আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিরবতা হিরন্ময়



কবিতায়, কায়দা করে বার কয়েক ধুসর শব্দটা ব্যবহার করলেই নাকি উত্তর আধুনিক কবিতা হয়ে যায়। কিছু হতচ্ছাড়া বেয়াড়া বেল্লিক আরো কয়েক ডিগ্রি বাড়া। তাঁরা বলেন- যে কোন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকীয়'র দু পাশ থেকে লম্বালম্বি করে দু সেন্টিমিটার করে ফেলে দিয়ে বাকি অংশটুকু কে নাকি উত্তর আধুনিক কবিতা বলে চালিয়ে দেয়া সম্ভব। আমরা যারা মানুষ থেকে মেধা ধার কর্জ (সহজ কথা চুরি চামারি করে )করে লেখালেখির কাজ চালাই করি অর্থাৎ অপসাহিত্যিক,আমাদের পক্ষে আধুনিক উত্তরাধুনিক ডালবরাবর। পৃথিবী যখন আধুনিক যুগ থেকে উত্তরাধুনিক যুগে প্রবেশ করলো,সাহিত্যে বিষয়টা টের না পেলেও টের পেয়েছি মশারি টানানোর বেলায়।

নতুন যুগে বেডস্ট্যান্ডের চল গেছে চলে। এমন ভাব, এ বাসায় মশা নেই,কামড়ানোর প্রশ্নই আসে না। কপাল খারাপ বাড়িওলার-বাড়ি ওয়ালার হৃদয় বিদীর্ণ করে ওয়ালের কোনায় ড্রিল মেশিনে পেরেক ঠাশা। সবাই বলে বাড়ীর ইনটেরিয়র পরিবর্তন করলে পরিবেশ ভালো থাকে। বিপত্তি টা ঘটে তখুনি।

বিছানার নতুন অবস্হানে মশারি টানানোর জন্য পুরা ঘর তন্নতন্ন করে বিঘৎ খানেক সুতলি পাবেন না। আবার ধরেন আপনি শখের বসে বাগান করেন,আপনার হাত পাঁচেক সুতলি দরকার,দোকানী অতো কম সুতো বেচে না। দরকার না থাকলেও নিতে হবে। কি আর করা!মশারী যখন যা দরকার তা পাওয়া যাবেনা ,অদরকারে ঐ পণ্যতে সয়লাপ। একজন ভালো বক্তা জানেন তার কখন থামতে হবে।

যুগটাই এরকম-কোন বিষয়ে যার কথা বলার কথা উনি বাদে বাকি সবাই কথা বলছেন। সারাদিন কথা বলছি অথচ দরকারের সময় আশ্চর্য রকম বাকসংযম!মবু মামার কথাই বলা যাক- হাসিবের সেজো মামা -মবু মামা যখন বারো বছর পর বেলজিয়াম থেকে দেশে বেড়াতে আসেন ,সময়টা ১৯৯৪। বাংলাদেশ ততদিনে আধুনিকের তকমা ছেড়ে উত্তরাধুনিকের পলক পরেছে। ঢাকা বদলে গেছে আমূল ভাবে ,তুমুল রকমে। এ ঢাকা কে মামা চিনতে পারেছেন না।

বন্ধুদের নির্দেশনা মেনে আড্ডা থেকে বাসায় ফিরতেন। কাহাতক আর বন্ধু দের জ্বালাতন করা যায়!এ ভেবে মামা কিনলেন ঢাকার ম্যাপ। এর পরদিন মামা বাসায় ফিরলেন রাত দুইটায়। নানুর ততক্ষনে ছেলের টেনশনে খাশী মানত করা শেষ। শাহবাগ থেকে ফকিরেরপুল আসতে এতো সময় লাগার কারণ -মামা নাকি ম্যাপ ফলো করে বাসায় আসতে চেয়েছিলেন!এতো গেলো যা করার দরকার নাই তা করার ফল,এর উল্টো উদাহরণ ও আছে!এবারের নায়কও মবু মামা।

মামা গিয়েছেন বন্দ্ধুর সাথে দেখা করতে বন্ধ্বুর অফিসে। একসময় মামার ফ্রেস রূমে যাবার প্রয়োজন। দূর্ভাগ্যক্রমে টয়লেটের লক্ টা ছিলো নষ্ট। বেখেয়ালে মামা যেইনা দরজা খুলেছেন দেখেন কমোডে একজন বসা। লোকটা কি করে দেখার জন্য মামা আর দরজা খুলেই রেখেছেন(এক কালের সেরা দুষ্টু ছিলেন এখনও দুষ্টুমির সুযোগ হাতছাড়া করেন না) লোকটা গলা খাকারি দিচ্ছে,"ওহক ওহক হমমমমম" মামা অপেক্ষা করছেন লোকটা কখন গালি দেন।

তখনো লোকটা বলছে,"এ হের্ম এঃ হ্রম ওহক হমমম" আমাদের দেশে বাথরূমে কেউ আছে জানানোর নিয়ম গলা খাকারি দেয়া-লোকটা যে এ লৌকিকতার একনিষ্ঠ ভক্ত মামা তখনো বুঝতে পারেন নি। লোকটার বলা উচিৎ ছিলো-ঐ ব্যটা বাইর হ ?!না ,তা করে তা না করে গলা খাকারি!,"এহেক এহেক ঘররররর হমম " অবশেষে মামা হার মানলেন কে বলেছিলেন সাইলেন্স ইজ গোল্ডেন?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।