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। ছয়টা মঠের বিবরন: The Holy Monastery of Great Meteoron - এটি Metéora-তে অবস্থিত সবচেয়ে বড় মঠ।

১৪ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তৈরি হওয়া এই মঠটি ১৪৮৩-১৫৫২ সালের ভিতর অনেকবার এটিকে পুনর্নির্মান করা হয়। এখানে টুরিষ্টদের জন্য একটি মিউজিয়াম, The Katholikon (কেন্দ্রিয় মঠ) ও প্রধান বেদী আছে। The Holy Monastery of Varlaam – এটি দ্বিতীয় সর্বোবৃহত মঠ। এটি ১৫৪১ সালে তৈরি শুরু করা হয় এবং ১৫৪৮ সালে সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়। এটি সকল সেইন্টদের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে।

The Holy Monastery of Rousanou/St. Barbara- এটি ১৬ শতকের মাঝামাঝি তৈরি করা হয়। এটি নানদের দ্বারা পরিচালিত হয়। The Holy Monastery of St. Nicholas Anapausas- এটি একটি ছোট চার্চ যা ১৬ শতকে তৈরি হয়েছিলো। The Holy Monastery of St. Stephen- ১৬ শতকে তৈরি হওয়া এই চার্চটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাজিদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং পরিত্যাক্ত হয়। পরে এটি নানরা নিয়ে নেয় এবং পুনরায় তৈরি করে।

The Monastery of the Holy Trinity- এটি ১৪৭৫ সালে তৈরি করা হয়। ৮) Buddhist Monastery Of Ki, India (Key Gompa) "Lord of the Rings" মুভিতে এটির মত একটি মঠ দেখানো হয়েছে। এটি হিমালয়ের ভিতরে একটি দূর্গম গ্রাম, যার নাম Ki, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩,৬৭০ ফুট উপরে একটি পাহাড়ের চুড়ায় অবস্থিত বোদ্ধ লামাদের প্রশিক্ষনকেন্দ্র। মোগল ও অন্যান্য সেবাবাহিনী দ্বারা এই মঠটি অনেকবার আক্রান্ত হয়েছে। ৭) Kozheozersky Monastery Kozheozersky Monastery রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত একটি Orthodox monastery।

এটি লেক Kozhozero এর তীরে অবস্থিত। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে দূর্গম জায়গাগুলোর ভিতরে অন্যতম একটি জায়গায় ১৫ শতকে স্থাপিত। কেন এটি দূর্গন? এই মঠে যেতে হলে প্রথমে আপনাকে Nimenga Station-এ নামতে হবে, এখানেও বিপদ কারন এই ট্রেনের কোন শিডিউল নাই, কালে ভাদ্রে আসে। তো Nimenga Station থেকে বের হয়ে আপনাকে একটি বন অতিক্রম করতে হবে, সেটার জন্য আপনার প্রযোজন একটি লাম্বারট্রাক, যদি পান তাহলে আপনের কপাল ভালো, যদি না পান তাহলে আপনাকে হাটতে হবে। বন অতিক্রম করার পর আপনাকে ৩২ কিমি পথ হাটা পথে পাড়ি দিতে হবে কারন বন পার হলে রাস্তা শেষ, এর পরে কোন রাস্তা নাই।

এতো দুর আসছেন যখন তখনও আপনি পৌছান নাই, এখনো একটি লেক আপনাকে পাড়ি দিতে হবে। তার জন্য লেকের এই পারে একটি আগুন জ্বালিয়ে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে কখন মঠবাসীরা সে আগুন দেখে নৌকা পাঠাবে তার জন্য। অবভিয়াসলি সেখানে কোন কারেন্ট না রাস্তা বা ইন্টারনেট নাই। তাই যাবার আগেই পরিবারের সবাইকে বলে যাবেন কোথায় যাচ্ছেন। ৬) Phugtal Gompa, India রাস্তা জানা না থাকলে এই মঠে যাওয়া প্রায় অসম্ভব।

হিমালয়ের দক্ষিন-পশ্চিমে, সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ১২৫০০ ফুট উপরে অবস্থিত এই Phugtal Gompa। ৭০ জন ভিক্ষু এখানে বাস করে। Lama Gangsem Sherap Sampo এটি ১২ শতাব্দীতে তৈরি করেন। কাদামাটি, পাথর ও কাঠ দিয়ে তৈরি এই মঠটি এতগুলো শতাব্দী কিভাবে টিকে আছে? ৫) Paro Taktsang Monastery, Bhutan “The Tiger’s Nest” Monastery হিমালয়ের ভুটান অংশে ৯৮০০ ফুট উপরে অবস্থিত। মিথ বলে যে এখানে দ্বিতীয় বুদ্ধ,Guru Rinpoche প্রত্যাবর্তন করেছিলেন।

