আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বপ্নিল ও জিদনি

লক্ষ্য স্বপ্ন ও বাস্তবতার দূরত্ব কমিয়ে এক বিন্দুতে ফেলা

পার্ট-১ স্বপ্নিলের সাথে জিদনির পরিচয় সেই ২০০৭ এ, সেই থেকে তারা ভাল বন্ধু। কলেজের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রায়-ও ২জন একসাথে। দুজন দুজনাকে ভালভাবেই চিনত,বুঝত তাই একসাথে সবসময় না থাকলেও মনে হত একসাথে আছে। স্বপ্নিলের খামখেয়ালি স্বভাবটা অনেক মজার কারণ সে এনজয় করতে পছন্দ করে,তার যা ইচ্ছে তাই করে। স্বপ্নিলের প্রধান কাজ-ই হল জীবনটাকে উপভোগ করা সে যেভাবেই হউক, অবশ্যই সুন্দরভাবে।

স্বপ্নিলের আরেকটা বিশেষ গুন হল সে নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সাথে সম্পর্ক রাখতে পারে। অন্যদিকে সুন্দরী জিদনি একটু বোকা কারণ যেমন না বোঝেই অনেক এর সম্বন্ধে ধারণা নিয়ে ফেলে কিন্তু বাচবিচার করেনা আসলেই কি তার চিন্তা ঠিক কিনা। তবে জিদনি খুবই ভাল একটা মেয়ে তবে একটু বেশি ইমোশনাল। জিদনির এই ইমোশনাল বিষয় টাই স্বপ্নিলের সবচেয়ে বেশি পছন্দের। পার্ট-২ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এক বছর স্বপ্নিলের কেটে যায় অনেক ঝামেলায় তাই কেম্পাসে খুব একটা সময় দেয়নি।

যেকারনে দুজনের একসাথে থাকা হয়ে উঠেনি খুব। যখন থেকে ক্যাম্পাসে আসা করল স্বপ্নিল আগের মতই একসাথে থাকা হত দুজনের। কিন্তু হটাৎ ঘটল বিপত্তি!! স্বপ্নিল হয়ত চাইত একটু খোলা মনে জিদনি তার সাথে থাকুক কিন্তু জিদনি একটু বেশি এ কথা মনের ভিতর লুকিয়ে রাখত। যেকারনে দুজনের মাঝে ভুল বোঝাবোঝি এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। স্বপ্নিলের মনে হল এখানে তার কোন দোষ নেই,জিদনি তাকে ভুল বুঝেছে অথবা হয়ত জিদনির আশা ছিল এমন আচরণ স্বপ্নিল করতে পারেনি।

কিন্তু স্বপ্নিল পরিস্কার ছিল এ বিষয়ে যে এমন কিছুই ঘঠেনি যে সম্পর্কই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। যাই হউক,স্বপ্নিল নিশ্চুপ ই থাকল। এখনও তার মাথায় এ চিন্তা আছে যে নিশ্চুপ থেকে কি সে ভুল করেছিল?! তবে অই সময় এই ভেবে সে নিশ্চুপ থাকে যে,জিদনি যদি এভাবে খুশি থাকে থাকুক। স্বপ্নিলের একটা বিষয় খুবই ভাল যে সে মানুষকে খুশি দেখতে খুব পছন্দ করে এবং আপ্রাণ চেষ্টা করে যাতে তার চারপাশের মানুষগুলা জীবনকে উপভোগ করতে পারে। এজন্য যেকোন বিষয় সে খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করতে পটু।

