আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাসপোর্ট অফিসের অভিজ্ঞতা-২

সব কিছুর মধ্যেই সুন্দর খুঁজে পেতে চেষ্টা করি............ পাসপোর্ট অফিসের অভিজ্ঞতা-২ মানুষ মাত্রই কম বেশী আশাবাদী। একটি সুন্দর প্রত্যাশার অপমৃত্যু খুবই হতাশা জনক–যদি সেই প্রত্যাশাটা হয় ন্যায্য নাগরিক অধিকার থেকে কর্তিপক্ষের পরিকল্পিত বঞ্চনার। ভনিতা নাকরেই বলছি- একটি স্পেশালাইজড টেক্সটাইল/স্পীনিং মিল BMRE (Balancing, Modernisation, Renovation and Expansion) করা হয়েছে জার্মানীর অত্যাধুনিক টেক্সটাইল মেশিনারীজে। মেশিনারীজ সরবরাহকারী জার্মান প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি মোতাবেক পর্যায়ক্রমে BMRE করার সময় বিভিন্ন প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষনের তিনটি ধাপছিল। প্রথম ধাপে মেশিনারিজ সরবরাহের পুর্বে পাঁচজন ইঞ্জিনিয়ার/টেকনিশিয়ান জার্মানী যায় ২০ দিনের একটি প্রশিক্ষন নিতে।

প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদেরই চার জন দেশে ফিরে জার্মান টেকনোলজিস্টদের সাথে BMRE/Instolation কাজে অংশ নিয়েছিলেন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে যেখানে যাদের জন্য প্রযোজ্য তারা বাংলাদেশেই জার্মান প্রশিক্ষিকদের নিকট একমাসের প্রশিক্ষন নিয়েছিলেন। তৃতীয় ধাপে প্রতিষ্ঠানের ভিন্ন ভিন্ন সেক্টরের পাঁচজন সিনিয়র অফিসার উচ্চতর প্রশিক্ষনের জন্য যাবেন জার্মানী। এই পাঁচজনের মধ্যে একজন ইতোপুর্বে টেক্সটাইল মেশিনারীজ বিষয়ে প্রশিক্ষন নিয়েছিলেন কোরিয়া, চীন এবং জার্মানীতে। বাকী চার জন এই প্রথম বিদেশে যাবেন-যাদের নতুন পাসপোর্ট করতে হবে। কোম্পানীর জনসংযোগ অফিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং চারজন পাসপোর্ট প্রার্থী নিয়ে ১৮ মে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে যায়।

এবারও যথা নিয়মে সুশৃংখল লাইনে দাড়ালো। প্রসংগত একজন কর্তব্যরত সেনা সদস্য একসাথে চারনের পাসপোর্ট করানো এবং জার্মানীতে প্রশিক্ষনে যাবার কথা জেনেনেন। সব পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ছবিতোলার জন্য তারিখ নির্ধারন করা হলো ২০ দিন পর-অর্থাত জুন মাসের ৫ তারিখ। আরো জানানো হলো-যেদিন ছবিতোলা হবে সেই দিনেই পাসপোর্ট প্রাপ্তির সম্ভাব্য তারিখ দেয়াহবে। বিষয়টা অফিসে জানানো হলো।

আমি খুবই হতাশ হলাম। কারন, যে তারিখে ছবিতোলার দিন ধার্য্য করাহয়েছে-সেই তারিখ ছবিতোলার পর পুলিশ ভেরীভিকেশন হয়ে পাসপোর্ট পাবার সম্ভাব্য সময়ের আগেই ৭ জুন চুক্তিমোতাবেক ওদের জার্মানীতে পৌঁছতে হবে! এক্ষেত্রে সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে নাপারায় আমাদের কিছুটা গাফেলতি ছিল। কারন,আমরা প্রথম ধাপে যেই অফিসারদের জার্মানীতে প্রশিক্ষণ নিতে পাঠিয়েছিলাম সেই দল থেকে একজন প্রশিক্ষনার্থী পালিয়ে গিয়ে আমাদেরকে বিপদ্গ্রস্থ্য করেছিল(ঐ প্রার্থীকে আমরা নিরুপায় হয়ে নিয়োগ দিয়েছিলাম আমাদের ফাইনান্সিং ব্যাংকের এমডি’র অনুরোধে-যিনি তাঁর নিকট আত্মীয়)। যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এসেছিল তাদের একজন ইতোমধ্যে আমাদের সাথে চুক্তি ভংগকরে দেশের বৃহত্তম একটি টেক্সটাইল/স্পীনং মিলে উচ্চবেতনের লোভে চলে গিয়েছে-যদিও তার সাথে আমাদের চুক্তিছিল আগামী পাঁচ বছর আমাদের মিলেই জব করবে। তাই এবার বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য বিশ্বস্ত এবং কোম্পানীর জন্য লং রান সার্ভিসের নিশ্চয়তায় নির্ভরযোগ্য অফিসার বাছাই করতে যথেস্ট সময় নস্ট হয়েছিল।

যাই হোক, আমি পাসপোর্ট অফিসের সেই উপ পরিচালক সাহেবের সাথে ফোনে কথাবলি। তিনি জানালেন-তাঁরপক্ষে কোনো হেল্প করা সম্ভব নয়-কারন সার্বিক ব্যাবস্থাপনা সেনা সদস্যরাই করেন। সিদ্ধান্ত হলো বেশী ফি দিয়ে ‘অতিব জরুরী’ ভিত্তিতে পাসপোর্ট নেয়া হবে। সেজন্য টাকার পরিমান বাড়িয়ে আবার ট্রেজারী চালান বানাতে হবে সোনালী ব্যাংকের নির্দিস্ট শাখা থেকে। অর্থাত পরেরদিন।

আগামীদিনের প্রস্তুতি নিয়ে যখন সবাই চলে আসছিলেন-তখন লাইন থেকে নিরাপত্তার দ্বায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য পিছনে পিছনে এসে দলনেতাকে(জনসংযোগ অফিসারকে)আড়ালে ডেকে নিয়ে বললেন-সাধারন ফি দিয়েই ১০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট দেয়ার ব্যাবস্থা করেদিবে। বিনিময়ে প্রতিটা পাসপোর্টে অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা দিতে হবে…… ১০ দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। এই ঘটনার শেষ হয়েছিল-৭ দিনের মাথায় ওদের সকলের পাসপোর্ট হাতে পেয়ে……… পাসপোর্ট অফিসের অভিজ্ঞতা এখানেই শেষ। ধন্যবাদ ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন ২০২১। (ঘটনাটা প্রথম পর্বেই পাঠকদের জানাতে পারতাম-কিন্তু নিশ্চিত পাসপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এবং বিষয়টা আগেই প্রকাশ করতে চাইনি-নতুন কোনো আইনী{বে}হ্যাপার ভয়ে।

কে জানে হয়ত ঐ ঘুষখোড় বেটাও সামুর ব্লগার!) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.