বুদ্ধিমান প্রাণী নিয়ে অনেকের দৃষ্টি ভঙ্গি অনেক রকমের হতে পারে, তবে আমার ব্যাক্তিগত ধারণা যদি এদের অস্তিত্ব সত্যই থাকে তাহলে আমাদের সাথে হয়তো একদিন তাদের যোগাযোগ হবে। আর বুদ্ধিমান প্রাণী বলতে তারা যে মানুষের চেয়েও বুদ্ধিমান হবে অথবা সাই-ফাই মুভি গুলোর মত বিশাল আকৃতির ও অত্যন্ত শক্তিশালী ভয়ংকর টাইপের হবে সে ধারনার সাথে আমি একমত নই। তারা অতি মাইক্রোস্কপিকও হতে পারে, হতে পারে তারা একসাথে নিজেদের মস্তিস্ক জোড়া দিয়ে শক্তিশালী প্রযুক্তি আবিষ্কার করে ব্যবহার করছে (যেভাবে সুপার কম্পিটারগুলো কাজ করে!) অথবা অত্যন্ত গোবেচারা প্রজাতির কিছু....যাদের বুদ্ধিমত্তা আমাদের পূর্বপুরুষদের মত অর্থাৎ তারা এখনো হয়তো আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া না পেলেও নিজেদের ক্রমাগত বিকশিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে!!!
মহাবিশ্বে বুদ্ধিমান প্রাণীর সম্ভাবনা (সিরিজ-১) এ বুদ্ধিমান প্রাণীর সম্ভাবনা নিয়ে অনেক বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং গবেষণা বিষয়ে বলেছিলাম। ওই সিরিজের পরবর্তী পোষ্ট হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অদ্ভুত কিছু প্রাচীন নিদর্শন এর সম্পর্কে আপনাদের সাথে শেয়ার করব,যেগুলোর সন্তোষজনক ব্যাখ্যা গবেষক, ইতিহাসবিদ গণ প্রদান করতে পারেননি। আবার অনেক গবেষকরা এই নিদর্শন এবং ঘটনা গুলোর সাথে ভিন গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীর সংশ্লিষ্টতার কথা উল্যেখ করেছেন।
এই নিদর্শন গুলো যুগ যুগ ধরে মানুষের মনে বিস্ময় হয়ে আছে আর কারো কারো কল্পনার জগতে এগুলো নিয়ে “এলিয়েন, ইউ এফ ও” এসব ভাবনার উদ্য় হয়েছে।
বিভিন্ন বই, ম্যাগাজিন থেকে সংগৃহীত এরকম কিছু তথ্য সিরিজ আকারে পোষ্ট করার চেষ্টা করব।
রহস্য-একঃ পিরি রইসের ম্যাপ
পনের শতকের প্রথম দিকে, তুর্কি নৌ বাহিনীর অধিকর্তা, অ্যাডমিরাল পিরি রইসের কাছে ছিল কিছু অতিপ্রাচীন ম্যাপ। সেগুলো পাওয়া গেছে টপকাপী প্রাসাদে। বর্তমানে বার্লিন স্টেট লাইব্রেরীতে এর দুটো ম্যাপ আছে।
ভূমধ্যসাগর আর মরুসাগর নিখুঁতভাবে আঁকা আছে ও দুটোতে।
ম্যাপদুট পাওয়ার পরপরেই পরীক্ষা করে নেয়া হয়েছে বিখ্যাত মার্কিন মানচিত্রকর, আরলিংটন এইচ, ম্যালারিকে দিয়ে। গভীর পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তিনি জানান সমস্ত ভৌগলিক তথ্যই ম্যাপগুলোতে বর্তমান। ম্যাপগুলো নিয়ে এরপর আরেক বিখ্যাত ভূগোলবিদ ওয়ালটারস এর সঙ্গে পরামর্শ করেন তিনি। দু’জনে মিলে ম্যাপ দুটোকে আধুনিক জিওগ্রাফিকাল গ্লোবের উপর ফেলে এক অদ্ভুত রোমাঞ্চকর তথ্য আবিষ্কার করেন।
বিস্ময় নিয়ে তারা দেখতে পান শুধু ভূমধ্যসাগর আর মরুসাগরের চিত্রই ত্রুটিহীন, নিখুঁত ভাবে আঁকা হয়নি ম্যাপে, উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলভূমি, এমনকি দক্ষিণ মেরুর সীমারেখা দেয়া আছে ম্যাপটিতে। দেশগুলোর অভ্যন্তর ভাগের স্থান বিবরণও দেয়া আছে স্পষ্ট। নিখুঁত নৈপুণ্যে আঁকা হয়েছে পাহাড়-পর্বত, দ্বীপ, নদী, মালভূমি ইত্যাদি সব।
