আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্লগ তথা সমাজ থেকে মাকে নিয়ে গালাগাল ব্যাপারটা কি উঠিয়ে দেয়া যায় না?

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!

মনে পড়ে খুব ছোটবেলায় যখনই কোনো মুখ খারাপ করতাম তখন দেখতাম আশেপাশে কোনো মুরুব্বী আছে কিনা! যদি বাসায় খবর যায় তাহলে রামধোলাই মাস্ট! এখনো ভাবি যদি মুখটা খারাপ করি তাহলে আশে পাশে কেউ আছে কিনা! আমার একটা বোন আছে, যদি আমার মুখ খারাপ করা কথাটা যদি আমি আমার বোনের সামনে দেই তাহলে সে কি মনে করবে? ব্লগে আমার নাম উদাসী স্বপ্ন, আরেকটা নিক ব্লাডি ডে। হয়তো একদিন আমি বিয়ে শাদী করবো, আমার সন্তান হবে। সেও হয়তো ব্লগীং করতে পারে নাও করতে পারে। যদি সে করে তাহলে সে নিশ্চয়ই আমার পোস্টগুলো পড়বে।

সেখানে যদি দেখা যায় আমি কাউকে ঝাড়ি দেবার সময় তার মা বাপ তুলে গালি দিয়েছি তাহলে সে মনে করবে এটা বৈধ। দেখা যাবে সেও সেটা শুরু করবে! আমরা মনে করি কঠিন শাসন এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে মানুষকে তার পাপ থেকে দূরে রাখবে। এটা আসলে ভুল কথা। এটা আমরা স হজেই বুঝে গেছি। কারন অপরাধপ্রবনতায় কোনো পাদ্রী বা হুজুরও তুলসীপাতা নন।

যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে চান তাদের হাতটাও পরিস্কার না আজ। সবাই কলুষিত! ভাবতে অবাক লাগে এই সমাজটাকে কলুষিত করবার জন্য আমিও কন্ট্রিবিউট করছি। আবার এটাও চাই আমার ছেলেটা বা মেয়েটা যেনো মানুষের মতো মানুষ হয়। কিন্তু কিভাবে সম্ভব, যেখানে আমি কলুষিতকারী কালপ্রিট সেখানে আমি আমার সন্তানকে কিভাবে মানুষ করতে পারবো? সমাজের শিক্ষিত মানুষের হার বাড়ছে, শিক্ষার হারও বাড়ছে, দারিদ্রতাও বাড়ছে। সমস্যাও বাড়ছে।

পেটের তাড়নায় তাই দেখা যায় মহাখালী টু গাবতলী অথবা মহাখালী টু এক নম্বর এ যে টেম্পুগুলো যায় তার অধিকাংশ কন্টাক্টর হলো ছোট ছোট ছেলেরা। ভাড়া যেদিন হঠাৎ বাড়ে সেদিন ১০ টাকার জায়গায় ১২ টাকা উঠাতে এদেরকে কি পরিমান গালাগালি শুনতে হয় কখনো ভেবে দেখেছেন ? এই পরিমান গালি কেউ একজনমে আমরা খাইনি, কিন্তু আমরা তাকে অবলীলায় গালাগালি দিয়ে যাচ্ছি। ও কিন্তু ইচ্ছা করেই বাড়ায়নি, কেনো বেড়েছে সেটাও কিন্তু জানি, কে বাড়িয়েছে সেটাও জানি। আর গালাগালি দিচ্ছে কারা? আমার মতো একজন বিএস সি ইন্জ্ঞিনিয়ার অথবা বিবিএ এমবিএ অথবা সি এ শেষ করা একজন পেশাদার চাকুরীজীবি। একটু চোখটা বন্ধ করি, ঐ ছেলেটার জায়গায় যদি নিজের ছেলেটা অথবা ছোট ভাইটাকে বসিয়ে দেই তাহলে কি রকম লাগবে? সমাজে অনেক সমস্যা তেমনি ব্লগেও অনেক সমস্যা।

নাস্তিক ব্লগার আসিফের সমস্যা ধর্ম নিয়ে তাই সে ধর্মকে যা ইচ্ছা তাই বলে, তার লিমিটও সে অতিক্রম করে। এখন কেউ যদি তার মাকে এই অপরাধে কেউ গালি দেয় সেটা কেমন হবে? যতদূর জানি আসিফের মা একজন ধর্মপ্রান মহিলা ছিলেন, যিনি এখন স্বর্গবাসী। আসিফের অপরাধে তার মাকে গালাগালি দেয়াটা কি ঠিক? আমি অবশ্য জানি না ব্লগার আসিফের মাকে কেউ গালি দিয়েছে কিনা, এটা একটা উদাহরন। মাফ চাই যদি ভুল করে থাকি। আবার অনেকেই আছেন ইসলামের একটা ব্যাপার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা শুরু করে দেখা গেলো সেখানে তেমন ভালো কেউ যুক্তিবান মানুষ না পেয়ে সুযোগ পেয়ে মহানবী (সাঃ)কে নিয়ে গালাগালি করতে লাগলো।

তখন কেমন লাগে? নিশ্চয়ই ভালো লাগবে না! আমরা যুক্তি চাই, পাল্টা যুক্তি চাই! আমরা মেধা খাটাতে চাই, কিন্তু গালাগালি কেন? ধরে নিলাম একটা মানুষ খুব বড় শয়তান। কিন্তু সে বা আমরা এটাও জানি তার শয়তান হবার পিছনে তার বাবা বা মায়ের কোনো হাত নেই, অথবা হাত নেই তার ভাই বা বোনের। তাহলে তার পরিবারকে সম্পৃক্ত করে গালাগালি করে কেন? শয়তানকে তার ভাষায় শাস্তি দেয়া যায়, কিন্তু গালাগালি দিয়ে কি লাভ? সমাজে গালাগালি খুব প্রচন্ড পর্যায়ে বলেই আজকে ব্লগে তার প্রাদুর্ভাব। গালাগালি আমরা খুব স হজেই করি কিন্তু চিন্তা করি না আমরা আমাদের নৈতিকতা বোধকে কিভাবে প্রতিনিয়ত ধ্বংস করছি। লোকাল বাসে যখন একটাকার জন্য ঢাকায় আসা নতুন একটা কিশোর ছেলেকে যে পরিমান খারাপ কথা আর নির্যাতন সইতে হয়, তার পরে কি আমরা তার থেকে ঠিক সমপরিমান খারাপ ব্যাব হার পাবার জন্য প্রস্তুত? আকাশে থুথু ছুড়লে নিজের উপরে পড়বে একদিন, এটা আমাদের বোঝা উচিত! দয়া করে ব্লগে এবং সমাজে গালাগালি করাটা বন্ধ করুন! আপনার আশে পাশে ১০ জন দেয় তাই বলে আপনাকে দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই।

আপনার মানবিকতার গুন যদি আপনি অনুশীলন করতে থাকেন তাহলে অবশ্যই দেখবেন কালকে আপনাকে অনুসরন করছে আরও মানুষ, যদি তার সংখ্যা মাত্র ১ জনও হয় তাহলেও আপনি জিতে গেছেন! গত বছর মা দিবসে চেষ্টা করেছিলাম একটা কিছু করতে, অনেকেই চেষ্টা করেছিলেন, আমি চাই চেষ্টাটা জাড়ি থাকুক! আস্তিক হোন অথবা নাস্তিক, বাম হোন অথবা ডান, আপনি যেই হোন: নিজের বিবেক কে প্রশ্ন করুন, গালাগালিটা কতটুকু ঠিক?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.