স্বপ্নিল চাইত জিদনি যাতে খুব ভালভাবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটা উপভোগ করতে পারে। কিন্তু যেহেতু তাদের মাঝে যোগাযোগ নাই তো সে কিভাবে সে জিদনির সাথে থাকবে?! তাই মাঝে মাঝে কাছের বন্ধুর সাথে জিদনির কথা বলত,জিদনি কেন এটা করেনা,কেন ওটা করেনা,কেন ওকে বন্ধু বানায়না,কেন অদের সাথে চলেনা তাহলে হয়ত আর মজায় থাকতে পারত। যাই হোক,সে যেভাবেই থাকুক সেভাবেই হয়ত আনন্দ পায়,কে জানে! তাদের এই বিচ্ছিন্ন থাকাকালিন সময়ে জিদনির কারো প্রতি ভালোলাগা সৃষ্টি হয়,তাই ভালই,স্বপ্নিল চায় জিদনি যেভাবেই থাকুন খুশি থাকুক। কিন্তু সমস্যা ছিল এখানে জিদনির বান্ধবির ইচ্ছার প্রাধান্য ছিল বলেই হয়ত জিদনি খুব একটা চিন্তা করেনি আসলে তার ভালোলাগাটা কতটুকু যুক্তিসংগত!, আর তার ভবিষ্যৎ-ই বা কি?! ভালোলাগা ভালবাসা কি যুক্তি, বাচবিচার করে হয় নাকি? এমনিতেই হয়ে যায়,তবে এখানে কিন্তু আছে, এই ভালোলাগাটা যে নিজে থেকে আস্তে আস্তে তৈরি করা। ৩য় বর্ষে তখন ওরা।

স্বপ্নিল তখন এ বিষয়ে অনেক কিছুই জানেনা, জানার কথাও না। কিন্তু যে ছেলেটার প্রতি ভালোলাগা সৃষ্টি জিদনির সে যে স্বপ্নিলেরই আরেক ইয়ারমেট!! তখন কিছু এক-আডটু জানতে পারে স্বপ্নিল। তবে এ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায় না সে, “এটা যারতার ব্যাপার আমি কেন নাক গলাব বা চিন্তা করব” এই ভেবে দূরে থাকে সে। আবার স্বপ্নিলের ঝামেলা পছন্দ না,তাই এইসব সম্পর্ক টম্পর্ক থেকে সে দূরেই থাকতে পছন্দ করে। তাই ওই বন্ধুটির সাথে জিদনির সম্পর্ক কতদূর আছে সে জানতে পারেনা।

কিন্তু বন্ধুটির যে জিদনির প্রতি বিশেষ কোন ভালোলাগা নেই বা থাকার কথা না, স্বপ্নিল তা বুঝত বা জানত। পার্ট-৩ চতুর্থ বর্ষে এসে জিদনি এবং স্বপ্নিল আবার আগের মত। তখনি বুঝতে পারে স্বপ্নিল, জিদনির মনে কিছু নতুন কষ্টের সৃষ্টি ,কিছুটা আচ করে ফেলে,বাকিটা জেনে নেয়। জিদনি সব বিষয় চিন্তা করে দেখল, যা ঘটল সেটা অনেকটা শিক্ষণীয় জিদনির জন্য। স্বপ্নিল অনেক সময় জিদনিকে মন খারাপ করা কথা বলে মনটা খারাপ করে দেয়,কিন্তু স্বপ্নিল এটা করে জিদনির ভালর জন্যই, এতে যদি জিদনি কিছু বুঝতে পারে জানতে পারে তাহলেই হল।

তাই এই ঘটনাটা না হয় একটু পজিটিভ-লিই এ দেখলে। স্বপ্নিল অবশ্যই সব কিছুতেই পজিটিভ কিছু খুজে বের করে। সেটা তার অভ্যাস। যদি আসলে ওই বন্ধুটি এবং জিদনির মাঝে এমন কিছুই সম্পর্কের সৃষ্টি হয়নি কিন্তু হাজার হোক মেয়ে ত! জিদনির মনে ত একটু কষ্ট থাকবেই। স্বপ্নিল চায়না এই কষ্টটাও জিদনির মনে থাকুক,তাই কিছু বিষয় পরিষ্কার করতে চায় কিন্তু পারেনা।

