আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৯৭১

"আমি চিনেছি আমারে আজিকে আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ..."

১ বর্তমান তেল চিকচিক সুঠাম তুমি উচ্ছল তব চাহনি গ্রন্থিল পেশি জৌলুশ ভরা বুকের শক্ত গাঁথুনি চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ হয়েছে বুদ্ধি হয়েছে ঘটে সদা সতেজ সহাস্য তুমি যুবক হয়েছ বটে তেল চিকচিক ঐ তনু তব ক্ষনিক জীবনে নশ্বর জীবন মহিমা অর্জিয়া তুমি হইবেকি চির ভাস্বর গায়ের কুর্তা রুধিতে না পারে তোমার শিনার পাটা জীবন জোয়ারে ভাসিয়া চলিছ জাননা কোথায় ভাঁটা। হাটিছ চলিছ বলিছ কথা সুন্দর বাংলিশ ভাবিছ মনের গড়িবে জীবন রুপকথা-ইংলিশ Coming-going ইংরেজি জান;জান অদ্ভুত গালি রাতভর কথা বলতে পার ধর্মের গুড়ে বালি নয়নে চড়িয়ে রঙ্গিন চশমা,নিশি কিনবা দিনে দিন রাত চলে চা সিগারেট নেশাও হয় গোপনে নিজেরে তুমি যে বিকায়ে দিয়েছ আপনি জাননা তা যে ক্ষয়ের শুরু ৫৭(১৭৫৭) এ সেথায় হয়েছে ঘা। বিশ্বায়ন কি বুঝেছ তুমি? বুঝনিতো কানাকড়ি, আপন হাতে অভিশাপগুলি নিয়েছ পকেট ভরি মুক্ত-বাজার পেয়ে গিয়ে তুমি নিজেরে বলিছ স্বাধীন তোমার বিকোতে দেশটা আজও রয়ে গেল পরাধীন। ২ অতীত তেল চিকচিক সুঠাম তুমি যৌবন তেজী বাহু শুনিতে কি পাও ধরনি হেথাএ করিতেচে আহুতাহু? জীবন প্রদীপ নিভিয়া জ্বলিছে তোমারি পদতলে নিভিয়া নামিবে তমশা আঁধার তোমারি একটি ভুলে জান কি তোমার জন্ম কাহিনী জানো নাকি কি যে ব্যাথা? জীবন মাঝে যে মৃত্যুরা থাকে জানো নাকি সে কথা জান নাকি কোন জুলুম গিয়াছে ৭১ এর সালে! জান কি কোন মৃত্যু পুরী ঘুমায়েছে পদতলে? বাপটা তোমার মরেছে কিভাবে রেখেছ খবর তার কি ব্যাথা তোমার মায়ের মনেতে পেয়েছ দেখা তার? নয়টি মাসে ৩০ লক্ষ মানুষ হয়েছে শহীদ! কি ছিল তাদের অন্যায় বল কি ভাষায় দেবে ধিক? সেদিনের সব কথা মনে হলে চোখ ভেজে বারবার তবুও এসব মিছে কথা নয় শুনে যাও নমুনা তার শিয়ালবাড়ীর জল্লাদখানা কেড়েছে হাজার প্রান গুঁড়ায়ে গুঁড়াও হাত পায়েরে মানবের অপমান হিংস্র পশুও বরবর নয় যতটা ওরা ছিল 'কুত্তা','শুওর' কোন গালি দেবে ভাষাটা আমারে বলো! 'মানুষ মরেছে? মরতেই পারে যুধে মানুষ মরেই। ' 'মায়ের কোলের শিশুও মরে ! নিজের ঘরে বসেই?' তোমার বয়সী যৌবন মরে বুলেট বুকে করে ২৫ মার্চে রক্তারক্তি হয়েছিল ঘরে ঘরে।