এর ভিতরে একটি গুহা আছে। এটি ১৬৯২ সালে স্থাপিত। এটি পাহাড়ের গায়ে ঝুলে আছে। শুধুমাএ পায়ে হটে এখানে যাওয়া যায়। কিন্তু আমি আপনে ওখানে যেতে পারবো না, টুরিষ্ট নট এলাউড।

৪) Xuan Kong Monastery, China “The Hanging Temple” Mount Heng-এ অবস্থিত। প্রথম দেখে মনে হবে মঠ ঝুলে আছে, দমকা বাতাস বা ভুমিকম্পে এখনি পড়ে যাবে, তাই না? প্রভুর লিলাখেলা !!! ১৪০০ বছর আগে তৈরি হওয়া এই মঠ এখনো টিকে আছে। ৩) Sümela Monastery, Turkey প্রায় ১৬০০ বছর আগে তৈরি হওয়া এটি একটি Orthodox monastery। ১৯২০ সালে এটিকে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়। এটি এখন একটি মিউজিয়াম এবং ২০১০ সালে এটি খুলে দেওয়ার পর থেকে জনপ্রিয় টুরিষ্ট স্পট।

সমুদ্রপৃষ্ট থেকে প্রায় ৩৯০০ ফুট উপরে অবস্থিত। এখানে বেশ কয়েকটি চ্যাপেল, একটা রান্নাঘর ও একটি সুন্দর চার্চ আছে। ২) Popa Taungkalat Monastery, Myanmar এটা কখন বা কারা তৈরি করেছিলো কেও বলতে পারে না। একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরির উপরে, ভুপৃষ্ট থেলে ২৪০০ ফুট উপরে এটি অবস্থিত। ৩৭ টি পবিত্র আত্মা নাকি এখানে থাকে! যদি এখানে যাওয়ার ইচ্ছা থেকে তাহলে দুইটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে।

১) আপনাকে ৭৭৭ টি শিড়ি ভাঙ্গে উপরে উঠতে হবে, ২) নিচের দিকে তাকাবেন না, মাথা ঘুরে পরে যাবেন। ১) St. George Monastery, Israel প্যালেস্টাইনের পশ্চিম তীরে অবস্থিত এই মঠটি। মঠটি একটি প্রকৃতিক গুহার ভিতরে তৈরি হয়েছে। ১৪ শতকের ধর্মগুরুরা মনে করতো এই গুহাগুলোতে অতিপ্রাকৃতিক আত্মা থাকতো। তৈরি হওয়ার পরে পরেই কিছু পারস্য দস্যু এই খানে আসে ও এখানে বসবাসকারী ১৪ জন ধর্মগুরুর সবাইকেই হত্যা করে।

আজও এই মঠের দেয়ালে তাদের খুলি ও হাড় গাথা আছে। সবাইকে ধন্যবাদ। বি.দ্র. সবার দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আমরা কাওমি মাদ্রাসা কেন্দ্রিক মুখের যত্ন ও রোগ প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করছি। আপনারা আমাদের ফেসবুক গ্রুপ Children's Oral Health Development Foundation (COHDF) ফলো করে আমাদের এক্টিভিটি সম্পর্কে জানতে পারবেন।

এছাড়া ব্লগে তো আমি পোষ্ট করবোই। নিজেদের সামর্থে এই বিশাল প্রোজেক্ট শেষ করা এক কথায় খুবই কঠিন। কিভাবে মুখের যত্ন নিতে হয়, কিভাবে দাঁত ব্রাশ করতে হয় কিভাবে হাত ধুতে হয় তা হাতে কলমে শেখানো ছাড়াও প্রতিটা মাদ্রাসা ছাএ-ছাএীকে আমরা বিনামুল্যে টুথব্রাশ, টুথপেষ্ট ও সাবান দিচ্ছি। এই প্রোজেক্ট চালাতে আমাদের এখন ব্যক্তিগত ও কর্পোরেট ফান্ড খুব দরকার। তবুও আমরা শুরু করেছি এবং আশা করছি আপনারা সবাই এগিয়ে আসবেন।

আমাদের মেইল করতে পারেন - যে কোন তথ্যের জন্য আমাকে ফোন করতে পারেন - ০১৬৮১ ৪০৯ ৭৭৯ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.