কথায় আছে না- কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না! এই কথাটির মতনই মনে অইছে আমাগো মান্যগন্য লোক জনাব সাংসদ আমির হোসেন আমুর সংবর্ধনার খবরডা পইড়া। যহন আমি খবরডা পড়তাছিলাম-
‘দারুল ইহসানের ঝালকাঠি শাখা
সাংসদকে সংবর্ধনা দিয়ে অবৈধ শাখা রক্ষার চেষ্টা!’( দৈনিক প্রথম আলো )
এর পেছনের এবং সামনের খবর অইলো গিয়া আরও চমৎকার! সাংসদ নিজ মুখে কইছেন- হ যামু এবং উনি গিয়াছেনও। জেলা প্রশাসক কইলো- হেরা অবৈধ, আমি যামু না আমারে ক্রেষ্ট দিলেও মানে হেরে বিশেষ অতিথি করবার চাইছিল। পত্রিকাওয়ালারা হেইডা লইয়া রিপোর্ট করলো- হেরা অবৈধ। সার্টিফিকেট বেচার ব্যাবসা করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা।
জেলার আইনজীবিদের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে, হুকুম পালনকারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাত দিনের নোটিশ দিছেন হেগোরে কাগজপত্র দেহানোর লাইগা। এত্ত কিছু ঘইটা যাইবার পরও- সাংসদের ক্রেষ্ট পাওনের শখ পূরন করন লাগবোই! সাংসদ হইছেন এতেই মনে হয় শোকর নাই এই রাজনৈতিক নেতার। উনি আবার সরকারী সংসদ সদস্য!
আমাগো শিক্ষার ক্ষতিতে অসামান্য অবদান স্বরুপ, দুই ভরি স্বর্নসমৃদ্ধ নৌকা দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় এর ঝালকাঠির অবৈধ শাখা কতৃক সাংসদ আমু’কে প্রদান।
এত কিছু লোকজন জানে এই বিষয়ডার উপর। তারপরও সাংসদের যাওনই লাগবো? এই প্রশ্নডার উত্তর যহন- হ্যা।
তহন আর কি ভালা লাগে নিজের কাছেই। তার মানে অইলো গিয়া- আমাগো জনপ্রতিনিধি ইংরাজিতে কয়- ম্যানেজ। আর বাংলায় কয় অইলো গিয়া- ব্যাবস্থা। হেই ব্যাবস্থাই করতে পারছে উনারে অবৈধ লোকজনেরা। তয় আর চিন্তা কি? ঝালকাঠির সব অবৈধ ব্যাবসা যে বৈধ করন যায় অথবা যাইবো।
তা বুঝবার লাইগা এই একটা ঘটনাই কি সহি না! আজায়গায় নিজের নাম ফুডানোর লাইগা সাংসদের মর্জির বাহার দেইখা আমার ১/১১ এর কথাডা চোখে ভাইসা উডে। আহা! কি ভালা দিনগুলান আছিলো। তার মানে হেগো রহম মাইনষের আসলে কোণ কালেই শিক্ষা হইবো না! নাইলে কি আর এমনডা করে! আমরাও কি বোকার বোকা দেহেন। আমরাই এই সাংসদরেরি সাংসদ বানাইছি। কি জানি আবারো বানাইবারও পারি!
সাংসদসাহেব তো ম্যানেজ হইয়া লাভ আর লোকসান হেয় হিসাব করবো।
আমাগো কি হইবো হেই চিন্তা যহন করি। তহন একটা লাইন খালি ভাইসা উঠলো এই আমজনতার দুই চক্ষুতে- ব্যাটা নিজের চরকায় তৈল দে। এই কথাডা অবশ্য কইবার পারেন একই লগে তিনডা পক্ষ। সে বিষয়ে আসতাছি এহনই।
যা অবস্থা দেখতেয়াছি- কয়দিন পর পাড়ার অশিক্ষিত ধোপাও টাকার জোরে একখান বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট পাইবো।
এর চেয়ে আর বড় উন্নয়ন কি হইবার পারে আমাগো এই দেশটার। সুশিক্ষিত পাইতেয়াছি। হাজার হইলেও- ‘পেয়াজ কি ভদ্রলোকেরা খায়’ টাইপের রাজনীতিবিদের দেশ বইলাই কি? আমরা হইয়া আছি এই রহম উন্নয়নশীল। তয় ভাই আর কেউ চাইলেও আমি চাই না এই উন্নয়ন।
এ তো গেলো সাংসদের কথা।
এর চেয়েও বড় কথাডা হইলো গিয়া- একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এর শাখা এরকম অবৈধ ব্যাবসা করতেয়াছে। তা জাইনাও এর মুল শাখা অথবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও কিছুই কয় না। তার মানে হেরাও জানে তাগো শাখা অবৈধ বানিজ্য করতেয়াছে! এর মানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও ম্যানেজ! তয় আর চিল্লাইয়া শুধু রাজনীতিবিদ লোকটারে দোষ দিয়া লাভ কি। দোষ তো ঐ বিশ্ববিদ্যালয় এর পরিচালনা কমিটিরও। তার মানে সর্ষেতেই ভুত।
এর ভুত তাড়ানোর আসলে কি কোণ উপায় আছে কি না? তা কি আমনেগো জানার সুযোগ আছে মাননীয় আমার কাতারের আমজনতাগো! নাই একদমেই নাই। মনের মধ্যে আর কোণ আশাই রইল না মনে অয়। তলে তলে সবই হয়। এর লাইগা- উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেটও!
