আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইদির রায় উদযাপন করতে দেখলাম 'শুনতে কি পাও" : একটি মুভি রিভিউ ।

লেখা দেখুন; লেখককে নয় । প্রাক-কথন: গতকাল সাইদি চোরার রায় ঘোষণা করা হইসে। বহুল প্রতীক্ষিত ফাসির রায় ঘোষণার পর আপামর জনতা খুশিতে উদ্বেলিত । যাই হোক, আসল কথায় আসি। আমরা তিন বন্ধু ছিলাম টিএসসিতে ।

হঠাত দেখলাম , মুভি উৎসবের পোস্টার; গতকালই শেষ দিন ছিল । বিভিন্ন বাংলা মুভি কয়েকদিন ধরেই প্রদর্শন করা হয়েছে টিএসসির অডিটোরিয়ামে। গতকাল দেখানো হয়েছে 'চোরাবালি' (৩.৩০) আর 'শুনতে কি পাও' (৬.৩০)। শুনতে কি পাও এর নাম শুনেছিলাম, ডেইলি স্টারে রিভিউ ও পড়েছি। ভাবলাম এটাই দেখবো।

বইমেলাতে এক চক্কর মেরে টিকেট কেটে লাইনে দাঁড়ালাম। এবং ৬.৪৫ এ ভেতরে ঢোকার 'অনুমতি' লাভ করলাম ! আসন গ্রহণ : হলের ভেতর প্রবেশের পর প্রথমে পিছনে খালি জায়গা দেখে বসলাম। খিয়াল কইরা হেরপর দেখি খালি মাইনশের মাথা আর ফ্যান দেখা যায়। জলদি আমরা ৩ জন সামনে গেলাম। ৩য় সারিতে পরপর দেখি ৪ টা সিট ফাকা,এর মধ্যে ৩ টা দখল করে ফেললাম।

সেখানে দেখি আরেক তেলেস্মাতি। সাম্নের দুই সারি গেস্ট দের জন্য যার অর্ধেকই ফাকা। পুরাই বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলার মতন অবস্থা। সাধারন গ্যালারী থাকে ভর্তি , আর ভিআইপিদের জন্য রাখা সৌজন্য সিট গুলা থাকে ফাঁকা । ।

যাই হোক, বসার ১০ মিনিট পর দর্শকদের চিৎকারের চোটে শুরু হল । কাহিনি সংক্ষেপ ঃ সোজা কথায়, এটা আইলা দুর্গত মানুষদের জীবন নিয়ে নির্মিত একটা ছবি। ২০০৯ সালের ঘুর্নিঝড় আইলার আগাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সুন্দরবনের পার্শবর্তী বিস্তির্ন অঞ্চল। এরকমই একটি গ্রাম সুতারখালি। সেই গ্রামের বাসিন্দা রাহুল,রাখি,ও তাদের ছেলে বাবু কে নিয়ে ছবির কাহিনি।

আইলার আঘাতের পর তারা আশ্রয় নেয় বেড়িবাঁধে । তাদের বেড়িবাঁধে বসবাসকালিন সময়ের উপর ১.৩০ ঘণ্টার একটা ডকুমেন্টারি বলা যায় একে। বেড়িবাঁধে থাকাকালীন সময়ে তাদের ত্রাণের প্রতি হাহাকার, দুর্গা-পূজা,এবং পরিশেষে বাঁধ নির্মান ও পুনর্বাসনের মধ্যে দিয়ে সিনেমার পরিসমাপ্তি। মুল্যায়নঃ ছবিটা আহামরি তেমন কিছু নয়। যারা আর্ট ফিল্ম ঘরানার মুভি দেখতে অনভ্যস্ত তাদের কাছে চরম বোরিং লাগার সম্ভাবনাই বেশি।

ছবির কাহিনি বেশ স্লো। প্রথম ৪০ মিনিট তো কাহিনির কিছুই বুঝি নাই। খালি কিছু শট দেখেছি। ১০-১৫ মিনিট চলার পর হলের অর্ধেক দর্শক গেছে ক্ষেপে। তাদের জোর চিতকার,তারা এই ছবি দেখবে না।

চোরাবালি চালাতে হবে। তবে একটু ধৈর্য নিয়া দেখলে শেষের ১৫-২০ মিনিট খারাপ লাগবে না। অবশ্য ১ ঘন্টার মধ্যেই আমাদের হলের অর্ধেক সিট ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। মজা লেগেছে যখন গেস্টদের অর্ধেকই চলে গিয়েছিল। আমার বন্ধু দুইজনও ১ ঘন্টা পর নাই।

কিন্তু আমি ১৫ টাকা উসুল করার জন্য দাঁতে দাঁত চেপে পুরোটা দেখেছি। যখন শেষ হইলো , অবশিষ্ট দর্শকের প্রাণবন্ত হাত তালি। না,এন্ডিং এর জন্য নয়, ছবি শেষ হয়েছে সেই খুশিতে !!! ছবির সাউন্ড অত্যন্ত খারাপ; খুব বেশি হলে ১০ মিনিটের ডায়লগ বুঝতে পেরেছি;বাকিটা সময় সাবটাইটেল দেখে কাহিনি বুঝতে হয়েছে। অবশ্য এটা শিওর না এইটা মুভির দোষ না হলের সাউন্ড সিস্টেমের । বাবুর ক্যামেরাম্যানের সাথে কথা বলতে দেখে খটকা লেগেছে এটা আসলে সিনেমা নাকি ডকুমেন্টারি ! আর হ্যা, ১৫ টাকা দিয়ে টিকেট কেটেছি বলে গায়ে লাগেনি; ১০০-১৫০ দিয়ে কাটলে অবশ্য একটু খারাপ লাগতো।

আফটার অল , আমি অত উচ্চমার্গের ছবি বোদ্ধা না। আমি অতি সাধারন একজন দর্শক! কিছু বিশেষ দিক ঃ আসলে অনন্ত জলিল আর চোরাবালির দর্শকরা এই ছবি দেখে বিরক্ত হবেন। এটা সাধারন কাহিনি,সাধারন শিল্পি, তবে পেছনের গল্পটা সাধারন নয়। পরিচালক,প্রযোজক সবাই নতুন। সেই হিসেবে উৎরে যায়।

তবে আশা করব ভবিষ্যতে আরও ভাল হবে। কিছু কিছু দৃশ্য অনেক ভাল লাগসে। যেমন, পুজার দৃশ্য,বাধ বানানোর দৃশ্য, ত্রান নিয়ে গ্রামবাসিদের ঝগড়া , পানির অভাব ও লাইন দিয়ে পানি নেবার দৃশ্য ইত্যাদি। তবে সেসবের সংখ্যা কম। আমার রেটিং ঃ প্রথমে ৩.৫ দিতে গেছিলাম, পরে উপরোক্ত দৃশ্য গুলার কথা ভেবে ৪ দিলাম।

এতে রাগ করলে এটুকুই বলতে পারি,ছবিটা আমার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। শেষ কথাঃ ছবিটি দেখুন,দেখে নিজেই যাচাই করুন কেমন। খুব সম্ভবত ডিসেম্বারে মুভিটি রিলিজ পেয়েছিলো। এখন মার্চ। হলে না পাওয়ারই সম্ভাবনা।

তবে ডিভিডির দোকানে পেতে পারেন বা ডাউনলোড করুন। আমি আর ডাউনলোড লিঙ্ক দিলাম না। বাসায় বসে দেখলে হয়তো ভাল লাগতেও পারে। আজ এই পর্যন্ত । ভাল থাকবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.