১৯৫৭ সাল ছিল জিওগ্রাফিকাল ইয়ার। ওই বছরই ম্যাপ দুটো পরীক্ষার জন্য তুলে দেয়া হয় (ম্যালারি আর ওয়ালটারের দেখার পর) জেসুইট ফাদার লাইনহ্যামের হাতে।
অয়েস্টন মানমন্দিরের প্রিন্সিপাল এবং মার্কিন নৌবাহিনীর মানচিত্রকর ছিলেন তিনি। চুলচেরা পরীক্ষার পর তিনি ঘোষণা করেন ম্যালারি
আর ওয়ালটারের কথা ঠিক, ম্যাপ দুটো অসম্ভব রকম ত্রুটি শূন্য। ম্যাপে অঙ্কিত দক্ষিণ মেরুর কিছু কিছু পর্বতমালা মাত্র বিগত শতকে আবিষ্কার হয়েছে। এর একটি আবিষ্কৃত হয়েছে ১৯৫২ সালে যার নকশা তখন আঁকা হয়েছিল প্রতিধ্বনি পরিমাপক যন্ত্রের সাহায্যে।
অদ্ভুত, বিস্ময়কর একটা কথা বলেছেন, অধ্যাপক চার্লস এইচ হ্যাপগুড গণিত শাস্ত্রবিদ ডাব্ল্যু স্ট্রেচান।
স্যাটেলাইট থেকে তোলা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার ছবির সাথে নাকি অদ্ভুত মিল আছে পিরি রইসের পাওয়া ম্যাপের! ইদানীংকালে স্যাটেলাইট এর কল্যাণে ম্যাপ তৈরি করাতো এখন পান্তাভাতে পরিণত হলেও হাজার হাজার বছর আগে , ওই ম্যাপে এতো নির্ভুলভাবে ওগুলো আঁকা হলো কিভাবে? স্যটেলাইটের ধারণা দূরে থাকুক, প্রতিধ্বনি পরিমাপক যন্ত্রের নামও তো শোনার কথা নয় তখনকার মানুষের!
সেই সত্তর এর দশকে কায়রোর ওপরের আকাশ থেকে ছবি তুলেছিলো একটা স্যাটেলাইট। ফিল্মটা ওয়াশের পর ( তখনও আমাদের মত ডিজিটাল ক্যামেরা ছিলনা তাই ছবি ডেভেলপ না করে উপায় ছিলনা!) যে ছবি এলো, তাতে কায়রো থেকে পাঁচ হাজার মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে যা কিছু আছে সবই পরিষ্কার ফুটে উঠেছে। এর কারণ, এই জায়গাটুকু সরাসরি ক্যামেরার লেন্সের নিচে ছিলো। কিন্তু এর বাইরের মহাদেশগুলোর ছবি বেঁকে গেছে। লেন্সের কাছ থেকে যার দূরত্ব যত বেশি, সেটা তত বাঁকা।
আমাদের পৃথিবী গোলাকার, তাই যে মহাদেশগুলো লেন্সের ফোকাস থেকে দূরে ছিল সেগুলর ছবি বাঁকা হয়ে গিয়েছিলে। এই ছবিতে দক্ষিণ আমেরিকাকে লম্বালম্বিভাবে অদ্ভুত বাঁকা দেখা যায়। পিরি রইসের ম্যাপেও কিন্তু তাই আছে। কি করে ঘটল এমনটা?
বলা কি যায়না, আকাশ থেকেই তোলা হয়েছিলো পিরি রইসের ম্যাপের ছবি? যদি তাই হয় নিশ্চয়ই আমাদের পূর্বপুরুষরা তোলেননি সেই ছবি। কারণ ওই সময় কোনো আকাশযান ছিলোনা তাদের( বিমানতো এই বিগত শতকেরই আবিষ্কার), ছিলোনা ওরকম উন্নত ছবি তোলার আধুনিক যন্ত্রপাতি ।
তাহলে কে তুললো?
পিরি রইসের ম্যাপগুলো কিন্তু আসল ছবি নয়, নকল মানে কপি করা। আসল ছবি অনুকরণ করে কেই এঁকেছিলো। আসল ছবি যে তুলেছিল সে কি তাহলে উড়তেও জানতো? ছবি তোলার যন্ত্রপাতিও ছিলো তার কাছে কে সেই ব্যাক্তি? আমাদের উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনায় কি আসতে পারেনা কোনো ভিন গ্রহবাসী বুদ্ধিমান জীবের অর্থাৎ এলিয়েনদের স্পেসশিপ থেকে তোলা ছবি ছিল ওগুলো! তারপর তারা হয়তো আমাদের মানুষ্য সম্প্রদায়ের কারো কাছে সেগুলো রেখে যায়...
সুত্রঃ পিরি রইসের ম্যাপ (প্রায় পুরোটাই কপি-পেস্ট) ভিনগ্রহের মানুষ, রকিব হাসান(সেবা প্রকাশনী)।
অনেকে বইটিকে কল্পকাহিনী বলে মনে করলেও এখানে উল্যেখ করা ঐতিহাসিক তথ্যগুলো সত্য। আর ভিন গ্রহের প্রানিরা তো আমাদের কল্পনাতেই এখনো আবদ্ধ আছে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।