চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি।
আজকের ইত্তেফাকের লিংক:
Click This Link
প্রাঞ্জল সেলিম
স্পেনের ছোট্ট সেই করডোভা শহরে জন্ম ছেলেটার, নাম জ্যাকুইন কোর্তেজ। সে তার বাবা-মায়ের সাথেই থাকতো স্পেনে। পরে ১৯৮১ সালের দিকে সপরিবারে তারা মাদ্রিদে চলে আসেন। ছোট্ট বেলা থেকেই কোর্তেজ নাচতে খুব ভালবাসতেন।
মাদ্রিদে আসার পর তিনি ফরমাল ড্যানসিং লেসন-এ ভর্তি হন এবং খুব মনোযোগের সাথে পড়াশোনা শুরু করেন। এর তিন বছর পরে, ১৯৮৪ সালে স্পেনের প্রেস্টিজিয়াস ন্যাশনাল ব্যালেট কোম্পানি তাকে গ্রহণ করে শিক্ষানবিস হিসেবে। এই কোম্পানির সাথে তিনি বিশ্বভ্রমণ করেন, অংশ নেন বিভিন্ন দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান যেমন_নিউইয়র্কের কসমোপলিটন অপেরা হাউজ ও মস্কোর ক্রেমলিন প্যালেস-এ। স্প্যানিশ ন্যশনাল ব্যালেট দলটির সাথে থাকা অবস্থায় তিনি তার সব বিস্ময়কর তেজী ও সুষম দৈহিক কার্যক্রম দেখিয়ে একক পারফর্মার হিসেবে নাম কামান।
আরো বেশি সৃজনশীলতা তৈরি করার জন্য তিনি, কোর্তেজ ফ্লেমিঙ্গো ব্যালেট কোম্পানি গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।
সেই সাথে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ব্যবস্থা করেন, নাম দেন, সিবেই। এটা ১৯৯২ সালের ঘটনা। তার এই সংগঠনের আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, তা সবাইকে মুক্তভাবে তাদের প্রতিভা বিকাশে সাহায্য করে। একেবারে শুদ্ধ ব্যালেট নৃত্য থেকে শুরু করে কিজের মতো করে ফিউসন ফ্লেমিঙ্গো তৈরিতে উৎসাহিত করে। সেই সাথে আধুনিক নৃত্য তো আছেই।
১৯৯৫ সালের ঘটনা, দুটো আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা 'লা ফ্লোর দি মি সিকরেরতো' (ফুলের গোপন কথা) ও কার্লোস সুরাস ফ্লেমিঙ্গো-তে অংশগ্রহণের সুযোগ পান তিনি ও তার সংগঠন। জাহজে করে ভ্রমণের এই অংশটি ছিলো কোর্তেজ-এর জীবনে এক সফল ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। ১৯৯৯ সালে তিনি একটা ডকুমেন্টারি ছবিতে অংশ নেন এবং 'সোল' নামের এক সফল ভ্রমণে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকাতে যান। তবে শুধু সাফল্যগাঁথা নয়, তার কারিয়ারের কিছু অপযশও রয়েছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে বলা যায়, সেসময় তার সাথে 'নাওমি ক্যাম্পবেল', 'জর্জজিও আরমানি' ও 'মিরা সরভিনো'র মতো উচ্চ প্রোফাইলের প্রসিদ্ধ ব্যক্তিদের ছিল গভীর সুসম্পর্ক।
