বেচে আছি
গত ৩১ আগস্ট ২০১০ মঙ্গলবার দৈনিক যুগান্তরের ১৬তম পৃষ্ঠায় ‘‘মৃত্যুর আগে স্বামীর হত্যাকারী সাঈদীর ফাঁসি দেখে যেতে চান ঊষা রানী’’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ করেছেন জিয়ানগর উপজেলার পাড়েরহাট বন্দরের ব্যবসায়ীরা। পাড়েরহাট বন্দরের ব্যবসায়ীরা দৈনিক যুগান্তরের সংবাদ দেখে বিস্মিত ও হতবাক। সংবাদে যে ঊষা রানীকে মদন সাহার স্ত্রী দেখানো হয়েছে এবং মদন সাহা '৭১ সালে পাক বাহিনীর হাতে মারা গেছে বা বাড়িঘর সাঈদী ভেঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ঘর তুলেছেন, পিরোজপুরে ক্যাপ্টেন এজাজের কাছে (সাঈদীসহ কয়েকজন দোসর) ১১ জনকে সোপর্দ করেছে- এসব তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সংবাদের প্রতিটি বর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। কারণ মদন সাহা '৭১ সালে মারা যায়নি।
মদন সাহার স্ত্রীর নাম ঊষা রানী নয়, মদন সাহার স্ত্রী গীতা রানী সাহা এবং মেয়ের নাম আলো রানী সাহা। দৈনিক যুগান্তরে যে ঊষা রানীর ছবি ছাপা হয়েছে তা মদন সাহার স্ত্রীর নয়।
উল্লেখ্য, মদন সাহা ও তার স্ত্রী গীতা রাণী সাহা ১৯৮১ সালে উমেদপুর মৌজার পাড়েরহাট বন্দরের দোকান, বসতঘর ও সম্পূর্ণ জমি শংকরপাশা ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলামের কাছে বিক্রি করে ভারতে চলে যান। পিরোজপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দাতা মদন সাহার দলিলের ঈশাদী হচ্ছেন নারায়ণ মাস্টার। এ ব্যাপারে পাড়েরহাট বন্দরের নারায়ণ মাস্টার (৮০) এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, যুগান্তরে যে ঊষা রানীর ছবি ছাপা হয়েছে সে মদন সাহার স্ত্রী নয়, মদন সাহার স্ত্রীর নাম গীতা রানী সাহা।
মাওলানা সাঈদী '৭১ সালে মদন সাহার ঘর ভেঙ্গে লুট করে নেয়নি। ১৯৮১ সালে মদন সাহা শহীদ মেম্বরের কাছে বসতঘর, দোকান ও জমি কবলা রেজিস্ট্রি দলিল মূলে বিক্রি করে। '৭১ সালে পাক বাহিনী হত্যা করলে '৮১ সালে দলিল দিল কিভাবে? তাছাড়া '৮১ সাল পর্যন্ত মদন সাহা ও তার স্ত্রী গীতা রানীর নাম ভোটার লিস্টে আছে? যুগান্তরের সাংবাদিক কোথাকার ঊষা রানী সাজিয়ে মদন সাহার স্ত্রী বানিয়েছে তা সেই জানে। আমি এরূপ গল্প শুনি নাই।
পাড়েরহাটের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাপড়ের দোকানদার আশরাব আলী মাঝি (৬০) জানান, মাওলানা সাঈদী '৭১ সালে রাজাকার, আলবদর বা স্বাধীনতা বিরোধী কোন কাজে অংশ নেয়নি।
গত তিনটি সংসদ নির্বাচনে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা তাঁর পক্ষে নির্বাচনে মঞ্চে বক্তৃতা দিয়েছেন। মাওলানা সাঈদীকে বিজয়ী করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে দু'বার বিজয়ী করেছেন। এখন যুগান্তর পত্রিকা ঊষা রানীকে ক্ষমতাসীনদের মদদে সাজিয়েছে মদন সাহার স্ত্রী। মূলত হলুদ সাংবাদিকতা না পারে এমন কোন কাজ নেই। কোথায় রইছে মদন সাহা ও তার স্ত্রী গীতা রানী সাহা ভারতে আর কোথায় ঊষা রানী? মদন সাহা ১৯৮১ সাল পর্যন্ত পাড়ের হাট বন্দরে লোহালক্কর বেচাকেনা করেছে।
যুগান্তর নাটক সাজিয়েছে ঊষা রানীর স্বামী মদন সাহাকে '৭১ সালে হত্যা করা হয়েছে?
এ ব্যাপারে শংকর পাশা ইউনিয়নের শহীদুল ইসলাম মেম্বরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, পাড়েরহাট বন্দরের (লোহালক্কর) হার্ডওয়্যারের ব্যবসায়ী মদন সাহার কাছ থেকে তিনি ১৯৮১ সালে বসতঘর, দোকান ও জমি রেজিস্ট্রিকৃত কবলা মূলে ক্রয় করেছেন। যুগান্তরে যে মহিলার ছবি ছাপা হয়েছে সে মদন সাহার স্ত্রী নয়। মদন সাহার স্ত্রী গীতা রানী। আমি তাকে ভালোভাবেই চিনতাম। জমি ও বসতবাড়ি বিক্রির পর ১৯৮১ সালেই তারা ভারতে চলে যায়।
এরপর আর কখনও সে বাংলাদেশে আসেনি। যে মহিলার ছবি পেপারে দেখলাম সে হোগলাবুনিয়া গ্রামের উত্তম মালাকারের ‘মা' ঊষা রানী।
পাড়েরহাট বন্দরের বিশিষ্ট সমাজসেবক রনজিৎ সাহা একই কথা বললেন। পাড়েরহাটের ব্যবসায়ী মাহবুব, মুকুল, রনজিৎ বালা জানালেন, মদন সাহার স্ত্রী গীতা রানী সাহা। পত্রিকার ছবির সাথে গীতা রানী সাহার কোন মিল নাই।
মূলত মিডিয়ার যুগে সাংবাদিকরা না পারে এমন কোন কাজ নেই জানি, তবে এরূপ একটি ডাহা মিথ্যা একজনের বউকে আরেকজনের বানিয়ে, '৮১ সালে জমি বিক্রি করল তাকে '৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর দ্বারা হত্যা এবং প্রখ্যাত আলেম, বিশ্বনন্দিত মুফাসসীর দু'বার নির্বাচিত জনপ্রিয় সংসদ সদস্য মাওলানা সাঈদীকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা সংবাদ লেখা কোন প্রকৃত সাংবাদিকের কাজ নয়। আমরা মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ জানাই এবং মিথ্যাচার পরিত্যাগ করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহবান জানাই। কারণ মিথ্যা ক্ষণস্থায়ী এবং সত্য চিরস্থায়ী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।