আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্রোতির যুদ্ধ ( কিঞ্চিত ১৮ +)!!

স্রোতি নামটা কে রেখেছে তা নিয়ে বেশ কিছু দিন প্রশ্ন করছে মায়ের কাছে স্রোতি, মা নিরব বোঝা যায় হয়ত আমার পাষন্ড বাবাই রেখেছে। না হলে স্রোতির জীবনটা নদীর স্রোতের মত এত বহমান কেন। একটুও শান্ত না একটার পর একটা সমস্যার আবর্তে তাকে পরতে হচ্ছে। মায়ের কাছে কত গল্প শুনেছে তাকে নিয়ে, ভূমিষ্ট হওয়ার পর আমি নাকি চাঁদের কণা ছিলাম, ধব ধবে সাদা কাপরের সাথে মিশে যেতাম নাকি? আমাকে নিয়ে মারও অনেক কথা শুনতে হয়েছিল সবাই মিলে বলছিলো মেয়ে হয়েছে সরদারের, খরচ বারাইছে। মার মুখটা এখন আমার চোখে কল্পনায় ভেসে উঠে, মা হয়তো তখন মাথাটা নিচু করে রেখেছিলেন কস্ট পাচ্ছিলেন কিছু বলতে পারছিলেন না।

বাবা বদ মেজাজী হওয়ায় মা সারাক্ষনেই আতংকে থাকতেন কখন কি করে বসেন এই ভেবে। আমি মায়ের চেয়ে আরো বেশি আতংকে থাকতাম চুন থেকে পান খসলে চর থাপ্পর যার ফলাফল বয়ে বেরাচ্ছি কানে কম শুনি ডাক্তার বলেছে কানের পর্দা স্থাপন না করলে আমি চিরতরে কালা হয়ে যাবো। প্রিয় বাবা আমাকে এভাবে কস্ট না দিলেও পারতে, আমাদের রোজগার করে খাওয়াতে পারতেনা মায়ের কামানো টাকা খরচ করতে কিন্তু শাসনে সবার আগে ছিলে । তুমি হয়ত বুঝতে পারতে না তোমার স্রোতি কতটা লক্ষি মেয়ে। কখনও নিজেকে আর দশটা মেয়েদের মত বিকিয়ে দেয়নি, দেখতে ভালো ছিলাম বলে স্কুল, কলেজে যাওয়ার সময় কত কথাইনা শুনতে হয়েছে কিছুই কর্নপাত করিনি।

আমারতো অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার সপ্ন। বাবা তুমি ভূল বুঝনা প্লিজ, তোমাকে পিতা হিসেবে ক্ষমা করলাম কিন্তু নারী হিসেবে ক্ষমা করতে পারলামনা। পুরুষ মানুষের প্রতি আমার আজকের ঘৃনা তোমাকে দেখেই। তুমি আমাকে যে ভাষা ব্যবহার করতে তা লেখনিতে লেখা সম্ভব নয়, তোমার বোঝা উচিত ছিল আমি তোমার মেয়ে, তোমার স্রোতি। হয়ত প্রিয় পাঠকরা মনে করতে পারে তোমার সৎ মেয়ে আমি না আমি তা নই তবে এখন একটা মানুষের সৎ মেয়ে আমি।

