দিল ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।
সামুর কোন এক ব্লগারের ব্লগে মুভিটার নাম শুনি। ডাউনলোড করে দেখেই ফেললাম এবারে। প্রথমে বেশ কষ্ট করে টানতে হয়েছে। তারপরে একটা পর্যায়ে এসে আর আটকে থাকিনি।
জিম ক্যারি ও কেট উইনস্লেট এর মাঝে এক সময় অনেক গভীর সম্পর্ক থাকলেও একসময় কেট সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে চলে যায়। একটা সময় পরে জিম তার সাথে দেখা করতে গেলে সে তাকে চিনতেই পারে না। অবাক জিম ক্যারি আবিস্কার করে, কেট এক ধরনের সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসার মাধ্যমে নিজের মধ্য থেকে জিমের সমস্ত স্মৃতি মুছে ফেলেছে।
এই ঘটনার পরে রাগে উন্মত্ত হয়ে সেও সিদ্ধান্ত নেয়, কেট এর সমস্ত স্মৃতি মুছে ফেলবে। ডাক্তারের সাথে কন্ট্রাক্ট সাইন করে সে।
সে যখন ঘুমিয়ে, চুক্তিমত এক রাতে তাকে না জানিয়ে ডাক্তারের সহকারী আসে তার বাড়িতে, এক এক করে সব স্মৃতি মুছে ফেলতে।
একটা একটা করে স্মৃতি ভেসে উঠে জিম এর মনে, তারপরে মুছে যায়, চিরতরে। তাদের সম্পর্কটাকে আরেকবার খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে হঠাৎ করেই বুঝতে পারে, মেয়েটাকে এখনও অনেক ভালবাসে সে। স্মৃতি মুছে ফেলার সিদ্ধান্তটা তার ভুল ছিল, তাই মনে হতে থাকে বারবার।
এবারে যুদ্ধে নামে সে।
ডাক্তার বনাম ঘুমন্ত ক্যরি। একের পর এক চেষ্টা করে যায় কেট এর কোন না কোন স্মৃতি বাচিয়ে রাখতে, মনের অলিতে গলিতে তাকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যায়, গভীর থেকে গভীরে নিয়ে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যায়। কিন্তু ডাক্তারও তো নাছোড়বান্দা।
সুতরাং এক পর্যায়ে সে হার মানতে বাধ্য হয়। কেট এর সাথে শেষ স্মৃতিতে এসে বুঝতে পাওে, কি ভুলটাই না সে করেছে সে।
কিন্তু ততক্ষনে সব শেষ।
এই ছবিটা দেখার পরে আমার মনে হয়েছে কেবল একটা কথাই, আমাদের স্মৃতি অসম্ভব মুল্যবান একটা জিনিস। একে হারানো যায় না, হারাতে দেয়া উচিৎ না। আমাদের স্মৃতিই আমাদের মনে করিয়ে দেয় প্রতিনিয়ত আমরা কে, আমাদের পরিচয় কি, আমরা কি এবং আমরা কি নই। স্মৃতি খারাপ হতে পারে, যন্ত্রনাদায়ক হতে পারে।
কিন্তু মুল্যহীন কখনই না।
পুরো ছবিটার এটুকুই সব নয়। যারা মনে করছেন সব তো শুনেই ফেললেন, আর কি দেখবেন, তারা একটু কষ্ট করে হলেও দেখুন। পুরো ছবিটাতেই দেখার এবং অনুভব করার আছে অনেক কিছু। ইনসেপশন মুভিটায় এ যা দেখান হয়েছে, কাছাকাছি রকমের একটা জিনিস একশন ছাড়া গ্ল্যামারহীন ভাবে দেখতে পারবেন এখানে, আমার ব্যক্তিগত মত এটাই।
আরেকটা জিনিস মনে হয়েছে, সম্পর্ক অনেক গভীর থাকলেও তাতে জমতে পারে নানা ময়লা-আবর্জনা। অনেক গোপন রাগ, ক্ষোভ, অভিযোগ আর যন্ত্রনা।
একে অপরের সাথে যদি সুবিধামত সময়ে এগুলো নিয়ে খোলামনে কথা বলা যায়, অনেক কষ্টই কেটে যেতে পারে, অনেক সন্দেহ আর ভয় কিংবা ক্ষোভ এর সমাধান হতে পারে। নিজেদের না বললে, আর কাকে বলবে মানুষ? নিজেদের ব্যপারে এই নিজেরা ছাড়া আর কে আছে? আর কে আছে সবথেকে আপন?
মিডিয়া ফায়ার
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।