আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লুসিড ড্রিমিং: এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা


কখনো কি আপনার এমন হয়েছে যে আপনি স্বপ্নের মাঝেই বুঝে ফেললেন, স্বপ্ন দেখছেন? সাধারণত এই উপলব্ধি আসার পড়েই আমরা ঘুম থেকে জেগে উঠি, অথবা আমাদের স্বপ্নটির ইতি ঘটে। কিন্তু পৃথিবীতে অনেকেই আছেন, যারা স্বপ্ন দেখছেন এই উপলব্ধি আসার পরেও স্বপ্ন দেখা চালিয়ে যেতে পেরেছেন বা পারেন। আর সচেতন অবস্থায় স্বপ্নজগত হয়ে ওঠে আরো মোহনীয়। আর এই 'সচেতন স্বপ্ন'কেই ইংরেজীতে বলে লুসিড ড্রিমিং। মনোবিদদের কাছে লুসিড ড্রিমিং একটি রহস্যময় কিন্তু লোভনীয় গবেষণার বিষয়বস্তু।

প্রায় সকলেই জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে লুসিড ড্রিমিং অনুভব করলেও ঘটনাটি ঘটার ফ্রিকোয়েন্সি অনেক কম। তবে কিছু লোক রয়েছে, যারা অন্যদের তুলনায় বেশ ঘনঘন লুসিড ড্রিমিং করে থাকেন। সাধারণ স্বপ্নের সাথে লুসিড ড্রিমিং এর বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে: ১. সাধারণ স্বপ্ন ঘুম থেকে ওঠার পর আমরা সামান্যই মনে রাখতে পারি। বেশিরভাগ স্বপ্ন আমরা দেখেছি বলেই মনে করতে পারি না। কোন কোন স্বপ্ন আমরা দেখেছি বলে মনে করতে পারি, কিন্তু বিষয়বস্তু কি ছিল তা মনে করতে পারি না, আবার যেগুলোর বিষয়বস্তু মনে থাকে সেগুলোর ডিটেইলস আমাদের মনে থাকে না।

লুসিড ড্রিমিং এর সময় ড্রিম স্টেটেও যেহেতু আমাদের মন সচেতন থাকে তাই বাস্তব ঘটনা যতটা পরিস্কারভাবে আমাদের মনে থাকে, লুসিড ড্রিমও সেরকমই মনে থাকে। মনের কাছে লুসিড ড্রিম আর বাস্তব ঘটনার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ২. সাধারণ স্বপ্ন যেহেতু মনের অবচেতন অংশের নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেহেতু তাতে আমাদের ক্রিয়াকর্ম আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। কিন্তু লুসিড ড্রিমে আমরা আমাদের ক্রিয়াকর্ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। অনেকে আবার পারিপার্শ্বিক অবস্থাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

অনেকেই দাবি করেন, তারা লুসিড ড্রিমের ক্ষেত্রে অতিমানবীয় ক্ষমতা, যেমন উড়তে পারা, টেলিকাইনেসিস এগুলোও উপভোগ করতে পারেন। অনেকে আবার সৃজনশীল কার্যক্রম যেমন সাহিত্য রচনা, সঙ্গীত চর্চা/ মিউজিক কম্পোজিশনের মত কাজও স্বপ্নের মাঝে করতে পারেন বলে দাবী করেন। ফ্রিকোয়েন্ট লুসিড ড্রিমারদের কিছু সমস্যারও সম্মুখীন হতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা বাস্তবতা নিয়ে কনফিউশনে ভোগেন। বাস্তবতা বুঝতে তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন।

যেমন, দু-তিনবার ঘড়ি দেখা, কোন একটি মাঝারি সাইজের লেখা কয়েকবার পড়া। স্বপ্ন হলে সাধারণত ঘড়ির সময় কোন নিয়ম না মেনেই পরিবর্তিত হয়, লেখা কোন একটি প্যারাগ্রাফ দুবার পড়ার মাঝেই পরিবর্তিত হয়ে যায়। রিয়েলিটি বুঝতে না পারলে কী কী সমস্যা হতে পারে তার কয়েকটি নমুনা দেখুন: ১. ধরুন আপনি লুসিড ড্রিমিং করছেন। সবকিছু বাস্তব মনে হচ্ছে। কিন্তু এতটাই বিভোর হয়ে গেলেন যে, ভুলে গেলেন এটা স্বপ্ন।

আর সে অবস্থাতেই ওয়াশরুম ব্যাবহার করতে চলে গেলেন। ২. ধরুন, আপনি বাস্তবে রয়েছেন। কিন্তু যেহেতু আপনি লুসিড ড্রিমিং করতে অভ্যস্ত, পার্থক্য বুঝতে না পেরে আপনার মনে হলো আপনি স্বপ্ন দেখছেন। আর এটাই সুযোগ স্ত্রীর সাথে কী করে তর্কে জিততে হয় তা প্রাকটিস করার। আর এটা ভেবে শুরু করে দিলেন আপনার স্বপ্নের স্ত্রীর (আসলে বাস্তব স্ত্রী) সাথে তর্কযুদ্ধ! [হলিউডের সাম্প্রতিক ইনসেপশন মুভিটি লুসিড ড্রিম এবং ড্রিম কন্ট্রোল এই দুই কনসেপ্টের ওপর নির্মিত]
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।