http://www.facebook.com/Kobitar.Khata
এই লেখার সার কথা বুঝতে হলে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। তার আগে মাথা গরম করবে না।
রাজনীতির মতো অদ্ভুত জিনিস মনে হয় আর কিছু হতে পারে না। বিশেষ করে বাংলাদেশের রাজনীতি। ১/১১ এর পর যখন জরুরী অবস্থা জারি হলো, দেশের শাসনভার অনেকটাই সেনাবাহিনীর হাতে চলে গেল।
তখন দেশের সাধারণ মানুষ অনেক খুশী হয়েছিল। শুধুমাত্র চোর-বাটপার, ঘুষখোর, কালোবাজারী ও তার আত্মীয়-স্বজন, সাঙ্গপাঙ্গরা ছাড়া।
১/১১ এর পর দেখা গেল বাঘ মহিষে একঘাটে পানি খাওয়া শুরু করল। যারা একসময় ক্ষমতার লোভে রাজপথে আগুন ঝরিয়েছে, প্রতিপক্ষ নিধনে লিপ্ত হয়েছিল তারাও একসুরে কথা বলা শুরু করল। তারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একাট্টা হলো।
গলায় গলা মিলালো। একসুরে কোরাস গাইতে শুরু করল। কোরাসের সুরে সুরে তারা বুঝাতে চাইল যে সেনাবাহিনী খুব খারাপ একটি জিনিস। সেনাশাসন তার থেকেও বেশী খারাপ। সুতরাং যে কোন মূল্যে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফেরাতে হবে।
সেনাশাসন দেশ ও জাতির জন্য বিষণ লজ্জার ব্যপার। যে কোন মূল্যে আবার হাসিনা খালেদার গনতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। গনতন্ত্র ছাড় দেশের মানুষ ভিষণ কষ্টে আছে। রাজনীতিবিদের সাথে সুর মিলিয়ে কিছু চাটুকার সুশীল বিভিন্ন টকশোতে দিনের পর দিন এই কথাগুলোর জাবর কাটতে শুরু করলেন।
বলাবাহুল্য, আমরা পাবলিক আবার নেতাদের কথায় নাচ শুরু করে দিলাম।
রাজনীতিবিদেরা আমাদের বোঝাতে সমর্থ হলো যে সেনাশাসন খুব খ্রাপ। আমাদের এই মূহুর্তে হাসিনা খালেদার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা নেতা ও চাটুকারদের সাথে কোরাসে সামিল হলাম।
সুতরাং আমরা আবার হাসিনা খালেদার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনলাম। সেনাবাহিনী ও সেনা শাসনকে তুলো ধুনু করলাম।
এমনকি আমাদের ভয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হলো।
এরপর আমরা আবার সবাই হাসিনা খালেদার গঠনতন্ত্রে সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিলাম। আবার সেই পুরনো মধুময় দিনগুলো ফিরে পেলাম। অনাবিল আনন্দে দিনাতিপাত করিতে লাগিলাম।
কিন্তু মূলকথা এটা না, মূলকথা হলো, এই সরকারের সময় যত নির্বাচনই আসে, সেটা হোক উপনির্বাচন, মেয়র নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন সব নির্বাচনের সময় বিরোধী দল থেকে যে প্রস্তাবটি সর্ব প্রথম আসে তা হলো নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিয়োগ দিতে হবে।
র্যাব, পুলিশ, আনসার, চকিদার কিচ্ছু দিয়ে হবে না। সেনাবাহিনী লাগবেই। আজ খবরে দেখলাম বিএনপি নেতারা বলছে সেনাবাহিনী নিয়োগ না দিলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। শুনে আমার আক্কেল গুড়ুম!! শালা বলে কি!!!
তারমানে কি সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ? ১/১১ এর পর সেনাবাহীনি নিরপেক্ষই ছিল? সেনাবাহিনীর উপর আস্থা রাখা যায়? যদি তাই হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কেন এত বিষোদগার ছড়ানো হয়েছিল? কেন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আমাদের ক্ষেপিয়ে তোলা হয়েছিল? কেন তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছিল? কেন তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতা দখলের চক্রান্তের কালিমা দিয়েছিল? কেন সাবেক সেনাপ্রধানকে দেশ ছাড়তে হয়েছিল?
হাসিনা খালেদারা বাংলাদেশের রাজনীতি ও ক্ষমতাকে নিজেদের বাপদাদার সম্পত্তি বলে মনে করে। সেই সম্পত্তি সেনাবাহিনী কেন ভোগ করবে এই কারণেই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তোলা হয়েছিল? কিন্তু বাস্তবতা হলো সেনাবাহিনী আসলে নিরপেক্ষ ছিল।
বিএনপির কথায় কি এটা প্রমানিত হয় না?
সেনাবাহিনী ক্ষতায় নেয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে তাই বলা হলো, আর এখন বলা হচ্ছে সেনাবাহিনী ছাড়া নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। এ থেকে আমরা সাধারণ পাবলিক কি বুঝব? মুলা??????
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।