আমার মা এখন যার সাথে একই ছাদের নিচে আছে তার সৎ মেয়ে কিন্তু তোমাকে দেখাতে ইচ্ছে করে মেয়েকে কিভাবে স্নেহ করতে হয়ে, ভালোবাসতে হয় ভালো ব্যবহার করতে হয়, প্লিজ তুমি দেখে যাও দেখে দেখে শেখো, এ জনমে না হয় পরজনমে তোমাকে এমন স্নেহশীল বাবা হিসেবে দেখতে চাই, তোমার আদর স্নেহ পেতে চাই। আমার মায়ের মুখ, ছোট ভাইয়ের মুখটা কেমন জানি মনমরা থাকে। মা হয়ত আমাকে নিয়ে ভাবছে নতুন বাবা রির্টায়ড হয়ে হয়ত গ্রামে চলে যাবে, আমার কি হবে? আবির সারাক্ষন শুধু ফোনে মাস্টারি করে । কলেজে ঠিক মত যাচ্ছি কিনা, কম্পিউটার ক্লাস করছি কিনা, স্পোকেন ক্লাসে কি শিখলাম শুধু মাস্টারি! মানুষটা হয়ত কানাডাতে ব্যস্ত থাকার পরও আমার খোজ নিচ্ছে মাঝে মাঝে বিরক্তও হচ্ছি ,বান্ধবিরা প্রেম ট্রেম করে বয়ফ্রেন্ড নিয়ে চুটিয়ে ডেটিং করে রগরগে গল্প বলছে, জানিস ও না আমাকে ঠোটে ঠোট রেখে জড়িয়ে ধরে---- আমার সারা দেহ শিরশির করে ওঠে, ঠোটটা শুকিয়ে যায় হাসির ছলে বান্ধবিটাকে জড়িয়ে ধরি ওকে বুঝতে দেইনা বুকের জ্বালার কথা, ধমক দিয়ে বলি বন্ধ করবি তোদের ফালতু প্যাচাল। সারক্ষন এই গল্প শুনতে শুনতে বিতৃস্না জন্মেছে হৃদয়ে, রাগ ওঠে ঐ মানুষটার উপর কবে আসবে তার খবর নেই শুধু মাষ্টারি।

কলেজ বন্ধ মিঠু ভাইয়া বলল স্রোতি তোর কলেজ বন্ধ তুই একবার মিডিয়ায় চেষ্টা করে দেখতে পারিস, আমি বললাম ভাইয়া কিভাবে আমিতো অভিনয় জানিনা, ভাইয়া বলল নো প্রোবলেম আমাদের থিয়েটারে ভর্তি হয়ে অভিনয় শিখো তারপর টিভি...। কথামত পরদিন আম্মুকে নিয়ে থিয়েটারে ভর্তি হলাম অনেক গুলো চোখ আমার চোখে পরতে দেখলাম। পুরুষ মানুষ গুলো যেন কেমন মেয়ে দেখলেই নেকরে কুকুরের মতো মুখের লালা পরতে থাকে, তেমনি ওদের মধ্যেও দেখলাম। মেয়েদের সংখাটা কম দেখে খুব হতাশ হলাম, ছেলে মেয়েদের আসা ও বাসায় যাওয়ার সময় এক হওয়াতে মেয়েদের সমস্যা হয় বাসায় যেতে, তাই হয়ত মেয়ের সংখ্যা কম মনে হলো। নতুন হওয়াতে সবার সাথে পরিচয় করে দিল এক সিনিয়র ভাই।

একে একে পঁচিশ জনের সাথে পরিচয় হলো। হঠাৎ লক্ষ করলাম একটি চোখ আমার উপর থেকে যেন সরাচ্ছেইনা, কি যেন বলতে চাচ্ছে এবং কাছে আসছে। এসে আমরা কোথায় থাকি কিসে পড়ি, এবং আম্মুর কাছে মোবাইল নম্বরও চাইল আম্মুও দিল। বাসায় যাওয়ার পর ফোন হ্যালো স্রোতি, আমি বললাম কে বলছেন আমি রাকিব ঐ যে থিয়েটারে পরিচয় বাসায় ঠিকমত গেছেন কিনা জানার জন্য। ছেলেটার সিনসিনিয়ারটি দেখে মুগ্ধ হলাম।

থিয়েটার পোকাটা মাথায় ঢুকে গেল, ইদানিং রাকিবের সাথে প্রচুর কথা হয় প্রাসঙ্গিক অপ্রাসঙ্গিক কত কি। হঠাৎ নিজের মধ্যে এ এক অন্য আমাকে আবিস্কার করলাম। অপেক্ষা করতাম রাকিবের ফোনের। রাকিব অনার্স পড়ার সময় বাবা মারা যাওযার পর আর পড়তে পারিনি, মা ও এক ভাই ও ভাবির সংসার। ছোট হওয়াতে খুব আদুরে ওর মা ও ভাই ওকে প্রচুর টাকা দেয় ।

