I deem them mad because they think my days have a price...
আমরা যারা age of empire গেমটি খেলি তারা হয়তো অনেক পুরনো সভ্যতার নাম জানি তাছাড়া ওই সভ্যতাগুলো কেমন ছিল,মানুষগুলোই বা কি খেত কি করত তা জানার আগ্রহও কিন্তু অনেকের আছে। আজকে age of empire এর সেই হিংস্র সভ্যতা গুলো এবং এর মত আরও কিছু বর্বর গোত্র নিয়েই আমার পোস্ট। সে সময়ের কথা বলব যখনকার মানুষ গুলোকে আপনি চাইলেই স্রেফ জন্তু বলে চালিয়ে দিতে পারবেন। কেন বলছি??বর্তমানে আমরা যে সভ্যতা দেখছি,আমাদের চারপাশের মানুষগুলোর নীতি নৈতিকতার যে নুন্যতম জ্ঞান আছে পৃথিবীতে এই ব্যাপারগুলো সবসময় এমনি ছিল তা সত্যি নয়। আজকের দিনে যেগুলো শুধুমাত্র জন্তু জানোয়ার বা কোন বিকৃত রুচিবোধের মানুষ করতে পারে বলে আমাদের ধারনা কিছু কিছু সভ্যতা ছিল যেখানে মানুষ এসব করত তাদের প্রাত্যহিক জীবনের একটা অংশ হিসেবে,হেসে খেলেই,এইসব অনেকটা ডাল ভাত খাওয়ার মত সহজ কাজ ছিল তাদের কাছে।
প্রথমেই বলব সেল্টিকদের কথা। যুদ্ধ বিগ্রহে পারদর্শী এই জাতিটি পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম বর্বর একটি জাতি। সেই সময়ে মাথা শিকারি নামে তাদের ভাল নামডাক ছিল। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যে ব্যাপারটা তা হল এরা যখন কারো সাথে যুদ্ধে জিতে যেত তখন তারা তার মাথা শরীর থেকে আলাদা করে ফেলত এবং বাড়ি ফিরার সময় সেটি ঘোড়ার গলায় বেধে নিয়ে আসত। ভাবুনতো অইরকম একটা দৃশ্যের কথা যেখানে একটা মানুষ যুদ্ধে জিতে তার শত্রুর মাথা কেটে ঘোড়াই বেধে নিয়ে আসছে যে মাথা থেকে ছুইয়ে ছুইয়ে পরছে তাজা রক্ত।
উফফ... বীভৎস। এখানেই শেষ নয় বাড়িতে এসে তারা এটা সিডার তেল নামে এক ধরনের তেল দিয়ে সংরক্ষন করত। এভাবে একেকজনের অনেক মাথা জমত আর কার কাছে কত মাথা জমল সে সংখ্যাই নির্ধারণ করত কে ভাল যোদ্ধা আর কে নয়। আর যখন তাদের বাড়িতে কোন অতিথি আসত তারা নিয়ম করে তাদের কাছে থাকা মাথাগুলো অতিথিকে দেখাতো খুব গর্বের সাথে। সেলটিক যোদ্ধা
এইবার আসি মাওরিদের কথায়।
মাওরিরা নিওজিলান্ডে বসবাস করে অনেক আগ থেকেই এমনকি ইউরোপিয়ানরা ওখানে যাওয়ার আগ থেকেও। এরা সেল্টিকদের তুলনায় এক ধাপ এগিয়ে ছিল। সত্যি কথা বলতে কি ওদের কাজকারবার এমন ছিল যে ওদেরকে আপনি সাক্ষাৎ রাক্ষস বলে মেনে নিতে পারেন। শত্রুকে হত্যা করে তারা তাকে দিব্যি পুড়ে জলসানো মাংস গুলো খেত খুব মজা করে। একবার হল কি??সেটা ছিল ১৮০৯ সাল।