৩ ইতিহাস জানো কি তোমার নিজের কাহিনী জানো কি অজানা গাঁথা? জান কি, কি ঘটেছিল ঘরে? না তুমি জাননা তা। দুহাতে জড়ায়ে তোমারে যখন রাখিয়াছিল কোলে, টানিয়া ধরিয়া নিয়ে গেছিল তোমার মায়েরে তুলে বাপটা তোমার বাধা দিতে এলে ধারালো সঙ্গিন দিয়া খুঁচায় তুলেছে চোখটা তাহার কাপিতেছে তব হিয়া? এখনতো কিছু হয়নি শুরু কেবল শুনিয়া যাও ব্যাথায় কাতর পিতারে ধরিতে তুমি যবে ছুটে যাও তোমারে তুলিয়া মেরেছে আছাড় রক্তে ভেসেছে গাও আরেক পশুর বুটের আঘাতে ফেটেছে কচি ভাল; ভাগে তুমি হারায়েছ জ্ঞান দেখনি মায়ের হাল! বাপরে তোমার লাথায়ে মেরেছে মায়ের চোখের ‘পরে বৃদ্ধ দাদীরে করেছে গুলি তাহারি আপণ ঘরে ব্যাথায় কাতড় বাপ্টা যখন এতটুকু জল চায় মা তোমার সব ছাড়িয়া-ছুড়িয়া ছুটিয়া গিয়াছে হায়! ভাগ্যে তুমি অজ্ঞান ছিলে দেখটা কী হলো পরে তিনটে পশু এক খানা কোলি কেমন করিয়া ছেড়ে; বোনটা তোমার ছিলো যেন এক উচ্ছল বালিকা, সেদিনের পর হয়ে গেলো যেনো দুঃখের মালীকা; সেই যে সেদিন বোনটারে ওরা ক্যাম্পে ভরিল হায় বলিতে-কীযে দুঃখ গাঁথা মন ভরে বেদনায়। দিন দিন করে নয়টি মাস কাটিয়া গিয়াছে তার থাকেনি কিছুই চলিয়া গিয়াছে স্বপ্ন মেনেছে হার। ৪ আশা তোমার বাবার রক্তবিন্দু তোমার মায়ের ঘাম তোমার বোনের তিল তিল করা শত শত অপমান একটি ১৬, একটি ২৬ মুখস্থ কিছু গান এই কি তবে দাবী ছিল তার? ছুটছে প্রশ্নবাণ! ধিক দিবে তুমি কাকে আজ বল নিজেরে বিকোয়ে হায় রক্তের দাবী ভুলে গেছো তুমি রঙিন বেশভূষায়! নিজের মনরে জিজ্ঞেস করো হাতে নিয়ে তার খুলি যে থাকতো আজ শিওরের পাশে মাথায়ে কাটতো বিলি বিশ্বায়নের মত্ত আশায়ে মুক্ত করা বাজার ফাঁদে মাতৃভূমির স্বপ্নরা সব গোমড়া মূখে ডূকড়ে কাঁদে দশরঙা চূল রঙচঙা জিনস শতছিন্ন পোশাক সানগ্লাস দিয়ে হঠাৎ ময়ূর সাজো তুমি হে কাক ভাবছো তোমারে দিলাম ধিক করলাম অপমান ওরে না! না! ক্ষুদ্র প্রয়াস হোক তোর উদগম নেট ঘেটে যবে জানছ তুমি নিত্য নতুন ফ্যাশন আগে জেনে নাও জন্মে তোমার উড়ছে সে কোন নিশান! নিজের মুক্তি-ইতিহাস জান নিজের বিবেক দিয়ে পরের জনুরে জানাবে কি তুমি বুঝাবে বল কি দিয়ে? বাঙালি তুমি বাংলাদেশি কখনও ভুলো না তা যারা ছোপছাপ রঙে ধরে ভাব নেই তার জাতীয়তা নিজের যা আছে তাই নিয়ে চলো তুমি বাঙালির ছেলে তোমার আছে গর্বিত অতীত আর সব যাও ভুলে বিশ্বকাতারে দাঁড়াতে গিয়ে কভু যদি পাও ভয় জেনে রেখো তব পূর্ববর্তী রক্তে করেছে জয়! তরুণের কাছে চিরকাল দাবী সুন্দর এক সমাজ নিজ হাত দিয়ে ছিঁড়ে দাও সব অপরাধ সন্ত্রাস! হাত দিয়ে রুখো, পায়ে দিয়ে দলো, রক্ত দিয়ে ঠেকাও নইলে ধরো কলম হাতে বিশ্ববাসীরে দেখাও! তোমার হাতেই শুরু হোক তবে নতুন বুদ্ধিজীবী; ১৪ তারিখ শত শহীদের শূন্যটা দাও পাড়ি। ধরো তলোয়ার, হও খেলোয়াড়, নিষ্ঠার কাজই করো বার বার; দরকার শুধু 'করা' রাজনীতি করো কলুষমুক্ত,দুর্নীতি দাও তাড়া, যা কিছু ভণ্ড পণ্ড করো, হোয়ে যাও খাঁটি মানুষ, বিবেক-বুদ্ধিতে ফিরিয়ে দাও লাখো মানুষের হুশ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।