টাকা দিয়ে শুধু নতুন কাপর পরে, ও খুব ফ্যাশনবল ওর সাথে যতক্ষন থাকি যেন হাওয়ায় উড়ি। খুব গুছিয়ে কথা বলতে পারে, শপিংএ গেলে ও চয়েজ করে দেয় ওর চয়েজ খুব স্মার্ট। অনেকবার শপিং এর বিল দিতে চেয়েছিল আমিই দিতে দেইনি কারন আমি গতানুগতিক মেয়েদের মত নই যে বয়ফ্রেন্ডকে ভাঙ্গাবো এবং নিজেকে বয়ফ্রেন্ড এর কাছে বিকিয়ে দিবো। শপিং করে দিলেই আমার উপর তার অধিকার বেড়ে যাবে কি দরকার আমার যা আছে তাই যথেস্ট। কিছুদিন যাবত রাকিব রিকশাতেই ঠোটে ঠোট মিলাতে চাচ্ছে, আমি মূখ সরিয়ে নিচ্ছি ভাবটা দেখাচ্ছি আমার ব্যাপারটা পছন্দ না।

বার বার ব্যর্থ চেস্টা এবং আবার আমার প্রতিবাদ। হঠাৎ বলেই ফেলল তোমার শরীরে কি কোন উত্তেজনা নেই, আমি জানি আমাকে ক্রেজি করার জন্যই এই ফাদ পেতেছে। আমিতো জানি আমি স্রোতি ভালোবাসায় গা ভাসিয়ে দিতে আসিনি, সত্যিকারে ভালোবাসতে চাই রাকিবকে তাতে রাকিব যা ভাবে ভাবুক। বাসায় গিয়ে রাকিবের সেই ঠোট তেরে আসা কি ভালোলাগা কাজ করছিলো, রিকশায় বসে পেছনে হাত দেয়ায় পিঠে হাতের ঘর্ষনে কি যে মোহ কাজ করছিল, আমিওতো মানুষ তারপর মেয়ে মানুষ, পৃথিবীর সব ভারও যদি আমার শরীরে পড়ত তাহলেও হয়ত হালকা লাগত। রাকিব ইদানিং হাতটা একটু বেশি চালাতে চেষ্টা করে কর্ণফুলি মার্কেটের আধার গলিটায় ঢুকতেই ওর হাতটা আমার বুকের মধ্যে চালিয়ে দিয়েছে আমারও বলার কিছু ছিল না আমিও যেন মন্ত্র মুগ্ধেও মধ্যে হাতটাকে আরো জোরে চালানোর জন্য সম্মতী দিলাম ওর দুটি হাত যেন পর্বত সমান বুক দুটোকে মরুময় করে দিতে চাইলো।

রিকশাওয়ালাও বুঝতে পেরে জোরে টেনে বেইলিরোডের দিকে নিয়ে গেলো চাপাচাপি বন্ধ হাতটা ভদ্র লোকের মত সামনে এনে চুপ করে রইল। রাকিব হয়ত তার অন্যায় হয়েছে ভেবে ঘামতে লাগল। আমি তাৎক্ষনিক ইজি করার চেষ্টা করলাম। বাসায় যাওয়ার পর নিজেকে অনেক ঘৃনা করার চেষ্টা করলাম ছিঃ স্রোতি তুমিও অর্ডিনারী র্গালফ্রেন্ডদের মত হয়ে গেলে, অন্যরা যেমন নিজেকে বিকিয়ে দেয় সময় অসময়ে বয়ফ্রেন্ডদের এবং বেখেয়ালে প্রেগনেন্ট হয়ে পরে অতপর এব্রশন, ছুড়ে ফেলে চলে যায় তুমি কি তাদের কাতারে পরে গেল নিজের বুকটাকে আজ কেরোসিন ধরে আগুন ধরিয়ে দিতে মন চায়। এমনিতেই জোরে চাপ লাগায় স্তন দুটো পাকা টমেটোর মতো লাল হয়ে আছে।

হঠাৎ আবিরের ফোন, ফোন ধরতেই হ্যালো স্রোতি তোমার কি মন খারাপ। আরে বাবা কিভাবে যে ছেলেটা বোঝে মন খারাপ, কোন ঐশ্বরিক শক্তি আছে নাকি ওর। মনের ঝালটা আবিরের উপরই ঝারলাম শেষে ফোন কেটে বন্ধ করেই দিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে মোবাইল খোলার সাথে সাথে ২০ টি মিস কল এলার্ট পনেরটি রাকিবের পাচটি আবিরের। এবং ফোন রাকিবের।

