আমার ল্যাজটা একদম সোজা পলাশীর প্রন্তরে বিশাল সৈন্য বাহিনী নিয়ে তরুণ সিরাজ পরাজিত হয়েছিল ইংরেজদের একটি ক্ষুদ্র বাহিনীর সাথে। কোনো কোনো ঐতিহাসিক দাবি করেছেন, পলাশীতে প্রকৃত পক্ষে কোনো যুদ্ধ হয়নি। সকালে মীর মদন, মোহন লালের আক্রমণে ইংরেজরা দিশেহারা হয়ে পিছু হটেছিল। কিন্তু মীরজাফরের প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার সময় বিশ্রাম রত সৈন্যদের ওপর আক্রমণ করে সিরাজের বাহিনী যে অংশটি প্রতিরোধ করেছিল তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সিরাজের পতন হয়।
এই ইতিহাসের ওপর সাইদ আহমদ 'শেষ নবাব' নামে একটি নাটক লিখেছেন। যতদূর জানি তিনি দীর্ঘ ১৩ বছর গবেষণা করেছেন এই নাটকটি লেখার জন্য। সাইদ আহমদ নবাবের পরাজয়ের পিছনে শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে নাটকটির কাহিনী বিন্যাস করেছেন। এই বিষটি কতটা সঠিক সেটা জানার জন্য কয়েকটি ইতাসের গ্রন্থ পাঠ করেছি। এসব গ্রন্থেও এ বিষটি প্রমাণ আছে।
সিরাজের নানা আলীবর্দি খা'র সময়েই এসব দুর্নীতিবাজদের উত্থান। তরুণ সিরাজ এদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ছিলেন। আর সিরাজকে ঠেকাতেই ঐসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ইংরেজদের পথ দেখিয়ে নিয়ে আসে।
তারও আগে ১২০৪ সালে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির নেতৃত্বে মাত্র ১৭ জন সৈন্য লক্ষণ সেনের কাছ থেকে বাংলার মসনদ কেড়ে নেয়। বিশ্লেষকরা বলেন, সীমাহীন দুর্নীতির কারণে লক্ষণ সেনের প্রশাসন ও সেনা বাহিনীর নৈতিকতা এতই দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে তারা ন্যূনতম প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম হয়নি।
৭১-এ বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সদ্য স্বাধীন দেশ আকণ্ঠ ডুবে গিয়েছিল দুর্নীতিতে। শেখ মুজিবের কোনো কোনো ভাষণে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে। তার মরমান্তিক মৃত্যুর পিছনেও এই দুর্নীতির ভূমিকা আছে।
আজ যখন দেশ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ঐক্যবদ্ধ তখন যে বিষয়টি বিচার প্রার্থী পক্ষটিকে দুর্বল করে তা হলো দুর্নীতি।
আজ দেখুন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে। আর এ বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য সারা দেশের মানুষ সতঃস্ফূর্ত সমর্থন প্রয়োজন। কিন্তু বিভিন্ন রকম দুর্নীতি-সন্ত্রাস মানুষের সতঃস্ফূর্ত সমর্থন থেকে সরকারকে বঞ্চিত করেছে ।
আওয়ামী লীগ দলটির জন ভিত্তি আছে। নির্বাচনে জিতে তারা সরকার গঠন করেছে।
আবার শাহবাগের আন্দোলন তার সীমাবদ্ধতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। এই সীমাব্ধতা আর কিছুই না সরকারের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে দুর্নীতি আর সন্ত্রাস। এই দুইটা বিষয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে যুদ্ধাপরাধের বিচারের কারণে দেশে এতটা সহিংতা করার সুযোগ পেত না জামায়াত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।