আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চর্যাপদ (১৬-২১) [সুব্রত অগাষ্টিন গোমেজের পাঠোদ্ধারসহ]

এতকিছু ... ওই সিনেমার জন্যই...

চর্যাপদ (১-১৫) [সুব্রত অগাষ্টিন গোমেজের পাঠোদ্ধারসহ] Click This Link চর্যা-১৬ [রাগ ভৈরবী] মহীধরপাদানাম তিনিএঁ পাটেঁ লাগেলি রে অণহ কসণ গাজই। তা সুনি মার ভয়ঙ্কর রে বিসঅমণ্ডল ভাজই॥ ধ্রু॥ মাতেল চীঅগএন্দা ধাবই। নিরন্তর গঅণন্ত তুসেঁ ঘোলই॥ ধ্রু॥ পাপ পুণ্ণ বেণি তোড়িঅ সিকল মোড়িঅ খম্ভাঠাণা। গঅণটাকলি লাগি রে চিত্ত পইঠ নিবাণা॥ ধ্রু॥ মহারসপানে মাতেল রে তিহুঅন সএল উএখী। পঞ্চবিসঅনায়ক রে বিপখ কোবি ন দেখি॥ ধ্রু॥ খররবিকিরণসন্তাপে রে গঅণাঙ্গণ গই পইঠা।

ভণন্তি মহিত্তা মই এথু বুড়ন্তে কিম্পি ন দিঠা॥ ধ্রু॥ অনুবাদ: তিনটি পাটে কৃষ্ণ হাতির অশান্ত বৃংহণ, শুনে, বিষয়-সমেত ভীষণ ‘মার’-এর আন্দোলন; মত্ত গজেশ ছুটে গিয়ে শেষটায় গগন-প্রান্ত ঘুলিয়ে ফ্যালে তেষ্টায়; পাপপুণ্যের শক্ত শিকলটি এ ছিঁড়ে ফেলে, স্তম্ভটি উপড়িয়ে, গগন-চূড়ায় নির্বাণে মন প্রবেশ করল গিয়ে। মন মহারস-পানে মত্ত হয়, তিনটি ভুবন উপেক্ষিত রয়, পাঁচ বিষয়ের নায়কের যে শত্রু কেউ নয়! খররবিকিরণে মন গগন-গাঙে সাঁতরায়– ডুবলে কিছুই যায় না দেখা!–মহীধরে কাতরায়। চর্যা-১৭ রাগ [রাগ:পটমঞ্জরী] বীণাপাদানাম সুজ লাউ সসি লাগেলি তান্তী। অণহা দাণ্ডী একি কিঅত অবধূতী॥ ধ্রু॥ বাজই অলো সহি হেরুঅবীণা। সুনতান্তিধনি বিলসই রুণা॥ ধ্রু॥ আলি কালি বেণি সারি সুণিআ।

গঅবর সমরস সান্ধি গুণিআ॥ ধ্রু॥ জবে করহা করহকলে চাপিউ। বতিশ তান্তিধনি সঅল বিআপিউ॥ ধ্রু॥ নাচন্তি বাজিল গান্তি দেবী। বুদ্ধ নাটক বিসমা হোই॥ ধ্রু॥ অনুবাদ: সূর্য হ’ল লাউ আর তার হ’ল চন্দ্র, অবধূতি চাকি হ’ল, অনাহত দণ্ড; হেরুক-বীণাটি বেজে ওঠে, সখী ও লো, করুণায় শূন্য-তন্ত্রী বিলসিত হ’ল– আলি-কালি দুই সুর হ’ল তাতে বন্দি, গজবর, সমরস বীণাটির সন্ধি। করতলে করপার্শ্ব চাপ দিলে পরে বত্রিশ তন্ত্রীতে সব পরিব্যাপ্ত করে– বজ্রাচার্য নৃত্য করে, দেবী ধরে গান, বুদ্ধনাটকের তবে হয় অবসান। চর্যা-১৮ [রাগ: গউড়া] কানুপাদানাম তিনি ভুঅণ মই বাহিঅ হেলেঁ।

হাঁউ সুতেলি মহাসুহলীলেঁ॥ ধ্রু॥ কইসণি হালো ডোম্বী তোহোরি ভাভরিআলী। অন্তে কুলিণজণ মাঝেঁ কাবালী॥ ধ্রু॥ তঁই লো ডোম্বী সঅল বিটালিউ। কাজণ কারণ সসহর টালিউ॥ ধ্রু॥ কেহো কেহো তোহোরে বিরুআ বোলই। বিদুজণ লোঅ তোরে কণ্ঠ ন মেলই॥ ধ্রু॥ কাহ্নে গাই তু কামচণ্ডালী। ডোম্বী ত আগলি নাহি চ্ছিণালী॥ ধ্রু॥ অনুবাদ: পার ক’রে দেই তিনটি ভুবন অবহেলায় সুপ্ত থেকে মহাসুখের মহালীলায়।

