কোন এক কাকডাকা ভোরে অন্ধকারের বুক ছিঁড়ে ফোটে উঠা আলোর হাত ধরে আমি হেঁটে গিয়েছিলাম প্রসন্ন পৃথিবীর পথ ধরে,একটি সূর্য আমায় ডেকেছিল বলে। ইদানীং ফেসবুকে কিছু পোস্ট দেখে অবাক, বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হতে বাধ্য হই। মতিঝিলে হাজার হাজার হেফাজত কর্মীকে গণহত্যা করে গিলে ফেলেছে পুলিশ, মতিঝিলে বিডিআর এর পোশাকে কিলিং এ অংশ নিয়েছে বিএসএফ, বিডিআর এর লুকিয়ে রাখা সারি সারি হেফাজত কর্মীদের লাশ, সাভারে রানা প্লাজার শত শত লাশ রাতের আধারে গুম করে ফেলেছে সরকার, অমুক দেশে কপালে আল্লাহু লেখা দুই শিশু জন্ম নিয়েছে, ক্যামেরা আবিস্কারের ১০০ বছর আগের পবিত্র কাবা শরিফের ছবি এমন আরো অনেক মিথ্যা, বানোয়াট, আজগুবি খবর ও ছবিতে ভরপুর এখন ফেসবুক। একটা পোস্ট দেখলাম যেখানে বলা হয়েছে একজন শ্রমিকের পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে যা এক সিএনজিতে পাওয়া গেছে। বলা হয়েছে এটা শেয়ার করতে যাতে সেই শ্রমিক তার পাসপোর্ট ফিরে পেয়ে বিদেশ গিয়ে কাজ করে খেয়ে পরে বাঁচতে পারবে।
সেখানে যে পাসপোর্টটা খুঁজে পেয়েছে তার সাথে যোগাযোগের নাম্বার দেয়া হয়েছে। দেখলাম মানবিক দায়িত্ব মনে করে এটা ১০০০ এর বেশি বার শেয়ার করা হয়ে গেছে! অথচ যে নাম্বারটা দেয়া আছে তা হলো ০১২৩৪৫৬৭৮৯০! মানে কেউ শুধু ফান করার জন্য এই পোস্টটা বানিয়েছে আর এই মিথ্যা জিনিসটা শেয়ার করা হচ্ছে হাজার বার! ফেসবুকে বা ওয়েবে এসব লিখতে বা প্রচার করতে প্রথমত পয়সা লাগে না। আর ফটোশপের এই যুগে ছবি জোড়া দিতে বা এক ছবিকে আরেক ছবি বলে চালাতে কারো সত্যনিষ্ঠ হতে হয় না, কোনো তথ্য প্রমাণ লাগে না, কারো কাছে জবাবদিহি করতে হয় না, মিথ্যা প্রচারের জন্য কোনো শাস্তির ভয়ও থাকে না। তাই সংকীর্ণ রাজনীতির স্বার্থে, ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টির স্বার্থে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্রেফ মানুষকে বোকা বানানোর স্বার্থে এসব প্রচার করা হচ্ছে। আর অন্ধ মানুষ না জেনে, না বুঝে, না ভেবে একে ধর্মীয় বা নৈতিক দায়িত্ব মনে করে ঝাঁপিয়ে পড়ে লাইক দিচ্ছে, শেয়ার করছে।
প্রযুক্তি কি নামুষের বিচারবুদ্ধি, চিন্তাশক্তি বা যুক্তিবোধ নষ্ট করে দিচ্ছে? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।