মনটা সাদা , ভবিষ্যত কালো , দুনিয়া রংগিন -----> সাদাকালোরংগিন ১
প্যারিসে আসার পর কিছুদিন ফ্রেন্ঞ্চ ভাষা কোর্স করতাম। প্রথম ক্লাসে টিচার ( টিচার আবার সেই রকম ফ্রেন্ঞ্চ সুন্দরী ছিল !) সবার নাম ,দেশ ইত্যাদি জিজ্ঞাসা করছিল। সবাই এক এক করে পরিচয় দিচ্ছিল। আমার দেশ জিজ্ঞাসা করতে আমি বললাম বাংলাদেশ। উনি বললেন ‘দাকো’ ( ওকে)।
তার মুখে ডাকো শুনতে কিছুটা ‘ঢাকা’ র মত মনে হলো। আমি ভাবলাম বুঝি উনি জানতে চাইছেন আমি ঢাকা থেকে কিনা। আমি তো ভাবলাম যাক টিচার বাংলাদেশ এবং ঢাকা দুটোই চিনে ফেলেছে একবারেই এবং আমাকে জিজ্ঞাসা করছে আমি ঢাকা থেকে কিনা। আমি উত্তর দিলাম “ইয়েস” । টিচার আবার বলে ‘দাকো’ ।
আমি আবার বলি ইয়েস, ঢাকা। টিচার আবার বলে ‘দাকো’ । আমি আবার বলি ইয়েস ,ঢাকা। এবার ক্লাসে হাসাহাসি শুরু হলো। ডাকো- ঢাকা নিয়ে।
পরে জানলাম french ” d’accord” মানে হলো ওকে।
২
মাস কয়েক হলো ফ্রেন্ঞ্চ একটা কোম্পানীর রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট এ কাজ করছি। একটা প্রজেক্ট মিটিং এ দক্ষিন ফ্রান্সের মোঁপলিয়ে শহরে যেতে হলো। আমরা কয়েক কলিগ একসাথে যাচ্ছি। ইউরোপের দ্রুততম ট্রেন ৩০০ কিলোমিটার বেগে ছুটে চলেছে চমৎকার পর্বত দুপাশে ফেলে।
৩ ঘন্টার জার্নি। আমার কলিগরা হঠাৎ তাস খেলতে চাইল সময় কাটানোর জন্য। আমি খুব একটা উৎসাহী ছিলাম না তাস খেলায়। কারন প্রথমত সাউথ ফ্রান্সের দম বন্ধ করা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, দ্বিতীয়ত তাস খেলায় আমি খুব একটা পারদর্শীও নই। তবু জনবল সংকটের কারনে না করার কোন উপায় নেই।
কলিগরা আমাকে ‘পোকার’ খেলার নিয়মকানুন শিখিয়ে দিচ্ছিল।
এক পর্যায়ে একজন বলল: “ডু ইউ হ্যাভ অ্যাস ? ”
আমি তো ভাবি অ্যাস ছাড়া আবার মানুষ হয় নাকি ? আমি স্বীকার করলাম যে ” আ্ই হ্যাভ এ্যান অ্যাস”
সে আবার বলে ” শো মি ইউর আ্যস”
আমার তো আক্কেল গুড়ুম অবস্থা। আমি বললাম ” হোয়াই ডু ইউ ওয়ান্ট টু সি মাই অ্যাস?”
সে বলে ” আই ওয়ান্ট টু সি ইফ ইউ হ্যাভ রাইট অ্যাস অর নট ”
আমি বললাম ” আই কান্ট শো মাই অ্যাস টু এনিওয়ান”
সে আবার বলে ” পুট ইওর অ্যাস অন দা টেবিল অ্যান্ড শো এভরিওয়ান”
আমি তো ভাবি শালা দেখি ভালৈ মাল টেনেছে। এখন উল্টাপাল্টা বকছে।
সে বলে ” দিস ইজ দা রুল , ইফ ইউ হ্যাভ অ্যাস, ইউ হ্যাভ টু শো টু অল”
আমি একটু চড়া গলায় বললাম ” বুলশিট ইউর রুলস”
এবার সে আমার হাত থেকে তাস গুলো টেনে নিয়ে টিক্কা বের করে বললো ” দিস ইজ দা অ্যাস (ACE)” ।
ছবি পরিচিতি: ছবিটা আমার অফিসের আইল্যান্ডের। আইল্যান্ডটার নাম “ile de impressionist”। প্যারিসের সিন নদীর এই আইল্যান্ডটা ইম্প্রেশনিষ্ট শিল্পীদের আনাগোনায় মুখর থাকত। এখনও এটা অন্যতম টুরিষ্ট স্পট। আইল্যান্ডটা ছবির মত সুন্দর।
প্যারিস ঘুরতে এলে দেখে যেতে পারেন জায়গাটা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।