আগের পর্ব
Adventure - নিঝুম দ্বীপ (২য় পর্ব )
আমাদের ২৪ জন ২৪ রকম কেরেক্টার এর অধীকারি। সবার কথা না বলে একজন এর কথা বলি… তিনি আমদের মোষ্ঠ সিনিয়্র শাহিন ভাই, বেশ কিছু দেশ আর বাংলাদেশের বেশীরভাগ জেলা ই তিনি কাজের খাতিরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কুকরিমুকরি, ঢালের চড় নাজানি কত চড় তিনি ঘুড়ে বেড়িয়েছেন, সাইক্লোন সেন্টার বানাতে । যা হোক ফিরে আসি মেইন ষ্টোরিতে……
পরের দিন আমাদের লঞ্চ ছাড়বে ১২.৩০ এ হাতিয়ার তমরুদ্দি থেকে, এ পথে দুটি লঞ্চ ই চলাচল করে একটি টিপু- ৫ অন্যটি পানামা, শুনেছিলাম পানামা টিপুর চেয়ে ছোট তাই কোন প্রকার ঝুকি না নিয়ে আমরা সকাল ৭ টা বাজে নিঝুমদ্বীপ থেকে রওনা দেবার সিদ্ধান্ত নিলাম। মনে আফসোস রইলো নিঝুমদ্বীপ এর বাকি জায়গাগুল না দেখার।
তখন ভাটার সময় তাই ভূনা খিছুরি আর ডিম কে পেটের ভিতরে একটু হজম হবার সুযোগ দিয়ে আমরা যাত্রা করলাম বনের আকাবাকা পথে নিঝুম দ্বীপ এর খালের শেষ প্রান্তে ।
ভুনা খিছুরিড় সাধ আর বনের ভিতরে পোলাপাইন এর ফটো সেশন আমার এক ঘন্টা লস করে দিল। টলারের কাছে সবার আগে শাহিন ভাই পৌছালো আমি বনের ভিতর থেকে তার গলার আও্য়াজ পেলাম “ এটা কি? আমরা এটা দিয়ে যাব না” আসলে ব্যপার টা হল আমাদের গাইড টাকা বাচানোর জন্য একটা মাঝারি আকারের টলার এনেছে, তখন প্রায় সারে আটটা বাজে, ঐ সময়টাতে আরেকটা টলার এর খোজ করার রিস্ক এ আমি গেলাম না। আল্লাহর নাম নিয়ে উঠে গেলাম।
টলারে সবাই উঠে যাবার পর কে যেন বল্ললো, চলেন একটু দোয়া করি।
সাথে সাথে আমাদের সাথে থাকা আমাদের অফিস এর ইমাম সাহেব দুহাত তুলে দোয়া করা শুরু করলেন আমরা সবাই সামিল হলাম সে দোয়াতে, আড় চোখে দেখলাম আমাদের গাইড আর মাঝি ও হাত তুলেছেন, মনে হতে লাগলো আমরা কোন অভিজানে যাইতেছি। দোয়াতে মাঝির মনযোগ, বিশাল নদী আর মাঝারি টলারের এ যাত্রাটা যে চ্যালেনজিং তা ভেবে আমার মত সবাই একটু নড়ে চড়ে বসছে।
জাগতিক নেশার বস্তুর সাথে প্রাকৃতিক সৌন্দের্যের একটা দারুন মিল আছে, এটি আপনার যাবতিয় কষ্ঠ, বেদনা, টেনশন ক্ষনিকের জন্য হলেও ভুলিয়ে দেয়। তাই আমরাও টলার আর বিশাল নদীর হিসাব নিকাশ ভুলে গেলাম।
নিঝুম দ্বীপের সে আকাবাকা খাল আর দু-ধারের বন, নানা রঙের পাখিতে আমরা হারিয়ে গেলাম।
টলার খাল পেরিয়ে নদী তে পড়লো। মাঝারি আকারের ঢেউ আমদের সামান্য ভেজিয়ে দিচ্ছিল্ল। নদীর পানির সে ছিটা সবাই বেশ এঞ্জয় করছিল। এর বেশ কিছুক্ষন পর শুরু হল প্রবল ঢেউ, এগুল এত বড় ছিলো যে আমরা যারা সামনে ছিলাম তারা পুরো ভিজে গেলাম, আমার পাশে ছোট ভাই নদীর দেশের খাল বিল এ বড় হয়েছে, ঢেউ দেখে সে বলছে ভাই কোন টেনশন নাই কিছু হবে না, এভাবেই ঢেউ কেটে কেটে আমাদের আগাতে হবে কিচ্ছু হবে না। আমি মাঝি কে খেয়াল রাখছিলাম ভাব-লেশহীন মাঝির চেহারাতে কোন অনুভুতির ছায়া নাই।
যারা সাতার পারে না তাদের কিন্তু ততক্ষনে খবর হয়ে গেছে, বাট যেহেতু কেও কিছু বলছে না তাই নিজের অনুভুতি তারা চেপে গেলো, আমি বেশ এঞ্জয় করছিলাম, মনে কেবল একটা লাইন ই ঘুরপাক খাচ্ছিল… What a adventure!!! আধা ভেজা শরীরটাকে টলারের সাইডের ওয়ালের সাথে এলিয়ে দিয়ে বেগ গুলকে মাঝে রাখলাম এতে বেগ গুলো ভেজার হাত থেকে রক্ষা পেল। এর পড়ের ৫-১০ মিনিট শুরু হল সে বিশেষ সময় টা যেন দারুন এক এডভেনচার মোর নিল অন্য দিকে………… (চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।