ফোন ধরে চিৎকার দিতেই সরি সরি বলে রাকিবের আকুতি। মাফ চাচ্ছি গতকালের আচরনের জন্য। তোমার সাথে কথা জরুরী কথা আছে স্রোতি। কাল আমার বাসায় আসবে? আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরল। বাসায় যাব আমি! যাই হোক নিজের প্রতি আত্ববিশ্বাস আছে আমার , নিজেকে ধরে রাখব।

তাছারা রাকিব ততটা খারাপ ছেলে না। এরকম করলে কি হবে মনটা খুব নরম। বিপদে আপদে এগিয়ে আসে, বাসায় খোজ খবর নেয়। আম্মুর সাথে ওর খুব ভাব, আম্মু ওকে খুব পছন্দ করে। বাসায় ভালো রান্না করলে আম্মু খবর দিবেই আর রাকিবটাও খবর পেলে যত ব্যস্ততাই থাকুক চলে আসবে।

ঘুম আসছে না দুটি চোখোর পাতা এক করতে পারছি না। রাকিবটা এমনই সব ব্যাপারেই এরকম লুকোচুরি করে। আমাকে টেনশনে রাখে পরে দেখা যায় সিম্পল ব্যপার, এ ব্যপারটা হয়ত এমনই হবে। বিকেলে ওদের বাসায় গেলাম ও বলল চল আপার বাসায় যাই কথা আছে। আমি বললাম কেন এখানেই বলো।

গোপন কথা এখানে বলা যাবে না। আপা বাসায় নেই ওখানেই বলব। আমার বুকটা আৎকে উঠলো, খালি বাসা আমার দু'জন যাবো? মনের জোড় হারালাম না। বাসায় গিয়েই ও আমাকে জড়িয়ে ধরল, নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম দেখো ভংগিমা করো না যা বলবে বলেছিলে বলো। তোমাকে খুব কাছে পেতে ইচ্ছে করছে বলেই আবার জাপটে ধরলো।

আমি জোড়ে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। আচ্ছা তোমার শরিরে কি কোন ফিলিংস নেই? আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরছি আর তুমি...। আমি ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলাম, দেখো আর দশটা মেয়ের মত আমাকে ভোগের পণ্য ভেবেছো? আমি তেমনটি নই আমার বুকের উপর হুমরি খেয়ে জোরে জাপটে ধরলো আর বলতে লাগলো মাগি অনেক অপেক্ষা করছি, তোর পেছনে যে সময় দিয়েছি কারো পেছনে এতো সময দিতে হয় নাই, আজ তোকে জোর করেই...। আমি জোরে চিৎকার দিলাম, আমার বুক থেকে উঠে গলা টিপে ধরলো। আমার ধম বন্ধ হয়ে আসছিলো, হাত জোড় করে ক্ষমা চাচ্ছিলাম।

গলা ছেড়ে দিলে, আমি বললাম দেখো আমি তোমার উপযুক্ত নই। আমাকে মুক্তি দাও। দরজা খুলে দিলো আমি দৌড়ে বের হযে গেলাম। রাস্তা দিয়ে হাটছি আমার মাথার উপর আকাশ , মনে হচ্ছে ভারি আকাশটা আমি মাথায় করে হাটছি। পুরুষ মানুষের উপর আরো একবার ঘৃনার জন্ম হলো , থু মারলাম।

কিন্তু আমিতো মেয়ে মানুষ কাউকে তো না কাউকে গ্রহন করতেই হবে। ভাবতে ভাবতে আবিরের ফোন। ফোনটা রিসিভ করতে ইচ্ছে করছে না। দূর দেশে থাকে বলে হয়তো এমন আচরণ করার সুযোগ পায় না । যখন দেশে আসবে তখন যদি চেঞ্জ হয়ে যায়! তাহলে কি হবে? ভাবতে ভাবতে স্রোতি হাসে , যা ইচ্ছে পুরুষ মানুষ গুলো করুক।

আমার জীবনটাই একটা স্রোত, দেখি না কোথা থেকে কোথা গড়াই!!  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.