কি বলব
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে নতুন জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাওহীদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর আদলে তৎপরতা চালানো হচ্ছে এ নতুন সংগঠনের কর্মকাণ্ড। টাঙ্গাইলের বায়েজিদ খান পনী্ন তাদের কেন্দ্রীয় নেতা হলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জড়িত রয়েছে এ সংগঠনের সাথে। তাদের পরিকল্পনায় বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। আর এ নিয়ে উদ্বিগ্নও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনী।
বিভিন্ন সময় গ্রেফতারকৃদের কাছ থেকে এ ধরণের তথ্য পাওয়া গেছে বলে পুলিশের একটি নির্ভযোগ্য সুত্রে জানা গেছে।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য মতে, গত চার মাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাওহীদের ১৯ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে বেশ কয়েক জন নারী সদস্যও রয়েছে। সংগঠনটি সরকারীভাবে নিষিদ্ধ ঘোষনা না হলেও সংগঠনের জিহাদী বই, জিহাদী অনুষ্ঠান ভিত্তিক সিডি ও লিফলেট বিতরণের সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু জিহাদী বই, সিডি ও লিফলেট।
সর্বশেষ গত সোমবার রাতে নগরীর তালাইমারি এলাকায় থেকে বেশ কিছু জিহাদী বই, সিডি ও লিফলেটসহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তারা তাদের সংগঠনিক তৎপরতা নিয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, টাঙ্গাইলের বায়েজিদ খান পনী্ন হিযবুত তাওহীদের প্রধান। তবে এর সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিড়্গক জড়িত রয়েছে। তাদের নির্দেশেই তারা সংগঠনের প্রচারণা চালিয়ে আসছে।
ইসলামের পথে লোকজনকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্যই তারা এ সংগঠনে যোগ দিয়েছে বলেও গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে। কিন্তু এ সংগঠনের আগামী পরিকল্পনা তারা জানাতে পারেনি। তবে এ সংগঠনের সাথে জড়িত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষকের নাম তারা পুলিশকে জানিয়েছে। কিন্তু পুলিশ তদন্তের সার্থে ওই শিক্ষকদের নাম প্রকাশ করেনি। তবে তাদেরকে গোয়েন্দা নজরদারীতে রাখা হয়েছে।
ওই তিন শিক্ষক এক সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবিরের রাজনৈতির সাথে জড়িত ছিল বলেও জানা গেছে। অপর দিকে গত বছরের ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের গ্রেফতারকৃত হিযবুত তাওহীদের চার সদস্যও তাদের নেতৃত্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তিন শিক্ষক রয়েছে বলেও জানায়।
এছাড়াও গ্রেফতারকৃতরা পুলিশকে আরও জানিয়েছে, রাজশাহী ও তার আশপাশের জেলাগুলোতেও তাদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিশেষ করে ইতোমধ্যেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকায় তাদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। আর এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সমাজের নিম্ম আয়ের উঠতি বয়সী কিশোর কিশোরীদের টাকার বিনিময়ে জঙ্গি এ সংগঠনে ভিড়ানো হচ্ছে।
প্রথমে তাদের সংগঠনের সদস্য করে দলের নিয়ম কানুন বুঝিয়ে দেয়া হয়। এর পর বেশ কয়েকদিন তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পরে তাদের ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয় সাংগঠনিক চালানোর মাধ্যমে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহনের জন্য। এর পর তাদের প্রতিমাসে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। আর যারা মোটরসাইকেল চালাতে পারদর্শী তাদেরকে চলাচলের জন্য দেয়া হয় মোটরসাইকেল।
এভাবেই তারা গত ৭/৮ মাস যাবত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এব্যাপারে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার ওবাইদুল্লাহ বলেন, হিযবুত তাওহীদ নামের কোন সংগঠনকে এখনো নিষিদ্ধ করা হয়নি। তবে কিছু বিতর্কিত বই লিফলেট বহন করার কারণে এ সংগঠনের বেশ কিছু সদস্যকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সেসব তথ্য ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংগঠনটির দিকে পুলিশের নজর রয়েছে। এ সংগঠন নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।