ডোমনি রে, তোর ভাবকালির পাই না কোনো ঠিক, পিছনে তোর কুলীনজন, সঙ্গে কাপালিক! বিচলিত করলি, ডোমনি, সবকিছুকেই, চাঁদটিকে তোর টলিয়ে দেওয়ার কারণ তো নেই! বিরূপা কয় কুলোকে যদিও তোরে, জ্ঞানী জনে রাখে গলায় মালা ক’রে। কানু বলে, কামাতুরা রে চণ্ডালী, তিনভুবনে তুলনাহীন তোর ছিনালি! চর্যাপদ-১৯ [রাগ ভৈরবী] কানুপাদানাম ভবনির্ব্বাণে পড়হ মাদলা। মণপবণবেণি করণ্ডকশালা॥ ধ্রু॥ জঅ জঅ দুন্দুহিসাদ উছলিআঁ। কাহ্ন ডোম্বীবিবাহে চলিআ॥ ধ্রু॥ ডোম্বী বিবাহিআ অহারিউ জাম। জউতুকে কিঅ আণুতু ধাম॥ ধ্রু॥ অহণিসি সুরঅপসঙ্গে জাঅ।

জোইণিজালে রঅণি পোহাঅ॥ ধ্রু॥ ডোম্বীএর সঙ্গে জো জোই রত্তো। খণহ ন ছাড়অ সহজ উন্মত্তো॥ ধ্রু॥ অনুবাদ: ভব নির্বাণ, পটহ মাদল; মন ও পবন, কাঁসি আর ঢোল; দুন্দুভি বাজে জয়-জয়-রবে, কানু-ডোমনির আজ বিয়ে হবে। ডোমনিকে বিয়ে ক’রে জাত গেল, শ্রেষ্ঠ ধর্ম যৌতুক পেল; কাটে নিশিদিন সুরত-রঙ্গে, রজনি পোহায় যোগিনী-সঙ্গে– যে-যোগী মজেছে ডোমনির পাঁকে প্রাণ গেলে তবু ছাড়ে না সে তাকে। চর্যা-২০ [রাগ: পটমঞ্জরী] কুক্কুরীপাদানাম হাঁউ নিরাসী খমণভতারি। মোহোর বিগোআ কহণ ন জাই॥ ধ্রূ॥ ফেটলিউ গো মাএ অন্তউরি চাহি।

জা এথু চাহাম সো এথু নাহি॥ ধ্রূ॥ পহিল বিআণ মোর বাসনপূড়া। নাড়ি বিআরন্তে সেব বাপূড়া॥ ধ্রূ॥ জাণজৌবণ মোর ভৈলেসি পূরা। মূল নখলি বাপ সংঘারা॥ ধ্রূ॥ ভণথি কুক্কুরীপা এ ভব থিরা। জো এথু বুঝই সো এথু বীরা॥ ধ্রূ॥ অনুবাদ: হলাম নিরাশ, স্বামী ক্ষপণক, হায়, আমার বেদনা ভাষায় কওয়া না যায়। বিয়ালাম গো মা, আঁতুড়ের খোঁজ নাই, নাই কোনোকিছু, এখানে যা-কিছু চাই।

প্রথম প্রসব আমার, বাসনাপুট, নাড়িটা কাটতে-কাটতেই, হ’ল ঝুঁট! পূর্ণ আমার হ’ল নবযৌবন, ঘটল মায়ের বাপের উৎসাদন। কুক্কুরী ভনে, এ-জগৎ চির-স্থির, যে জানে এখানে, সে-ই শুধু হয় বীর। চর্যা-২১ [রাগ: বরাড়ী] ভুসুকুপাদানাম নিসি অন্ধারী মুসঅ চারা। অমিঅভখঅ মুসা করঅ আহারা॥ ধ্রূ॥ মার রে জোইআ মুসা পবণা। জেণ তুটঅ অবণাগবণা॥ ধ্রূ॥ ভববিন্দারঅ মুসা খণঅ গাতী।

চঞ্চল মুসা কলিআঁ নাশক থাতী॥ ধ্রূ॥ কাল মুসা উহ ণ বাণ। গঅণে উঠি চরঅ অমণধাণ॥ ধ্রূ॥ তাব সে মুসা উঞ্চল পাঞ্চল। সদ্‌গুরুবোহে করহ সো নিচ্চল॥ ধ্রূ॥ জবে মুসাএর চার তুটঅ। ভুসুকু ভণঅ তবে বান্ধন ফিটঅ॥ ধ্রূ॥ অনুবাদ: গভীর নিশীথে এখানে ওখানে চ’রে অমৃতভক্ষ মূষিক আহার করে– বায়ুরূপী ঐ মূষিকেরে, যোগিবর, আনাগোনা-রোধকল্পে, ঘায়েল কর্‌। চপল মূষিক, মাটি খুঁড়ে থাকে গর্তে, জেনে তার ঠাঁই, ধাও তাকে বধ করতে।

কৃষ্ণ মূষিক, আঁধারে সে অগোচর, আনমনা ধ্যানে হ’য়ে যায় সে খেচর, উড়াম-বা’রাম অস্থির সে-মূষিক যতখন গুরু না-দেখান তাকে দিক্। ভুসুকু ভনয়: বিচরণ শেষ হ’লে সেই মূষিকের সব বন্ধন খোলে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।