আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতাল, ডেঙ্গুজ্বর ও আমি..

জানি- তবু জানি নারীর হৃদয়- প্রেম- শিশু- গৃহ- নয় সবখানি; অর্থ নয়, কীর্তি নয়, স্বচ্ছলতা নয়- আরো এক বিপন্ন বিস্ময় আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে খেলা করে; আমাদের ক্লান্ত করে; ক্লান্ত- ক্লান্ত করে (আট বছর আগের একদিন: জীবনানন্দ দাস) বিএনপি-জামায়াত ঘোষিত হরতালের তোড়জোড় শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার শরীররাজ্যেও যেন বড়রকমের গোলমাল শুরু হইয়া উঠিল। হরতালপূর্ব অগ্নিউত্তাপসম ১০২ ডিগ্্ির জ্বর ও মাথাব্যথা আকারে-ঈঙ্গীতে বুঝাইয়া দিল ‘বেশি নেতাগীরী না দেখাইয়া চুপচাপ শুইয়া পড়। ’ অগত্যা আর কী করা.. সারাদিন শুইয়া থাকিলাম এবং বৈকালে বধূয়া ও ভ্রাতাদের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির নিকট জবানবন্দি সাপেক্ষে এই সিদ্ধান্তে উপণীত হইতে হইলো যে- অদ্য, এক্ষুনী বৈদ্যের দারস্থ হইতে হইবে এবং প্রয়োজনে বৈদ্যখানায় ভর্তি করতঃ পূর্ণরূপে চিকিৎসা সম্পন্ন করিতে হইবে, এই বিষয়ে পীড়িতের কোনরূপ ওজর-আপত্তি গ্রহনযোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইবে না। এইদিকে আমার অন্তরআত্মা যায় যায়...। ‘পরাজয়ে ডরে না বীর...’ এই মন্ত্রে বলীয়ান হইয়া বধূয়া এবং ভ্রাতার সহিত বৈদ্যখানায় উপস্থিত হইলাম।

দীর্ঘক্ষণ বসিয়া থাকিবার পর আমার নাম ধরিয়া কেউ একজন উচ্চস্বরে ডাকিয়া উঠিলে আমি দৌড় দিয়া অন্দরমহলে প্রবিষ্ট হইলাম। মহামান্য বৈদ্য আমার পানে চশমার উপর দিয়া কতক্ষণ, নিচ দিয়া কতক্ষণ এমনরূপে তাকাইতেছিলেন এবং গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের মতো জিঙ্গাসাবাদ করিতেছিলেন যে আমি উক্ত পরিস্থিতিতে অপমানিত বোধ করিতে লাগিলাম । শেষাবধি বৈদ্য জানাইলেন, ‘ডেঙ্গ’ু জ্বরের লক্ষণ। দাওয়াই পত্রে কোন দাওয়াই না লিখিয়া অন্য একটি ছাপা কাগজে খস্ খস্ করিয়া কতিপয় টিক চিহ্ন প্রদান করিয়া বলিলেন “এই পরীক্ষাগুলো জরুরী ভিত্তিতে করিয়া নিয়া আসুন, তাহার পূর্বে কোন চিকিৎসাই শুরু করা সম্ভব নহে। বধূয়া এবং ভ্রাতা আমাকে হিচ্কে টানে বাইরে নিয়া আসিলেন।

আমি যতবার বলিতে চাহিলাম, ইহা কিছুই নহে..। ডেঙ্গু ফেঙ্গু কিছুই হয়নি আমার। তোমরা শুধু শুধু...। তাহারা ততবারই গরুকে স্নান করাইবার আদি কৌশলটি (একজন সামনে থেকে টানেন আর অন্যজন পেছন থেকে গুঁতো মারেন) আমার উপর প্রয়োগ করিলেন। এইরূপে শেষাবধি যখন পরীক্ষকের নিকট পৌঁছানো হইল.. পরীক্ষক বিনম্রভাবে জানাইলেন, আজকের মধ্যে এ পরীক্ষার ফলাফল প্রদান সম্ভবপর নহে তা সে যতই গুরুত্বপূর্ণ হওক না কেন..।

ওদিকে যেহেতু বৈদ্য মহাশয় ফলপত্রের অপেক্ষায়, ভ্রাতা গেলেন বৈদ্যের কাছে আর বধূয়া রইলেন আমার পাশে। সবশেষে বৈদ্যের পরামর্শক্রমে রক্ত পরীক্ষা করিতে দিয়া সেদিনের মতো মুক্তি পেলাম। ফলপত্র নেওয়ার তারিখ আজ। কিন্তু যেহেতু হরতাল তাই যাইতে হয় নাই। ফন্দি আঁটিতেছি কিভাবে পার পাওয়া যায়... ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.