আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতাল নিয়ে দু'পক্ষ মুখোমুখি : বি.বাড়িয়ায় কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ মিছিল

নাজমুল ইসলাম মকবুল

হরতাল নিয়ে দু'পক্ষ মুখোমুখি : বি.বাড়িয়ায় কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ মিছিল চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাওলানারা। বলেছেন, সারা বাংলাদেশে হরতাল না হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সর্বাত্মক সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হবে। হরতালের দিন কাফনের কাপড় ও কোরআন শরিফ হাতে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এতে বাধা দিলে সেখানে শুয়ে পড়তে হবে। এর আগে গত ২৮ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এক অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য র.আ.ম. উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী ঘোষণা দেন সারা বাংলাদেশে হরতাল হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হরতাল করতে দেয়া হবে না।

তিনি অবশ্য দলীয় নেতাকর্মীসহ সবাইকে তার নিজের সঙ্গে হরতালের দিন মাঠে থাকার ঘোষণা দেন। এমন ঘোষণায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল দুপুরে স্থানীয় মাদ্রাসার ছাত্ররা কাফনের কাপড় পরে হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করে। অন্যদিকে আজ জেলা আওয়ামী লীগ নারীনীতির সমর্থনে শহরের পৌর মুক্তমঞ্চে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। এতে স্থানীয় সংসদ সদস্য র.আ.ম. উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী বক্তব্য রাখার কথা।

নারীনীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি পরস্পরবিরোধী কর্মকাণ্ডে গত কয়েকদিন ধরে শহরের পরিস্থিতি উত্তেজনাময়। এদিকে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ হরতালে তারা কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, হরতালের দিন তারা মাঠে থাকবেন না। হরতাল ও নারীনীতি নিয়ে উত্তেজনাকর অবস্থায় স্থানীয় শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখরা এক যুক্ত বিবৃতিতে সদর আসনের সংসদ সদস্যকে তওবা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। গত ৩০ মার্চ এদারায়ে তালিমা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কওমী দ্বীনি শিক্ষা বোর্ডের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় সংসদ সদস্য এখানকার মাওলানাদের মুরতাদ ঘোষণা করেছেন। এ ঘটনার দু’দিন পর শুক্রবার জামেয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসায় ওলামা-মাশায়েখদের এক সংবাদ সম্মেলনে শান্তিপূর্ণ হরতাল বহাল রাখার কথা জানান। এদিন জুমার নামাজের সময় জেলার প্রায় সবক’টি মসজিদে নারীনীতি নিয়ে বিশেষ বয়ান দেয়া হয়। সে সঙ্গে হরতালের যৌক্তিকতা তুলে হরতাল পালনের আহ্বান জানানো হয়। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়ও মাদ্রাসার ছাত্ররা ঘরে ঘরে গিয়ে হরতালের সমর্থনে প্রচারণা চালাচ্ছে।

এদিন সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে একটি লিফলেট বিতরণ করা হয়। লিফলেটের কপি পুলিশ ও বিভিন্ন সংস্থার লোকদের মাধ্যমে বিতরণের কাজ চলছে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, সরকারি দলের নেতাকর্মীরা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে জনরোষের আশঙ্কায় লিফলেট বিতরণে ভিন্ন কৌশল নিয়েছে। এদিকে শুক্রবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংসদ সদস্য র.আ.ম. উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশে উত্তপ্ত ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন ফজলুল হক আমিনী। তিনি উন্নয়নের ধারা ব্যাহত করতে চান এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ব্যাহত করতেই হরতাল ডাকা হয়েছে।

আমিনীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, তার বক্তব্য বিভ্রান্তিমূলক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি পৌর মেয়র হেলাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব.) জহিরুল হক খান বীর প্রতীক, যুগ্ম সম্পাদক তাজ মো. ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, মাহবুবুল বারী মন্টু, মজিবুর রহমান বাবুল, যুবলীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র.আ.ম. উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী বলেন, আমরা জনগণকে হরতাল প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানাব। এদিকে নারীনীতির প্রতিবাদে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন পরিষদের ডাকা আগামীকালের সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে গতকাল দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে কাফনের কাপড় পরে মিছিল করেছে মাদ্রাসা ছাত্ররা। শহরের ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ মিলনায়তন থেকে কয়েক হাজার মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষক মিছিল বের করেন।

মিছিলটি সারা শহর প্রদক্ষিণ শেষে কাউতলী গিয়ে শেষ হয়। এখানে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুফতি মোবারক উল্লাহর সভাপতিত্বে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন মাওলানা মনিরুজ্জামান সিরাজী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা রহমত উল্লাহ, মুফতি জাকারিয়া খান, মুফতি এনামুল হাসান, হাফেজ বোরহান উদ্দিন প্রমুখ। সুত্র: আমার দেশ Click This Link


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.