আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রুবাবা দৌলা মতিন কর্পোরেট ফতোয়ার যাঁতাকলে পিষ্ঠ, বিদিশা আহমেদ স্বৈরতন্ত্রী পাপের স্বীকার, তসলিমা নাসরিন মৌলবাদের কালো বিষে জর্জরিত।

আমি ৫০০৯৩ নম্বর ব্লগার রুবাবা দৌলা মতিন, বিদিশা আহমেদ এবং তাসলিমা নাসরিন এই তিন সংগ্রামী ও প্রতিভাময়ী কন্যার পাশে আমাদের থাকা উচিত তাদের সংগ্রামের সাথী হয়ে। রুবাবা দৌলা মতিন ঃ বাংলাদেশের আকাশে হঠাৎ উদিত এক কর্পোরেট নক্ষত্র। নিজের যোগ্যতা ও প্রতিভাবলে গ্রামীনফোনের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক অনুকরনীয় পর্যায়ে। অবশ্য অনেকের সহায়তা নিশ্চয়ই পেয়েছিলেন। খেলার মাঠ থেকে শুরু করে মিডিয়ার তার উজ্জ্বল উপস্থিতি সকলের চোখে পড়ত।

দেশের সাধারন মেয়ে থেকে শুরু করে অন্যান্য কর্পোরেট লেডীরা বা যারা কর্পোরেট হতে চাইতো সবার কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন নয়নের মনি। কিন্তু যারা তাকে এই পর্যায়ে উঠতে পথ দেখিয়েছে তারা তো তাকে মেয়ে হিসেবে দেখেনি, দেখেছে কর্পোরেট পণ্য হিসাবে। তারা তো আর এমনি এমনি তাকে পথ দেখায়নি। একদিন ঠিকই যখন সেই কর্পোরেট প্রভুদের স্বার্থ পূরণ হলো অমনি রুবাবা দৌলা মতিন হয়ে গেল অপয়া। ধুম করে তাকে ছুঁড়ে দিল উপর থেকে নিচে।

পিষ্ঠ হলেন কর্পোরেট যাঁতাকলে। হায়রে পুরুষতন্ত্র!! আচ্ছা, এটা কি একটা ফতোয়া নয়? হ্যাঁ হ্যাঁ, এটা একটা কর্পোরেট ফতোয়া বটে! বিদিশা আহমেদ ঃ ফ্যাশন ডিজাইনার, লেখিকা, কবিকন্যা, স্বৈরস্বাশকের স্ত্রী। শেষের টুকু বাদ দিলে তাকে আমরা বিদূষী এবং গুণবতীই বলতে পারি। কোন কুক্ষণে যে এরশাদকে বিয়ে করেছিলেন! আসলেই মানুষের জীবনে এমন অনেক বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে যায়। যাহোক সর্বপরি তিনি এখন একজন মা।

যার রয়েছে সন্তানের জন্য হাহাকার। এই সন্তানকে পাওয়ার জন্য তিনি কিরকম যুদ্ধ করছেন, কি পরিমানে দুঃখ পাচ্ছেন তা আমরা দেখছি। বিচারের বানী কিভাবে তাকে বঞ্চিত করছে সন্তানের মায়া থেকে। আমারা জানি এরশাদ এখন ক্ষমতায়, মহাজোটের সাথে, তার উপর সেনাবাহিনীর সেনা শাসক। তাই আমরা ধরে নিতে পারি বিদিশা কোনদিন ন্যায় বিচার পাবেন না।

তাকে এখন আজীবন যুদ্ধ করতে হবে ওই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে। উনি বেশ কয়েকদিন ধরে লেখালেখি করছেন। উত্তারাধিকার সুত্রে প্রতিভার অধিকারী। পত্রিকায় উনার লেখাগুলো ভালই লাগে। কিন্তু কে দেখে কার দুঃখ।

আচ্ছা, এটা কে কি স্বৈরতন্ত্রের জিঘাংশা বলা যায়? নাকি খুনী পুরুষের বিকৃত ফসল? তাসলিমা নাসরিন ঃ কবিতা লেখিকা অর্থাৎ কবি। অন্যধারে ডাক্তার। নতুন করে কিছু বলবার দরকার নেই। যার লেখা একটা গোটা অঞ্চলকে নাড়া দিতে পারে। যার লেখা অবলা (!) নারী সমাজকে জাগিয়ে দিতে পারে।

যার লেখা একটি বিশেষ গোষ্ঠী বা শ্রেণীর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ। যাকে বিনা অপরাধে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের মায়া ত্যাগ করে বিদেশে থাকতে হচ্ছে, বলা যায় থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। কারা তার বিরুদ্ধে আস্ফালন দেখিয়েছে, কারা তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে? আমরা জানি তারা ধর্মীয় মৌলবাদী শক্তি। ধর্মীয় মৌলবাদের কালো থাবায় আজ শতছিন্নভিন্ন একজন নারী, একজন লেখিকা মাত্র। আর আমাদের যারা গণতন্ত্রের কথা বলে ক্ষমতায় আসে তারা ওই সামান্য মৌলবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে তাদেরকে অনেক শক্তিশালী করে দেয়।

খালেদা জিয়ার কথা বাদ দিলাম, কারন জামাত ছাড়া তার আর কোন গতি নাই। কিন্তু আওয়ামীলীগ কি আজ মৌলবাদী নয়? তারা কি পেরেছে তাসলিমাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে? তারা কি এখন ধর্মনিরপেক্ষ? তারা কি ফতোয়াকে বৈধ দিচ্ছে না? অথচ তারা দুজনই নারী এবং সবসময় নারী স্বাধীনতার কথা বলে থাকেন। আচ্ছা, এটাকে আমরা নিশ্চয়ই মৌলবাদের জঘন্য রূপ বলতে পারি। তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে? একজন রুবাবা দৌলা মতিন কর্পোরেট ফতোয়ার যাঁতাকলে পিষ্ঠ, একজন বিদিশা আহমেদ স্বৈরতন্ত্রী পাপের স্বীকার, একজন তসলিমা নাসরিন মৌলবাদের কালো বিষে জর্জরিত। আমি এই তিনজন নারীর নাম উল্লেখ করলাম কারন, এই তিনজন যেমন আমাদের নিকট গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি তাদের ভোগান্তি এবং পরিণতিও স্বরণযোগ্য, তেমনি সমাজের, দেশের ,জাতির জন্য অভিশাপ কর্পোরেট তামাশা, স্বৈরতন্ত্র আর মৌলবাদ এই তিনটি বিষয়ও লক্ষ্যনীয়।

তাই ওই তিনজন নারীকে যেমন আমদের ভুলে গেলে চলবে না, তেমনি ওই পশ্চাদপদ তিনটি বিষয়ের বিরূদ্ধে আমাদের করতে হবে যুদ্ধ এবং সংগ্রাম। তবেই না আসবে মুক্তি, দেখবো সুন্দর সকাল, হবে জীবন শান্তিময়। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।