এরপর তার ঝুলিতে আসে 'ফ্যাশন গিতনা'র সাফল্য। এটা তাকে শুধুমাত্র স্বীকৃতিই দেয়নি, পাশাপাশি দিয়েছে একজন বিজ্ঞ কেরিওগ্রাফার ও সুদক্ষ আর্টিস্টিক ডিরেক্টরের খেতাব। এটা তার দ্বিতীয় সৃষ্টি বলা চলে। নৃত্যের এই নতুন ধারা শুরু করা হয় ১৯৯৫ সালে। ১৯৯৬ সালে তিনি আমেরিকার নিউইয়র্কের রেডিও সিটি হল-এ নাচ পরিচালনা করেন।
১৯৯৭-এ কোর্তেজ তার নিজের ব্যান্ড 'জিপসি প্যাশন ব্যান্ড' নিয়ে সিডি বাজারে ছাড়েন।
মিলেনিয়ামের শুরু থেকে কোর্তেজের দৃষ্টি ধীরে ধীরে নাচের উপর থেকে সরে গিয়ে কোরিওগ্রাফি ও আর্টিস্টিক ডিরেকশনের দিকে নিবদ্ধ হয়। তবে, নাচের ধারা তার অব্যাহত থাকে, কিন্তু তা স্টেজ, সিনেমা ও টেলিভিশনের মাধ্যমে একটা পর্যায় পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। তিনি ২০০০ সালে, 'জিপসি' এবং ২০০৪ সালে 'ভ্যানিলা ও চকোলেট' নামক সিনেমাতেও অভিনয় করেন। একটু পেছনের দিকে গেলে পাওয়া যায়, ২০০১ সালে, তিনি পুর্তরিকোতে জেনিফার লোপেজ-এর কনসার্টেও অংশগ্রহণ করেন।
এ ছাড়া, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার আন্তর্জাতিক ভ্রমণ অব্যাহত ছিল। যেমন_২০০৪ সালে তিনি 'ডি আমর ই ওদিও' নামের একটা টু্যরে অংশ নিয়ে ইংল্যান্ড, পতর্ুগাল, থাইল্যান্ড ও নিউইয়র্কের মতো দেশে যান।
২০০৭ সালটা স্মরণীয় কোর্তেজের কাছে, কারণ সেবছরই তার জাঁকজমকপূর্ণ প্রদর্শনী 'মি সোলেদাদ' অনুষ্ঠিত হয়। জুলাইয়ের ৭ তারিখে লাইট ইন লিসবন স্টেডিয়ামে তিনি নতুন ৭ম আশ্চর্যের ঘোষণা দান অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ওই বছরের ১৫ মে, এবিসি-এর 'ডানসিং উইথ দ্য স্টারস' নামক এক হাই প্রোফাইল সেমি ফাইনাল সেগমেন্টে গেস্ট হিসেবে যোগদান করেন।
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লন্ডনে থাকাকালে রাউন্ডহাউজ ক্যামডেন-এ তার কোম্পানির সাথে একটা টু্যর পরিকল্পনা করেন। এই টু্যরের বৈশিষ্ট্য ছিল মুক্ত নৃত্য।
এ ছাড়াও তার খ্যাতি শুধু বড়দেরই নয়, শিশুদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে সমান তালে। আর তাই তাকে স্মরণ করে রাখার জন্য 'মেটাল গিয়ার সলিড' নামের এক ভিডিও গেমস সিরিজে তার একটি প্রতিকী চরিত্র রাখা হয়েছে 'ভ্যাম্প' নামে।
আরো কিছু খবর
সম্প্রতি স্প্যানিশ দর্শকদের জন্য তিনি ক্যাফে নামক এক প্রিমিয়ার শো-তে মোটামুটি পৃথিবীর অর্ধেকটাই ঘুরে এলেন।
মাদ্রিদে তার একটা নাচের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত ১৬ ডিসেম্বর ২০০৯ থেকে ১৭ জানুয়ারি ২০১০ পর্যন্ত। এ ছাড়াও ওই বছরই ক্যাফে শো নিয়ে নিউইয়র্কে কয়েকদিনব্যাপী অনুষ্ঠান চালান তিনি, যথারীতি সেটা জনপ্রিয়তাও পায় প্রচুর। বর্তমানে তার পায়ের মূল্য কয়েক হাজার কোটি ডলার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।