আমি তাই বলি যা আমি বিশ্বাস করি প্রিয় নেতা,
সালাম নিবেন । সময় নেতা সৃষ্টি করে তার স্পষ্ট প্রমান আপনি। গত কিছুদিন আপনার উপর যে চাপ যাচ্ছে তা বর্ণনাতীত । আমরা জানি একজন সাধারন মানুষ হিসেবে এই চাপ সহ্য করা খুবই কষ্ট। আপনার হয়তো মনে আছে আপনারা যখন কাদের মোল্লার প্রহসনের রায়ের পর ইভেন্ট দিয়েছিলেন তখন কিভাবে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহন করেছিল ।
এবং দিনে দিনে সাধারন ছাত্র - জনতার উপস্থিতে প্রজন্ম চত্বর ইতিহাস হয়ে গেছে। আপনি কি জানেন কেন এত মানুষ এখানে এসেছিলো? কেন সবাই তার পরিবার- পরিজন নিয়ে প্রজন্ম চত্বরে এসেছিলো? কারন মানুষ এই রায়ে অপমানিত হয়েছিলো। মানুষ রাজনৈতিক দলগুলোর তথাকথিত রাজনীতি দেখে অসহায় হয়ে গিয়েছিল। রাজনীতিবিদদের নৈতিক অবক্ষয় মানুষকে বেদনাতুর করে ফেলেছিল। তাই রায় ঘোষণার পর মানুষের মনে শুধু একটা কথাই বেজেছিল "এটা প্রহসনের রায়"।
মানুষ এইসব তথাকথিত রাজনীতিবিদের ঘৃণা করে তাই এই নিরেপক্ষ মঞ্চে এসে সবাই হাতে হাত ধরে একসাথে দাঁড়িয়েছে। মানুষ চায় বাংলাদেশে যারাই রাজনীতি করুক তারা যেন স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী হয়। আমরা সবসময় চেয়েছিলাম মঞ্চ নিরেপক্ষ থাকুক তাইতো সরকারের প্রভাবশালী লোকেরা এখানে এসে সুবিধা করতে পারে নাই। আমাদের নিরেপক্ষ ইমেজ এর জন্য আমরা বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারন করি নাই, যাকে ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বলা অসম্ভব। সেইখানে ছাত্র লিগের সাধারন সম্পাদককে কেন আপনার পাশে পাশে রাখা? কেন মঞ্চ থেকে বার বার বিএনপির নামে বিষেদাগার? হ্যা মানি যে বিএনপি তাদের অনেক লালন পালন করেছে, কিন্তু সেই কথা বলতে গেলে আপনার তো আওয়ামী লীগের কথাও বলতে হবে।
জামাত শিবিরকে লালন পালন এর ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটা রাজনৈতিক দলই জড়িত । তাই যখন মঞ্চ থেকে এই ব্যাপারে শুধু মাত্র একটা দলকেই দোষী করা হবে তখন এটাকে পক্ষপাত দুষ্ট মনে হবে আর আমরা হারাবো আমাদের নিরেপক্ষ মঞ্চ। এখনও সময় আছে ভেবে দেখবেন।
আর একটা কথা না বললেই নয়, যেখানে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে ছিলাম একটি ইস্যুতে সেখানে ধীরে ধীরে ইস্যু বাড়ানোয় আমাদের শত্রু পক্ষের সুবিধা হয়েছে তারা সহজেই এগুলোর ভিতর থেকে বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছে। আমার মতে আমাদের এখন ২/৩ টা দাবিতে সীমাবদ্ধ থাকা উচিৎ ।
সেগুলো হতে পারেঃ-
১) সকল যুদ্ধাপরাধীর সর্বচ্চ শাস্তি।
২) স্থায়ী ট্রাইব্যুনাল
৩) স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন হিসেবে জামাত শিবিরকে নিসিদ্ধ করা।
আজকে আমাদের সাথে ইনসাফ হয়েছে , আজ আমরা সাইদির ফাসির রায় পেয়েছি। কিন্তু এইটা আমাদের একেবারেই প্রাথমিক অর্জন। আমাদের এই রায়ে খুশি হয়ে আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ভুলে গেলে চলবে না।
তাই আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য অর্জনের জন্য খুব সাবধানে পা ফেলতে হবে। সেই আপাতত আমরা নিম্নোক্ত কাজ গুলো করতে পারিঃ-
- আমরা একটা আনন্দ মিছিল করতে পারি
- এবং সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাসির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে
- এবং ট্রাইব্যুনালকে স্থায়ী করার জোর দাবি চালিয়ে যেতে পারি
- এবং ২৬ শে মার্চের ডেডলাইন এ যে জামাত শিবিরকে নিসিদ্ধ করার দাবি আছে তাতে জনমত বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যেতে হবে আর এই ব্যাপারে সরকারকে চাপে রাখতে হবে।
- সরকারকে জামায়াত - শিবিরের অপতৎপরতার বন্ধের জন্য জোর কার্যক্রমের ব্যাপারে চাপ দিতে হবে।
- জামাত শিবিরের উপরের নেতাদের(যাদের নির্দেশে সংগঠনটি জঙ্গি তৎপরতা চালায়) বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে গ্রেফতার করার জন্য চাপ দিতে হবে।
- সর্বোপরি আমাদের কোন ভাবেই সহিংস হওয়া যাবে না, কোন উসকানিতেই সহিংস হওয়া যাবে না সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে হবে কারন আমরা এই মুহূর্তে সহিংস হলে দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব হবে ।
সেইরকম পরিস্থিতিই করতে চায় জামাত শিবির। তাই কোন ভাবেই ওদের সুযোগ দেওয়া যাবে না কারন এই দেশকে আমরা ভালবাসি ওরা না।
সর্বোপরি প্রজন্ম চত্বরের কেন্দ্র থেকে আমাদের জন্য যেই নির্দেশই আসুক আমরা সবাই মিলে জান লাগিয়ে তা বাস্তবায়ন করবো। আমাদের নিজেদের ঐক্য কোনভাবেই বিনষ্ট করা যাবে না।
আমি প্রজন্ম চত্বরের প্রায় নিয়মিত সদস্য আন্দোলনের ২য় দিন থেকে।
আমার নিজের ভাবনার থেকে কথা গুলো বললাম। সর্বোপরি একটি কথাই বলতে চাই আপনি যা করতেসেন তার প্রতি যদি আপনার নিজের পূর্ণ আস্থা থাকে তবে মানুষের সমালোচনা/আলোচনায় বিভ্রান্ত হবেন না। কিন্তু একটা কথা যাই করেন তার ভিতর যেন জনগনের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। নতুবা বাংলাদেশের জনগন যেমন সহজেই কাউকে বুকে টেনে আপন করে নিতে পারে তেমনি বেইমানী করলে সাথে সাথে লাথিও দিতে পারে। জয় বাংলা।
ইতি
স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী
এক যুবক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।