আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারতে সদ্যজাত শিশুর আকাশে ওড়াউড়ি

আমি আগা গোড়ায় মোড়ানো পুরোপুরি একজন মুক্তমনা মানুষ।

গ্রীক পুরাণে একটি আংশিক সত্য ঘটনার বর্ণনা ছিল। ওই গল্পে ইকারুস নামের এক ব্যক্তি মোমের সাহায্যে পিঠে ডানা লাগিয়ে চেষ্টা করেছিলেন ওড়ার। শোনা যায় তিনি উড়তেও পেরেছিলেন কিছুক্ষণ। মানুষ হয়ে ওড়ার ঘটনা ওই একটিই।

তবে বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তিতে বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ গ্লাইডিং যন্ত্রের সাহায্যেও উড়তে পারে। তাই মানব সমাজের উড়বার বাসনা অনেক আগে থেকেই। এজন্য তাদের চেষ্টা ও গবেষণারও কোন আদি-অন্ত নেই। যার ফলে আবিষ্কার হিসেবে মানব জাতি পেয়েছে আধুনিক উড়োযান বিমান। তবে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু যদি জন্মেই ওড়ার স্বাদ পায় সেটি তো বিস্ময়েরই।

তাহলে উড়তে উৎসুক ব্যক্তিরা মুষড়ে পড়বেন হতাশায়। কিন্তু এমনটিই ঘটেছে। ভারতের কলকাতার এক সদ্যজাত মানব শিশু জন্মেই শুরু করেছে ওড়াওড়ি। ওই শিশুটির মা চিত্রা রাঘব ৮ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। আর তার প্রসবের সম্ভাব্য সময়সীমা ছিল আগামী ১০ মে।

কিন্তু শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখে ৮ এপ্রিল। শিশুটির মা চিত্রা রাঘব কলকাতা থেকে দিল্লীগামী স্পাইসজেট ফ্লাইটের মাঝপথে ওই শিশুর জন্ম দেন। আর শিশুটিও জন্মেই স্বাদ পায় ওড়াউড়ি করবার। চিত্রা রাঘবের স্বামী শচীন সম্প্রতি জীবিকার প্রয়োজনে কলকাতায় পরামর্শক হিসেবে বসবাস শুরু করেন। তারা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে শুক্রবার ওই ফ্লাইটে করে দিল্লী যাচ্ছিলেন।

উদ্দেশ্য ছিল মূলত চিত্রার স্বাভাবিক প্রসবের ব্যবস্থা করার জন্য দিল্লীর কোন ভাল হাসপাতালের খোঁজ করা। কিন্তু মানুষ ভাবে এক আর বিধাতার চিন্তা আরেক। বিধাতা চেয়েছিলেন ওই শিশুকে তিনি ভূমিষ্ঠ করবেন মহাশূণ্যের মাঝে। চিত্রার স্বামী শচীন জানান, সকাল ৭.১৫ তে ফ্লাইট, কিন্তু তার আধাঘন্টা আগেই চিত্রা অনুযোগ করতে থাকে যে সে অস্বাভাবিকতা বোধ করছে। আমরা এর আগে চিন্তা করেছিলাম ১৫ এপ্রিল দিল্লী যাব।

কিন্তু গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি বেশি সময় নিয়ে সমাধানের জন্য তারিখ পিছিয়ে আনা হয়। তাই সে অভিযোগ করলেও আমি বলি যেহেতু নির্দিষ্ট সময় আসতে এখনও অনেক দেরি কাজেই অস্বাভাবিক কিছু ঘটবে না। কিন্তু সকাল ৮ টা তিরিশে চিত্রা অসহনীয় ব্যথায় অস্থির হয়ে পড়ে। এর পরে শচীন কেবিন ক্রদের সঙ্গে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে যথাশিঘ্রী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। তারা বিমানের পেছনদিকে একটি মাদুর পেতে চিত্রাকে শোয়ানোর ব্যবস্থা করেন।

সৌভাগ্যক্রমে ওই ফ্লাইটেই এক ডাক্তার দম্পত্তি ছিলেন। তারা স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসে ঠিক ৯টা দুই মিনিটে একটি সদ্যজাত শিশুর স্বাভাবিক জন্ম নিশ্চিত করেন। খড়গপুরের মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে কর্মরত ডা. অর্পিতা মৈত্রি ধাত্রীর কাজ সমাধা করেন। অর্পিতা মৈত্রী জানান, যদিও সেসময় কোন অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি ছিল না কিন্তু সে সবের কোন প্রয়োজনই পড়েনি। আর ৫ মিনিট পরেই মা তার শিশুকে কোলে নিয়ে হাটতে পেরেছে।

তবে বাড়তি সতর্কতার জন্য দিল্লীতে সাড়ে ৯টায় বিমান অবতরণ করার পর মা ও শিশুকে গুরগাওয়ের এক বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ অভূতপূর্ব ঘটনার চিরকালীন অংশীদার থাকতে স্পাইসজেট এয়ারলাইন্সের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মা ও শিশুকে বিশেষ একটি উপহার প্রদানের চিন্তা-ভাবনা করছে বলে ওই এয়ারলাইন্সের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.