ঈশ্বরদীর বাঁশেরবাদা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলামকে যৌন হয়রানি মামলায় অভিযুক্ত করে কারাদণ্ড দেওয়ার আসল ঘটনা ফাঁস হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, ওই প্রধান শিক্ষককে ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো যৌন হয়রানি মামলায় অভিযুক্ত করে নিজেই প্রধান শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন একই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম।
মঙ্গলবার ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় গা ঢাকা দিয়েছেন রফিকুল ইসলাম।
স্কুলের শিক্ষকরা বাংলানিউজকে জানান, ইতোপূর্বে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় রায় শামসুল ইসলামের পক্ষে যায়।
বাঁশেরবাদা গ্রামের বাসিন্দা ও অভিভাবকরা জানান, প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলামের সততা ও যোগ্যতার কারণে রফিকুল ইসলামসহ ওই স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে যখন কোনভাবেই তার বিরুদ্ধে সুবিধা করতে পারছিলেন না তখন শেষ পর্যন্ত এ যৌন হয়রানির ঘৃণ্য পথ বেছে নেয় তারা।
স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা উম্মে হাবিবা সুলতানা বাংলানিউজকে জানান, প্রধান শিক্ষক কখনো কোনো প্রকার অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন না, এটাই ছিল তার অপরাধ।
নিরপরাধ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে তার মুক্তির দাবি জানিয়েছে। প্রধান শিক্ষককে মুক্তি না দিলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ রাখবে বলেও ঘোষণা দেয় তারা।
এদিকে, অভিযোগকারী ওই স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীর খোঁজে বাঁশেরবাদা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে সে বাবার বাড়ি পাবনা চলে গেছে।
ওই ছাত্রীর নানা আলী আকবর বাংলানিউজকে জানান, সে তার কাছে (নানা বাড়িতে) থেকে পড়া লেখা করতো।
মঙ্গলবার ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার জন্য কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও প্রতি বারই তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের একজন শিক্ষক জানান, নিজে প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে বর্তমান প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলামকে সরানোর ষড়যন্ত্র করে আসছেন।
এদিকে, প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলামকে সাজানো যৌন হয়রানি মামলায় অভিযুক্ত করে কারাদণ্ড দেওয়ার প্রতিবাদে এবং তার মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকালে ঈশ্বরদী ও বাঁশেরবাদা এলাকায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ-সমাবেশ করে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঈশ্বরদী উপজেলা শাখা।
সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ আইনুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক, মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আফরোজা বেগম, দাশুড়িয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল কাদের, বাঁশেরবাদা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শামসুল হক, কলেজ টিচার্স ফোরামের সভাপতি প্রভাষক আতাউল হক নান্ন, সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবীর লিটন, শিক্ষিকা উম্মে হাবিবা সুলতানা প্রমুখ।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলামকে মুক্তি না দিলে ঈশ্বরদীর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও সব শিক্ষক একযোগে পদত্যাগ করবেন বলে হুমকি দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত রোববার বাঁশেরবাদা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলামকে সাজানো যৌন হয়রানি মামলায় অভিযুক্ত করে ৪ মাসের কারাদ দণ্ডিত করে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।