মাওরিদের সমাজের মোড়লের ছেলেকে ইউরোপিয়ানরা অপমান করল। রক্ত উঠে গেল মাওরিদের মাথায়। তারা ইউরোপিয়ানদের জাহাজে হামলা করল এবং ৬৬ জনের প্রায় সবাইকে মেরে ফেলল। তারপর মৃতদেহগুলোকে সাগরপাড়ে নিয়ে খেয়ে ফেলল যেন তারা আয়োজন করে পিকনিক করছে। এই ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী অল্প যে কয়েকজন নাবিক বেঁচে ছিলেন তারাই।
মাওরি আদিবাসী
আমেরিকার নিনজা বলা হত তাদেরকে। হ্যাঁ আমি দুর্দষ অ্যাপাচিদের কথাই বলছি। আপাতদৃষ্টিতে তারা নাকি অনেক নিরিহদর্শন ছিল। কিন্তু এই মানুষ গুলোর ভয়েই তখনকার আশপাশের অনেক গোত্রের মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যেত। যুদ্ধ ক্ষেত্রে তারা খুব আদিম কিছু অস্ত্র যেগুলোর বেশীরভাগই কাঠ বা হাড়ের তৈরি।
কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এই সাধারণ অস্ত্র গুলো ব্যাবহার করেই তারা কাবু করে ফেলত ভয়ংকর সব শত্রুদেরকে। তারপর ই ওই শত্রুর উপর নেমে আসত ভয়ংকর পদ্ধতির সব শাস্তি। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তারা তাদের পরাজিত শত্রুদেরকে বেধে ফেলত আর জীবন্ত অবস্থাই তারা তার পুরো শরীরের চামড়া তুলে নিত। তারা খুব নিঃশব্দে চলাফেরা করতে পারত আর তাই শত্রুরা তাদের হাতে খুব সহজেই পরাস্ত হত।
সবশেষে এযটেকদের নিয়ে বলব।
প্রচণ্ড রকম কুসংস্কারাছন্ন ছিল তারা আর নিজেদের ধর্মের প্রতি ছিল অদ্ভুত অন্ধবিশ্বাস। সান গডের পুজা করত এরা। এতটুকু পড়ে আপনার মনে হতেই পারে যে তাদের কে ভয়ংকর বলার যৌক্তিকতা কোথায়???পুরোটা খুলে বললে আপনি আমার সাথে একমত হবেন বলেই আমার ধারনা। তাদের মতে সান গডের প্রতিদিন রক্তের প্রাচুর্য দরকার। কেননা তাদের মতে রক্তই জীবন এবং পবিত্রতার উৎস।
তাই তারা তাদের ধর্মবিশ্বাস এবং গড কে সন্তুষ্ট রাখতে প্রতিদিন ই রক্ত উৎসর্গ করত। এভাবে তারা অনেক মানুষকে মেরে ফেলে তাদের রক্ত গুলো গডের উদ্দেশে উৎসর্গ করত। আনুমানিক ১৩০০ সালের ওই সময়টাকে ইতিহাসে golden era of human sacrifice নামে বলা হত শুধুমাত্র তাদের এই নিষ্ঠুর কাজের জন্যই। শুধু তাই নয় খরার সময় তারা অনেক শিশুকে প্রচণ্ড নির্যাতন করে মেরে ফেলত কারন তাদের বিশ্বাস ছিল যে এই শিশুগুলোর কান্নার পানিতে খুশি হয়ে দেবতা আকাশ থেকে বৃষ্টি নামাবেন। মাঝে মাঝে তারা দেবতার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কুমারী মেয়েদেরকে টানা ২৪ ঘণ্টা নাচাত তারপর তাদের কে হত্যা করে তাদের চামড়া ছিরে নিত আর সেটি উপহার হিসেবে দিত তাদের ধরমগুরুর কাছে।
এযটেকদের বীভৎস সেই উপাসনা
উফফ...... এই মানুষ গুলো নিয়ে ভাবতে আর ভাল লাগছেনা। আজকে থাকুক এইখানেই। আপুনি এবং মিয়াভাইরা সবাই ভাল থাকবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।