হরতাল গণতান্ত্রিক অধিকার। হরতাল ডাকা যেমন গণতান্ত্রিক অধিকার, তেমনি হরতাল না মানাও গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু যারা হরতাল ডাকেন, তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও বাস্তবে 'একনায়ক' বা 'স্বৈরাচারী' হিসেবে আচরণ করেন।
আপনি জনগণ। আপনি হরতাল মানতে বাধ্য ।
না মানলে আপনাকে ঘাড় ধরে মানানো হবে। এই ঘাড় ধরে হরতাল মাননোর ভদ্র একটা ইংরেজি নাম আছে - পিকেটিং।
পিকেটিং মানে হল রাস্তায় টায়ার জ্বালানো। রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলা। যানবাহন ভাংচুর, আগুন দেয়া।
দোকানপাট, বাণিজ্য বিপণি ভাংচুর করা এবং আগুন দেয়া। অর্থাৎ মানুষের জানমালের উপর হামলা করাটাকেই ভদ্রভাষায় বলা হয় 'পিকেটিং'
পিকেটিং কি গণতান্ত্রিক অধিকার ? অবশ্যই না। আরেক জনের জানমালের ক্ষতি করা কখনো গণতান্ত্রিক অধিকার হতে পারে না। বরং যাদের জানমালের ক্ষতি হচ্ছে, তাদের জানমাল রক্ষা করাটা হল গণতান্ত্রিক অধিকার। সোজা বাংলায় আমরা বলি, জান বাচানো ফরজ।
সুতরাং আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো হরতাল করেন সমস্যা নাই। কিন্তু পিকেটিং এর নাম করে মানুষের উপর হামলা করবেন, এটা মেনে নেয়া যায় না।
হরতালকে যদি গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে মানেন, তবে হরতালের বিপক্ষে বলাটাও গণতান্ত্রিক অধিকার। হরতাল না পালন করাটাও গণতান্ত্রিক অধিকার। নেতৃবৃন্দ বড়জোর হরতাল ডাকলে পারবেন, জনগণ মানবে কি না সেটা জনগণের ব্যাপার।
জনগণ যদি নেতৃবৃন্দের হরতাল ডাকার কারণটাকে পছন্দ করেন, তবে হরতাল পালন করবেন। আর পছন্দ না করলে হরতাল পালন করবেন না।
কিন্তু বাস্তবে কেবল হরতাল ডাকার চেয়ে জনগণকে ঘাড় ধরে হরতাল পালন করানোর জন্য অস্থির হয়ে ওঠে রাজনৈতিক দলগুলো। জনমনে ভীতি তৈরি জন্য হরতালের আগের রাতেই বিভিন্ন যানবাহনে আগুন লাগানো হয়। এই রকম হামলায় অনেক মানুষ মারাও গেছেন।
এটা চরম অমানবিক কাজ। এই অমানবিক কাজগুলো দিনের পর দিন চলতে পারে না।
কে কোন দিন কোন তাণ্ডবে পড়ে মারা যাবেন, কোন নিশ্চয়তা নেই। যে কোন কেউ যখন তখন এই রকম সহিংসতার শিকার হতে পারেন। একজন নাগরিক হিসেবে আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।
রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়। সুতরাং জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা আছে। তারা যদি জনগণকে টার্গেট করে হামলা চালায়, তখন জনগণের উচিত প্রতিবাদ করা, এটা বন্ধ করার দাবি জানানো।
সহিংসতা, নৈরাজ্য, তাণ্ডব, জানমালের ক্ষতির জন্যই হরতাল এখন মানুষ পছন্দ করে না। দেশের বেশির ভাগ মানুষ হরতালের বিপক্ষে।
তাই সরকারের উচিত আইন করে হরতাল নিষিদ্ধ করা। অনন্তকাল ধরে এই ক্ষতিকর চর্চাটা চলতে পারে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।