এই বিষয়গুলা পরিস্কার করতে গিয়ে যদি কারো সম্ভন্ধে খারাপ কিছু বলতে হয়!,কারন স্বপ্নিল নিজের কাছে সবচেয়ে বেশি সৎ থাকতে চায় সবসময়। কিন্তু কি একটা যেন বিষয় স্বপ্নিলের মাঝে জেগে উঠে মাঝে মাঝে, “আমি কি জিদনিকে ওই বিষয়ে অবগত না করে ভুল করেছি? হয়ত আমি না করলে জিদনি এ বিষয়ে আর এগুত না! কারন আমি বুঝতেই পারছি ছেলেটির জিদনির প্রতি কোন দুর্বলতা ছিলনা, বরং সে নিজেই জেনেশুনে জিদনির ভাললাগাকে মজা হিসেবে নিয়েছে!” এটা কি আমার কোন অপরাধ?!! চাহহহহহহহহহহহ!!!!!!!!! না আবার ভাবে “দূর,আমি কিভাবেই বা বুঝব যে কাহিনিটা এমন?! আর কিভাবে বা জিদনিকে কিছু বলব, ওর সাথে ত কোন যোগাযোগ নাই, আমাকে সে এখন কিভাবে দেখছে বা আমার কথা কতটুকু সে নিবে?!”এগুলা ভেবে চিন্তা করে না,নাহ অহেতুক চিন্তা করলাম। (মাথা ঝারল সে,এখন এগুলা চিন্তা মাথা থেকে বাদ) আবার দেখা যায় চিন্তা করে স্বপ্নিল, “ আমার কি এ বিষয়ে কথাবার্তা বলা উচিত?! নাকি আসলেই এটা কোন বিষয় না? নাকি বন্ধুটি আসলেই খারাপ কাজ করল জিদনির সাথে? নাকি জিদনির ভুল চিল,যা হবার হল??” (দূর বাদ দেই,এত জটিল চিন্তা করব কেন,সহজভাবে চিন্তা করলেইতো সহজ ভাল থাকা যায়,জিদনিও যেন আমার মত চিন্তা করে...এই ভেবে ভেবে ঘুমিয়ে পরে স্বপ্নিল) কারন এখন সব ঠিক আছে,ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে গেলে জীবনটা আর সুন্দর পরিপূর্ণ হয় এটা স্বপ্নিলের ভাবনা। তাই সবকিছুই ঠিক আছে,মাঝে মাঝে ঝামেলাতেও জড়ান উচিত অনেক কিছু শেখা যায়। স্বপ্নিলের এটা মনে হয় সব সম্পর্ক যে কাছে থাকলেই ভাল থাকে এমন না,কিছু সম্পর্ক দূরে থেকেও ভাল থাকে কিন্তু এটাও ঠিক কাছাকাছি থেকে একসাথে চলার আনন্দ টাই অন্যরকম।

সবকিছুর পরে,স্বপ্নিলের প্রতি জিদনির কোন ক্ষোভ আছে কিনা স্বপ্নিল জানেনা। কিন্তু জিদনির প্রতি স্বপ্নিলের কোন ক্ষোভ নেই,স্বপ্নিল ধরে নেয় জিদনির কাছে সে ততটুকুই প্রিয় যতটা না তার কাছে জিদনি। স্বপ্নিল সহজভাবেই থেকে মানুষের অন্তরে গেঁথে যেতে চায় ভালবাসা দিয়ে,যাতে করে মানুষ আজীবন মনে রাখতে পারে তাকে। অন্যরা যে যেভাবে পারুক তাদের মাঝে ঢুকুক, জামেলা হোক,তবে স্বপ্নিলের কাছে এটা মনে হয় স্বপ্নিল ও জিদনি যেমন আছে বর্তমানে, আজীবন থাকবে তেমন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।