আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক ভাগ্যাহত "মরু শিয়াল"......



আরভিন জোহানস ইগান রোমেল সামরিক ইতিহাসের অন্যতম সেরা জেনারেল বলা হয় তাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের প্রিয় জেনারেল ছিলেন এবং ১৯৪০ সালে ফ্রান্স ডিফেন্স লাইন চুরমার করে দেয়ার নায়ক এই জেনেরাল। উত্তর আফ্রিকার যুদ্ধে তার কৌশলগত প্রতিভার জয়,সেনাদের মন বল চাঙ্গা রাখা, সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং যুদ্ধ জয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ হিটলার তাকে ফিল্ড মার্শাল এ ভূষিত করেন,এবং মরুর যুদ্ধে অসামান্য সফলতার জন্য তাকে "মরুর শিয়াল"নামে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। ১৯৪৩ সালে ইউরোপ কে রক্ষা ও মিত্রবাহিনীর হামলার জবাব দেয়ার জন্য ফ্রান্সের উপুকূলে এক প্রতিরক্ষাবুহ্য গরে তোলেন ফিল্ড মার্শাল রোমেল। একই বছরের প্রথমদিকে রোমেল বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে হিটলারের বিশ্ব জয়ের আশা ভেঙ্গে যেতে বসেছে।

জার্মানী সফরের সময় মিত্রবাহিনীর অবিরাম বোমাবর্ষণের ফলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং মানবিক বিপর্যয় দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। রোমেল প্রথমবারের মতো নাজী বাহিনী কর্তিক মৃত্য শিবির স্থাপন,দাস শ্রমিক নিযোগ এবং ঢালাও ভাবে ইহুদী নিধন সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি অনুধাবন করতে পারলেন যে জার্মানীর জয় আশা করা এবং যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করা তার মাতৃভূমির জন্য বিপর্যয় দেকে আনবে। সেই মুহর্তে রোমেল নাজি বাহিনীর সমমনা হিটলার বিরোধীদের সাথে যোগযোগ স্থাপন করে হিটলার কে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে মিত্রবাহিনীর সাথে শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করতে লাগলেন। ১৭ ই জুলাই ১৯৪৪ এ ব্রিটিশ বাহিনী তার গাড়িতে বোমাবর্ষণ করলে তিনি আহত হয়ে জার্মানিতে চিকিৎসার জন্য ফিরে আসেন।

এর তিনদিন পর হিটলার তার পূর্ব প্রুশিয়ার হেড কুয়ার্টার এ বৈঠকের সময় হিটলারকে হত্যা করার উদ্দ্যেশে বোমা বিস্ফোরণ ঘটালে হিটলার অল্পের জন্য প্রাণে বেচে যান। এই হামলার রক্তক্ষয়ী জবাব দেয়ার জন্য কিছু সন্দেহভাজনদের চিন্হিত করা হই ,যার মধ্যে রোমেল ছিলেন একজন। যদিও তিনি হিটলারে উপর হামলা সম্পর্কে কিছু জানতেন না,কিন্তু তার পরাজিত মনোভাব দেখে তার বিরুদ্ধে পরওয়ানা জারি করতে হিটলারের কোনো বেগ পেতে হইনি। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় কিভাবে একজন জনপ্রিয় জার্মান জেনারেলকে জনগনের কাছে দোষী হিসেবে চিন্হিত করানো যায় তা নিয়ে। অবশেষে হিটলার বাহিনী রোমেলকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করার সিদ্ধান্ত নিলেন যাতে জনগণ মনে করে যে রোমেল তার অসুস্থতার কারণে মারা গেছে।

১৪ই অক্টোবার ১৯৪৪ সালে গেস্টাপো বাহিনী তাকে বাড়ি থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়. কিছু সময় পর তার বাড়িতে খবর আসে তিনি সায়ানাইড পিল খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।