এহনই দমে যায়েন না আমজনতা। আমনেগো লাইগা আরেকটু আশা মনে অয় আছে।
হেইডা অইলো গিয়া- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। হেরা যদি কিছু করবার পারে এই অবৈধ বানিজ্য বন্ধ করবার লাইগ্যা। হেইখানেও মনে অয় সমস্যা। নাইলে কি আর এই বানিজ্য চলে। এই সহজ কথাডা বুঝবার লাইগা এহনও বইসা আছেন জনতাবৃন্দ।
আমার কথা হইলো গিয়া- চলেন আমরা নাকে তেল দিয়া ঘুমাই। দেশ তো চালাইবো আর দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম তৈরী করবো যারা। হেরা সব একইকাতারের লোকজন ঠিক একখান রসুনের কোয়ার মতো। তয় রসুনের কোয়া আমনে-আমি হাত দিয়াই আলাদা করবার পারি। কিন্তু এই যে তিন পক্ষ-
১।
দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর অবৈধ শাখা।
২। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন
৩। মাননীয় সাংসদ
হেগোরে আলাদা করবো কেডায়? হেইয়ার লাইগা আমরা হাত-পা গুটাইয়া বইয়া থাকি। হাজার হইলেও শিক্ষিত লোকজন আর সুশিল তো হেরাই।
তয় আর জনগন চিল্লাইয়া লাভ কি? তয় আর এই অবৈধ মানুষ মানে শিক্কিত বানানোর মেশিন লইয়া কি করন। ছাড়া গরুর মতন চলুক এই সব।
হেই গরুর গাড়িতে চইরা আমরা তো আর বিয়া করবার পারুম না। তয় যারা অশিক্ষিত আছি আমরা। সবাই আহেন ট্যাহা-পয়সা জোগার কইরা হইয়া যাই-শিক্ষিত।
টাকা দিলেই তো সনদ। হাজার হইলেও আমনের বই কেনোনের খরচটা তো বাচবো। সাথে মেধাবী না হইলেও চলবো। আহা! কি মজা! মজাই মজা!
আমার আর কইতেই ভালা লাগে না। এই রহম সন্মিলিত জালিয়াতি দেখলে।
আমনেগো ভালা লাগে কি না। একটু জানতে ইচ্ছা হয়। হাজার হইলেও একই দেশের লোকজনই তো আমরা। চলেন তাইলে জোটবদ্ধ হই আর গলাফাটাইয়া বলতেই থাকি-
আমার ভাই তোমার ভাই
আমু ভাই আমি নাই।
কে বলেরে ব্যাবসা নাই
ব্যাবসা সারা বাংলায়।
দারুল ইহসান এগিয়ে চলো
অবৈধরা আছি তোমার সাথে।
কে বলেরে বিশ্ববিদ্যালয় নাই
বিশ্ববিদ্যালয় সারা বাংলায়………
শেষ কথাডা না কইলেই না- এই তিনপক্ষের উপরের সংশ্লিষ্ট সরকারী লোকজন কি বইসা বইসা নাকে তেল দিয়া ঘুমায়? অবৈধ অবৈধই। তয় কেন আর বুলডোজার চালানো হইবো না হেগো উপরে? এত কিছু দেখবার পরও! এই প্রশ্নখান খালি করবার মনে চায়। কারে করমু, হেইয়াই তো এহনও পরিস্কার করবার পারলাম না।
অশিক্ষিত জনতা কি আর শিক্ষিত চোরেগো লগে পারে।
হাজার হইলেও শিক্ষিত আর অশিক্ষিত এর মধ্যে পার্থ্যক্য আছে না!
আমার কথাগুলান যে ভুল হইতেয়াছে- এইডা পরমান করবো কেডায় ! ?
এইরহম ঘটনা আরও আছে। হেইয়ার অবস্থা কি? ভাবলেই কান্দন আহে ক্ষোভে!
সরকার সাধু সাবধান!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।