টক শো টাইপ কোন অনুষ্ঠানে আমার আগ্রহ একটু কম। কিন্তু অপরাহ উইনফ্রে শো আমি পারতপক্ষে মিস করি না। এর প্রত্যকটা অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন দিক এতো সুন্দর করে তুলে আনে, খুব ভাল লাগে। আজ চ্যানেল ঘুরাতে ঘুরাতে উইনফ্রের তেমনই একটা শো পেলাম। অনুষ্ঠানটার বিষয়বস্তু হল মধ্যবয়সি মহিলাদের এইচ আই, ভিতে আক্রান্ত হওয়া এবং তা থেকে প্রতিরক্ষার উপায়।
ঘটনাটা টেক্সাসের। ৫০ উর্ধ ডায়ানের ভাষ্যতে- সে ও তার স্বামী ফিলিপ পাডোর ১৭ বছরের দাম্পত্য জীবন। আর্থিক সংকটের কারনে তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু। এক পর্যায়ে ডায়ান ফোন কলের সূত্র ধরে আবিষ্কার করে ফিলিপ অন্য মেয়ের প্রতি আক্রিষ্ট হয়ে পড়েছে। একে একে ডায়ান জানতে পারে ফিলিপের সাথে কম করে হলেও ২০টা মহিলার সম্পর্ক।
এসময় ডায়ান এসটিপি টেস্ট করলে এইস,আই,ভি পজেটিভ ধরা পড়ে। ডায়ান সিদ্ধান্ত নেয়, সম্পর্কে জড়িত অন্য সব মহিলাকে যে করেই হোক এব্যাপারে অবগত করবে। প্রথমেই ফোন করে সুজানা নামের মহিলাকে। টেস্টে তারটাও পজিটিভ আসে। এরপর সুজানা ও ডায়ান মিলে ফোন করতে থাকে।
ঐ সবগুলো মহিলারই এইডস ধরা পড়ে। তারপর তারা ব্যাপারটা পুলিশকে জানায়। ফিলিপ এর আগেই একবার শারিরীক অসুস্থতার কারনে চেক-আপ করিয়েছিল তাতে তার এইডস ধরা পড়ে, যদিও সে সেটা গোপন করে রেখেছিল। তাই কোর্টের ভাষ্যমতে “মরনাস্ত্র বহন (destructive weapons ঠিক এটায় বল্ল)এবং অন্যদেরকে মৃত্যমুখে ঠেলে দেয়ার অপরাধে ফিলিপকে ৪৫ জেল ধার্য করা হয়। ফিলিপের কথা হল- সে নির্দোষ, কারণ সেও কোন মহিলা দ্বারা প্রথমে আক্রান্ত হয়েছে।
সেই মহিলাদের মধ্যে ৫জন শোতে উপস্থিত হয়ে অপরাহের সাথে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে থাকে। এরা কেউই দেহ পসারিনী না, বরং তদের প্রত্যকেরি ১২,১৫,২০ বছরের সংসার ছিল। ফিলিপের সাথে বার/রেস্টুরেন্টে প্রথম পরিচয় হয় ওদের। এক মহিলা বলে- তার আগের স্বামী যথেষ্ট ভাল ছিল, কিন্তু অনেকটা ফ্যান্টাসি হিসাবে তার ফিলিপের কাছে যাওয়া। আর এক মহিলা বলতে থাকে- এইচ,আই,ভি পজেটিভ শোনার পর তার বাচ্চারা মাহারা হতে যাচ্ছে এটা ভেবে সে খুব দুঃখিত হয়েছিল।
অপর মহিলা বলে- সে এইচ,আই,ভি আক্রান্ত প্রথম জানতে পারে যখন তার ছেলের বন্ধু টিভি-পেপারের নিউজে দেখে ছেলেকে ফোন করে জানায় ফিলিপের খবর । ছেলে মাকে সান্তনা দেয়, ্কারন ছেলেটা আগেই তার মার সাথে ফিলিপের সম্পর্কের কথা জানত, (হায় রে দুনিয়া)।
এরপর তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তারা কেন কন্ডম ব্যাবহার করেনি। প্রত্যেকেই বলে সুস্বাস্থের অধিকারি ফিলিপের সুন্দর মার্জিত ব্যবহারে তারা মুগ্ধ হয়, তারা সন্দেহই করতে পারেনি সে এইচ,আই,ভি বাহক হতে পারে। একজন বলে আক্রান্তদেরকে কোন ভাবেই দোষ দেওয়া যায় না, কারন কেউ গুলি করতে থাকলে বুলেট প্রুফ জ্যাকেটও অনেক সময় ব্যার্থ হয়।
পরিশেষে অপরাহ উইনফ্রে একটা স্লোগান দিয়ে অনুষ্ঠানটা শেষ করে দিল। তা হল “মেয়েরায় কন্ডম নিজেদের সাথে রাখবে” এটায় একমাত্র বাচার পথ।
অবশেষে আমার অভিব্যক্তিঃ
একেই বলে পশ্চিমা জীবন ব্যাবস্থা!!! অনুষ্ঠান্টাতে কয়েক জায়গায়ই আমি তব্দা খেলাম। প্রথমত, ব্যাক্তি স্বাধীনতা এদেরকে কোথায় নামিয়ে দিয়েছে!!! সমাজ, পরিবার, নিজের সন্তান কোনকিছুকেই তোয়াক্কা করার প্রয়োজন বোধ করছেনা। দ্বিতীয়ত, এরা প্রত্যেকেই চোখের পানি ফেলল আর বল্ল - এটায় ওদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।
কিন্তু পরিস্কার হল না কোনটাকে ওরা ভুল বলল অবাধ যৌনাচার, এইডসে আক্রান্ত হওয়া নাকি কন্ডম ব্যাবহার না করা। কারন পুরো অনুষ্ঠানে কেউ মুখের ফাক দিয়েও উচ্চারণ করল না যৌন জীবনে সংযমী হওয়া উচিৎ। এরা জানে না রোগ কোথায়, আর অষুধইবা দিতে হবে কোথায়!!!
পরিশেষে বলব, যারা মনে করে মানুষের জীবনে ধর্মীয় কোন বিধি নিষেধ থাকা উচিত না ভোগই জীবনের লক্ষ্য, এইসব স্বেচ্ছাচারিতা নীতি তাদেরকে কোথায় নামিয়ে দিতে পারে তা ভাববার বিষয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।