আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্যায়কে প্রশ্রয় নয় সরাসরি না বলুন....হোক তিনি প্রধানমন্ত্রী



আমাদের এই দেশ বিশাল জনগোষ্ঠীর দেশ। জনবল হিসাবে দেশের পরিধি অনেক ছোট। এদেশে বর্তমানে যানবাহনের সংখ্যাও অতি দ্রুত গতিতে বেড়েই চলেছে। তাই প্রতিটি মুহুর্তে আমাদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে যানজটের। এর অন্যতম কারণ হল ট্রাফিক সিষ্টেম।

দেশে এমন কিছু কিছু রাস্তা আছে যেখানে একটি প্রাইভটে কার ঢুকলে আর অন্য কোন গাড়ী যাওয়ার রাস্তাই থাকেনা, সেখানে এই ট্রাফিক ভাইয়েরা ১০/২০ টাকার বিনিময়ে ট্রাকও ছেড়ে অনায়াসে। তাতে আমাদের মত সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে তো বাড়–ক এতে তাদের কি? তাদের পকেট তো গরম হচ্ছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে গেলে এখনো চোখে পড়বে ট্রাফিক পুলিশ টাই দাঁড়িয়ে আছে আর তাদেরই সামনে এলোপাতাড়িভাবে চলছে যানগুলো, এতে তাদের কোন নজরদারি নেই। কিন্তু এই গাড়ীগুলোর মাঝে হঠাৎ যদি কোন গাড়ী নম্বর প্লেট কিংবা গ্রামের গাড়ী শহরে ঢুকেছে এমনটি চোখে পড়ে তাহলে ব্যস ঐ যানগুলোর পিছনে লেগেই থাকে যতক্ষণ তা তারা ১০/২০ টাকা ট্রাফিক ভাইদে হাতের ভিতর গুঁজে না দিচ্ছে। গতকাল কর্ণফুলী নদীর উপারে বাংলাদেশের একমাত্র মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি “শেখ মুজিব মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ভিত্তিফলক উম্মোচন করতে আসেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

তার সাথে ছিল প্রায় ৩০/৪০টির মতো একটি বিশাল গাড়ী বহর। আমাদের প্রধানমন্ত্রী আসার ২০ মিনিট আগে থেকেই সকল রাস্তা ফাঁকা করে দেওয়া হয়। কোন মানুষ রাস্তার এপার থেকে ওপারে পর্যন্ত যেতে পারেনি। এমনকি আমিও প্রায় ১ ঘন্টা ঐ লাইনেই দাড়িয়ে ছিলাম। প্রধানমন্ত্রি যে কাজে এসেছেন ওখানে পৌঁছে যথারীতি কিছুক্ষণ বক্তব্য তারপর ফলক উম্মোচন তারপর সভা ত্যাগ।

এইকাজগুলো শেষ হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী তার গাড়ীবহর নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। এই উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে আসা এবং যাওয়ার মাঝে প্রায় সোয় ২ ঘন্টা সময় লেগেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। এই সোয় ২ ঘন্টা সকল রাস্তা বন্ধ। কোন গাড়ী তো দূরের কথা কোন মানুষও হেটে রাস্তা পারাপার করতে পারেনি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী যেখানে যাচ্ছেন বা যাবেন সেখানে তাকে যথা সময়ে পৌঁছতে হবে আর আমরা যারা সাধারণ পাবলিক আমাদের সময়ের কোন মূল্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নাই।

সেটাই দেখলাম গতকাল। প্রধানমন্ত্রী আসার কারণে গতকাল চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় সৃষ্টি হয় বিশাল যানজটের। কিন্তু ট্রাফিক এবং পুলিশ ভাইয়েরা তা প্রধানমন্ত্রীর চোখেই পড়তে দেয়নি। কারণ উনি যে রাস্তা দিয়ে এসেছেন তার তো সোয়া ২ ঘন্টা ধরে ফাঁকা করে রেখেছেন তারা। আমার প্রশ্ন হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী তো একজন উনার জন্য আমরা ১৬ কোটি মানুষকে কেন কষ্ট পেতে হবে।

আমি গতকাল একটি জরুরী কাজে যাচ্ছিলাম, কিন্তু তা ঠিকমত পৌঁছতে না পারায় কাজটা হাতছাড়া হয়ে যায়। আমার মত আরো অনেকে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়েছিল বিভিন্ন কাজে যাওয়ার আশায়। কিন্ত আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মনে করলেন সবাই উনাকে অভিনন্দন জানানোর জন্য দাঁড়িয়েছে। এটাই কি ডিজিটাল বাংলাদেশের নমুনা। যদি তাই হয় তাহলে আমরা চাইনা এ রকম ডিজিটাল বাংলাদেশ।

আমাদের মন্ত্রী এম পি দের বিলাসিতার কারণে আমরা সাধারণ জনগণ সর্বদা ভোগান্তির শিকার হই এটা আমরা কখনোই আশা করি না। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। রুখে দাঁড়াতে হবে এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আসুন আমরা অন্যায়কে মাদকের মত না বলি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.