আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শার্টের চেয়ে গ্যাঞ্জি লম্বা !!!

অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছে করে কিন্তু গুছিয়ে লিখতে পারি না ...

কিভাবে শুরু করব বুঝতে পারছি না! কিন্তু আমাকে যে আজ কিছু লিখতেই হবে। বলতে হবে এমন কিছু কথা যা এতদিন লোক-লজ্জার ভয়ে কাউকেই জানাতে পারিনি। আজ তা জানাবই। জানাব বাংলাদেশ প্রতিদিনের সব পাঠককে। কারও কথা বিশ্বাস না করে, না শুনে বিয়ে করেছিলাম আমাদের প্রতিবেশী এক যুবককে।

সে যে একজন মাদকাশক্ত তা আমার জানা ছিল না। মিষ্টি কথায় বিয়ে করেছিলাম তাকে। হয়ে উঠেছিলাম বেপরোয়া। নিজের বাবা-মাকে তুচ্ছজ্ঞান করে চলে গিয়েছিলাম তাদের বাসায়। একবারও ভেবে দেখিনি একই পাড়ায় থেকে আমার মা-বাবা কিভাবে লোকজনের কাছে মুখ দেখাবেন।

কিছুদিন পর অবাক হয়ে লক্ষ করলাম বাসার সব কাজ আমাকেই করতে হচ্ছে। এত অপরাধের পরও আমার মা-বাবা আমার পড়াশোনার খরচ বন্ধ করে দেননি। যদি কোনোদিন ভার্সিটি থেকে আসতে দেরি হতো তবে কপালে জুটত আমার স্বামী নামক পশুটির পিটুনি আর ননদ, শাশুড়ির গালমন্দ। একদিন আমি ক্যাম্পাস থেকে এসে প্রচণ্ড ক্ষুধায় রাতের অবশিষ্ট ভাত খেয়েছিলাম। তা দেখে আমার ননদ ফোন করে তার প্রবাসী ভাইবোনদের ফোন করে বলেছিল, 'ভাব দেখে মনে হচ্ছে ভাতের চাল ওর বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিল'।

এ কথা শোনার পর কতদিন আমি না খেয়ে থেকেছি। আরেকদিন আমার মেজে ননদ ফোন করে বলেছিল, 'তোমার পড়াশোনা করার দরকার কি, আমার ভাইকে আগে ভালো কর তারপর পড়ালেখা কর, আর জান তো শার্টের চেয়ে গেঞ্জি বেশি লম্বা হতে নেই'। মাজে মাঝেই আমার অতি ভালোবাসার পশুরূপি মানুষটি আমাকে পেটাত। একদিন ওরা সবাই মিলে রুম আটকিয়ে আমার হাত-পা বেঁধে আমাকে পেটাতে থাকে। সে সময় দেবদূতের মতো হাজির হয়েছিল তারই এক খালাতো বোন আর বোনের জামাই।

তারা না থাকলে সেদিনই হয়তো ছিল আমার জীবনের শেষ দিন। সেদিনই ছিল পৃথিবীতে আমার শেষ দিন। এরপর চলে আসি বাবা-মার কাছে। ইচ্ছা করলে সবগুলোকে জেলে পাঠাতে পারতাম কিন্তু পাঠাইনি। দয়া-ভিক্ষা দিয়েছি তাদের।

আজ আমি ভালো আছি, পড়ালেখা শেষ করে একটা চাকরি করছি। থেমে যাইনি, দেখিয়ে দিয়েছি শার্টের চেয়ে গেঞ্জি কত লম্বা হতে পারে!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।