Set sail, ye hearts~ into the sea of hope..
যখন ষষ্ঠ উইকেটের পতন হলো আমি টিভিসেটের সামনে থেকে উঠে যাওয়ার সময় খেয়াল করলাম স্টেডিয়ামের সিট খালি হতে শুরু করেছে। অনেকেই হয়তো সে সময় চলে গেছেন, আমিও তারপর অনেক্ষন খেলা দেখিনি। কারন আর কোনো ব্যাটসম্যান তো নেই, বল হাতে আছে প্রচুর, কিন্তু কে করবে এই ৭০-৮০ রান? বেশ কিছুক্ষন পর যখন আবার টিভির সামনে এসেছি তখন ৫০ রানের মত বাকী, হাতে ২ উইকেট। ক্রিজে আছে মাহমুদুল্লাহ আর শফিউল।
কিন্তু তারপর এটা কি হলো ! যে ছেলেটা আগে দশের মুখ দেখেনি ব্যাট হাতে, কি সহজ ভঙ্গিমায় ফট করে ফিরিঙ্গি বোলারের মুখের উপর ছয় মেরে বসলো ! আমি টিভির সামনে বসেই অনুভব করেছি, হতাশ হয়ে অথবা নিরাপদে বাড়ী ফেরার তাগিদে যারা ঐ সময় স্টেডিয়াম থেকে বের হয়ে গেছেন, তারা অবশ্যই আফসোস করবেন দর্শক সারিতে বসে এই ছয়টা দেখতে না পারার জন্যে।
এই ছয়ের পরই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েছে ইংল্যান্ড, এই ছয় মেরেই শফিউল আমাদের চমকে দিয়েছে, আমাদের জানান দিয়েছে বাঙ্গালী রক্তের শেষ বিন্দুটিও প্রতিপক্ষের শেষ দেখার প্রত্যয়ে ক্ষরিত হয়। লোয়ার অর্ডারের এই জুটি যেভাবে ধীরস্থির ভাবে চাপ মোকাবেলা করেছে আর শেষ মুহুর্তে সেই চাপ ইংল্যান্ডের ঘাড়ে তুলে দিয়ে ম্যাচ পকেটে পুরে নিয়েছে তা আসলেই দেখার মতো ছিলো। শুধু বাংলাদেশীরা নয়, আমার মনে হয় প্রত্যেক ক্রিকেট বোদ্ধাই খেলাটি সমান ভাবে উপভোগ করেছেন।
একটা কথা এই প্রসঙ্গে বলা জরুরী সেটা হলো, আমাদের দলটি বর্তমানে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো খেলছে, তাই হঠাত দুই-একটি ম্যাচ খারাপ খেললেই জাত গেলো রব তোলা সমর্থক হিসেবে এখন আর শোভা পায় না আমাদের। খেলোয়াড়দের সাথে সাথে সমর্থকদেরও এই বোধোদয়টুকু হওয়া জরুরী।
ওয়েস্ট ইন্ডিস ম্যাচের পর যারা দলের বিরুদ্ধে, খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে বিষেদগার করেছেন, বিশৃঙ্খলতাকে উসকে দিয়েছেন, তারা শুধরে যাবেন আজকের এই বিজয়ের রাতে- এই আশাটুকু আমরা করতেই পারি। শেষ করছি কিছুক্ষন আগে খেলা দেখতে দেখতে লেখা একটা লিরিকের শুরুর কয়েকটা লাইন দিয়ে,
আগনিত হাত তুলে, জয়ের আকাঙ্খা-
শিরায় শিরায় জাগে, চেতনায় প্রত্যয়
প্রার্থনা-হাত মেলে, জনক অপেক্ষায়
ব্যকুল জননী, অবনত সিজদায়
রনাঙ্গন, মানে একাত্তুরের রাত~
শেষের সকাল মানে, ষোলই ডিসেম্বর !
বাংলার ছেলে জানি ছিনিয়ে আনতে জয়-
মুষ্ঠি বদ্ধ হাত, আরাধ্য জয়ের নেশায়…
(উইন্ডচাইম ব্লগ থেকে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।