শনিবার গভীর রাতে বৃষ্টির মধ্যে এমন অনেকেরই দেখা মিললো, যারা পরদিন সকাল ৯টা থেকে বিক্রি শুরু হতে যাওয়া টিকিটের জন্য এসেছেন।
এবার মোট ২০টি কাউন্টারে বিভিন্ন রুটের ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত ১২টার দিকে বন্ধুসহ আমরা স্টেশনে এসেছি। লাইনের সামনের দিকে থাকলে দ্রুত পাওয়া যায়। এখন আল্লাহকে ডাকি, দেখি টিকিট পাওয়া যয় কিনা।
”
রাতভর বৃষ্টির ফলে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে রোববার সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতা উপেক্ষা করেই সেহরির পর পরও অনেকে হাজির হয়েছেন একটু সহজে যদি টিকিট মিলে সে আশায়।
রাজারবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, মৌচাক, মালিবাগসহ কমলাপুর স্টেশনের আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় সকালের দিকে জলাবদ্ধতা চিত্র দেখা মিললো। এমকি স্টেশনে ঢোকার মুখেও ছিল একহাঁটু পানি।
নির্ধারিত সময় সকাল ৯টা থেকে ৬ অগাস্টের বিভিন্ন রুটের ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়।
খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসের টিকেটের জন্য অপেক্ষারত ১৪ নং কাউন্টারের সামনে দাঁড়ানো ব্যবসায়ী জাহিদুল হক সকাল ৬টায় শেওড়াপাড়া থেকে রওনা দিয়ে স্টেশনে পৌছেছেন সাড়ে ৯টায়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাসা থেকে বের হয়েই এক হাঁটু পানি ভেঙ্গে মেইন রোডে পৌঁছে দেখি সেখানেও একই অবস্থা। সেখানে কোনো রিকশা গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেঁটে কিছুদূর পৌছানোর পর ৩০০ টাকায় একটি সিএনজি ঠিক করি। কিন্তু কিছুদূর আসতে না আসতেই সাইলেন্সারে পানি ঢুকে সিএনজি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আবার কিছুদূর পায়ে হেঁটে তারপর বাসে করে স্টেশনে পৌছাই।
”
এদিকে অন্য দুদিনের মতো এদিনও প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে অপেক্ষমান লোকজনের মধ্যে অসন্তোষ দেখা যায় টিকেট বিক্রিতে ধীরগতির জন্য। একই সাথে টিকেট বিক্রির সময় খানিকটা এগিয়ে আনার দাবিও জানান তারা।
৪নং কাউন্টারের সামনে জামালপুরগামী তিস্তা এক্সপ্রেসের টিকেটের জন্য অপেক্ষারত স্কুল শিক্ষক মাহমুদুল হাসান ক্ষোভের সঙ্গে বললেন, “এক এক জনের টিকেট ইস্যু করতে ৫থেকে ১০মিনিট পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। এক জনের জন্য এতখানি সময় নিলে চলবে বলেন?”
একই সাথে কর্মজীবী মানুষের সুবিধার্থে টিকিট বিক্রি শুরুর সময় অন্তত এক ঘণ্টা এগিয়ে আনার দাবি জানান ব্যাংক কর্মকর্তা হামিদুল হক, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মনোয়ারুল ইসলামসহ অনেকে।
শুক্রবার অগ্রিম বিক্রির প্রথম দিনে ৪ অগাস্টের টিকিট দেয়া হয়।
আর আগামী ২৯ জুলাই ৭ অগাস্ট ও ৩০ জুলাই ৮ অগাস্টের টিকিট দেয়া হবে।
ট্রেনের আগাম টিকিটের ৬৫ শতাংশ বিক্রি করা হচ্ছে সরাসরি কাউন্টার থেকে। মোবাইল ফোনের এসএমএস ও ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে ২৫ শতাংশ টিকেট বিক্রি হবে। এর বাইরে পাঁচ শতাংশ টিকেট রেলওয়ের কর্মচারীদের ও পাঁচ শতাংশ ভিআইপিদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
প্রতিবছরে মতো এবারো ঈদে বাড়তি যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে প্রায় সবকটি ট্রেনের সঙ্গে অতিরিক্ত বগি জুড়ে দেয়া হবে।
পাশাপাশি ঢাকা-পার্বতীপুর, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ ও ঢাকা-খুলনা রেলপথে বাড়তি তিনটি ট্রেন চলবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এ বিষয়ে কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার খায়রুল বশীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৯ তারিখে ঈদ হবে ধরে নিয়ে এর তিনদিন আগে থেকে অর্থাৎ ৬তারিখ থেকে এই বিশেষ ট্রেনগুলো ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরদিন থেকে শুরু হয়ে ঢাকা-পার্বতীপুর রুটে পাঁচ দিন এবং ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ ও ঢাকা-খুলনা রুটে সাত দিন চলবে। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।