আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মারকাজুলের এ্যাম্বুলেন্সে করে হুজি নেতারা হাওয়া ভবনে গেছেন জবানবন্দীতে মাওলানা রশিদের তথ্য



ইসলামী এনজিও আল মারকাজুল ইসলামের এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হুজির জঙ্গী মুফতি আবদুল হান্নান, আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা সাবি্বরসহ অন্য জঙ্গীরা একাধিকবার হাওয়া ভবনে গেছেন। আল মারকাজুল ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা আবদুর রশিদ জবানবন্দীতে এ ধরনের তথ্যের কথা উল্লেখ করেছে। সিআইডি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও সিপিবির বোমা হামলার মামলায় হুজির দুই শীর্ষনেতা মাওলানা শেখ ফরিদ ও মাওলানা সাবি্বরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর একই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডির কাছে তারা জানিয়েছে, দেশের প্রায় সকল গ্রেনেড-বোমা হামলায় জড়িত হরকত-উল-জিহাদের (হুজি) দুই শীর্ষ জঙ্গী মাওলানা শেখ ফরিদ ও মাওলানা সাবি্বর। ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান ও ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির আমির মুফতি ফজলুল হক আমিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ আছে হুজির এ দুই শীর্ষ জঙ্গীর।

গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে জঙ্গী তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। রাজধানীর উপকণ্ঠে জঙ্গীদের ছোট ছোট ঘাঁটি আছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তারা। হুজির শীর্ষ এ দুই জঙ্গী জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, হুজিকে সংগঠিত করে তারা দেশে নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। হজির এ শীর্ষনেতা শেখ ফরিদের সঙ্গে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনীর যোগাযোগ ছিল বলে জানিয়েছে। কেরানীগঞ্জের একটি বাসা থেকে গ্রেফতারকৃত হুজির ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা আব্দুল হান্নান ওরফে সাবি্বর ও সদস্য আইনুল হককে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শেখ ফরিদকে টঙ্গী রেলস্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়। রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলা, কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভায় ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুতে রাখার মামলা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড বিস্ফোরণ মামলা রয়েছে মাওলানা শেখ ফরিদের বিরুদ্ধে। এসব মামলায় এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে মাওলানা সাবি্বরকেও। ২১ আগস্টের গ্রেনেড বিস্ফোরণের পর মাওলানা সাবি্বর, মাওলানা ইয়াহিয়া, মাওলানা নোমান এবং আরও কয়েক সঙ্গীকে নিয়ে মিয়ানমারের আরাকানে যান। সেখানে ৭/৮ দিন অবস্থানের পর কালা পাহাড়ে আরও তিন দিন অবস্থান করে দেশে ফিরে আসেন।

২০০৯ সালে হুজির মূলধারার আমির মুফতি হান্নান, মাওলানা আব্দুস সালাম ও মাওলানা শফিকুল ইসলাম গ্রেফতার হওয়ার পর শেখ ফরিদ সংগঠনের দায়িত্ব নেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মুখে তিনি সে সময় থেকে আত্মগোপনে চলে যান। পলাতক থেকেই তিনি সংগঠনের দেখভাল করছিলেন। পাকিসত্মানভিত্তিক হুজি নেতা আমীর সাইফুলস্নাহ আক্তার মাওলানা আব্দুর রহমান সিনদী ও সেলিম শেরকোর সঙ্গে দেখা করেন শেখ ফরিদ। ১৯৯৭ সালে হুজির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার এক বছরের মাথায় মহাসচিবের দায়িত্ব পান শেখ ফরিদ।

১৯৯৯ সালে উদীচী হামলার পর হুজির কর্মকা- নিয়ে বিতর্ক শুরম্ন হলে তারা সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে 'ইসলামী দাওয়াত কাফেলা' নাম দেয়া হয়। ২০০২ সালে এ সংগঠনের মহাসচিবের দায়িত্ব পান ফরিদ। পরবতর্ীতে ২০০৪ সালে নাম পরিবর্তন করে ইসলামী গণআন্দোলন বাংলাদেশ নাম করা হয়। ২০০৬ সালে আবারও নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ বাদ দিয়ে শুধু ইসলামী গণআন্দোলন রাখা হয়। পরবতর্ীতে আবারও নাম পরিবর্তন করে ইসলামী ডেমোক্র্যাটিক পার্টি রাখা হয়।

ইসলামী আইন বাসত্মবায়ন কমিটি ও ইসলামী দলগুলোর সভা-সমাবেশ সফল করতে নাশকতা কর্মকা- চালানোর পরিকল্পনা নিয়ে তারা রাজধানীর উপকণ্ঠে ঘাঁটি গেড়ে বসে। এ খবর পাওয়ার পর তাদের র্যাব গ্রেফতার করে। সিআইডি তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। অপরদিকে সিআইডি কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভামঞ্চের কাছে বোমা পুঁতে রাখার মামলার অন্যতম আসামি হরকত-উল-জিহাদের (হুজি) অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নেতা আবদুল হান্নান ওরফে মাওলানা সাবি্বরকে (৫১) অন্যান্য গ্রেনেড ও বোমা হামলার ব্যাপারেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রমনা বটমূল, যশোরের উদীচী মামলাসহ অন্যান্য গ্রেনেড-বোমা হামলার অন্যতম আসামি তারা।

র্যাব তাদের রাজধানীর ওপার কেরানীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে। তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হুজিকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছিল। আবদুল হান্নান নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হুজির নায়েবে আমিরের পদ গ্রহণ করে তৎপরতা জোরদার করে। আবদুল হান্নান ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভামঞ্চের কাছে বোমা পুঁতে রাখা, ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বোমা হামলা ও ১৯৯৯ সালে যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার ব্যাপারে স্বীকার করেছে বলে জানা গেছে। আবদুল হান্নান আফগান ফেরত যোদ্ধা ও প্রশিক্ষক।

হুজির প্রতিষ্ঠাকালে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আইনুলও প্রশিক্ষক। র্যাব তাদের কাছ থেকে সংগঠনের সিডি ও বোমা তৈরির নঙ্া উদ্ধার করেছে। এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী মাওলানা সাবি্বর হুজির উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডার ছিলেন। তার বাড়ি বগুড়ায় হলেও তিনি রাজশাহী উপশহরে থাকতেন।

সেখানে তিনি একটি মহিলা মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি গা ঢাকা দেন। চলতি বছরের ২২ ফেব্রম্নয়ারি আইনুল পাবনার ঈশ্বরদীতে গিয়ে সংগঠনের অন্য সদস্যদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করেন। তারপর তারা বরিশালের চরমোনাই মাহফিলে চলে যান। পরে দুই জনই কেরানীগঞ্জ এসে ধরা পড়ে।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী এসএম কিবরিয়াকে গ্রেনেড হামলা করে হত্যা ও ২১ আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগ সমাবেশে বোমা হামলার সঙ্গে সে জড়িত ছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পাওয়া গেছে। Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।