যান্ত্রিকতাময় নগরীতে আমরা কি যন্ত্র হতে চলেছি! যন্ত্র আমাদের উপর ভর করছে নাকি আমরা যন্ত্রের উপর ভর করছি? আমরা যন্ত্রকে কাছে টানছি না যন্ত্র আমাদের কাছে টানছে? আমরা যন্ত্রকে আমাদের মত করে নিচ্ছি না যন্ত্র আমাদেরকে তাদের মত গড়ে নিচ্ছে? ভাববে অবাক লাগে আসলে কি হচ্ছে!!!! যান্ত্রিকতার সভ্যতায় আমাদের এই যন্ত্রময় পথচলার শেষ কোথায়!! আমাদের মধ্য থেকে কি প্রীতি, আদর্শ, ভালবাসা, সাংসারিক মমতাবোধ, মিলিমিশে হইহুলোকরে এক সাথে বসবাস, মানুষের প্রতি মমতাবোধ এই গুলোকি হারিয়ে যাচ্ছে!! আমরা কি সবকিছুতেই বানিজ্যিক হয়ে যাচ্ছি!
আমরা এখন আর অন্যের দুঃখ কষ্টে পাশে এসে দাঁড়ায় না, দেখায় না মমতা বোধ, যেটা দেখায় লোক দেখানো, কিছু প্রাপ্তির আশায়, সেটি পরোক্ষ ভাবে বা প্রত্যক্ষ ভাবে- যেভাবেই হউক না কেন। অন্যের দুঃখ কষ্টে সুযোগ খুজি তাকে দিয়ে নিজেকে বড় করে তোলবার। কারো কষ্টে আমরা ব্যথিত হতে ভুলে গেছি। সহানুভূতির নামে বাড়িয়ে দেয় স্বার্থন্বেষী হাত-খানা। আসলে আমাদের ভেতর লুকোনো থাকে স্বার্থের আত্মসিদ্ধির প্রচেষ্টার দৃঢ়প্রত্যয়।
রাস্তায় কেও দুর্ঘটনা কবলিত হলে আমরা পাশে দাঁড়ায় না, বাড়িয়ে দেয়না সহযোগীতার মমতাবোধে। দুরে ঠেলে দেয় নিজেকে ঝামেলা মুক্ত রাখার জন্য। কেও যদি মারা যায় আমরা পুলিশকে খবর দেই, নিজেরা হাতবাড়ালো হয়তো বেঁচে যেতে পারে শতপ্রাণ। বেশ কয়েকদিন আগের ঘটনা- বাসায় ফিরে শুনি ৪টি পরের বাড়ীর এক মহিলা গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে ছিল পুলিশ এসে নামিয়েছে, প্রশ্নকরলাম দরজা কি লাগানো ছিল- বলল না, কেও ইচ্ছা করলেই নামাতে পারত। কেওই নামায়নি নিজেকে বাঁচাতে, যদি নামাতে গেলে যদি কোন ঝামেলা হয়!! প্রথম যে দেখেছে সে যদি তখনই নামাতো হয়তো বেঁচে যেতে পারত প্রাণটি; আবারও ফিরে আসত আমাদের মাঝে।
কদিন আগেই বাসা তেকে ফোন- নিচের রাস্তা দিয়ে স্থানীয় কয়েকজন উঠতি মাস্তান একটি সমবয়োসী ছেলেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে সবার হাতে ছুরি, কাঠ রড, মারতে মারতে নিয়ে যাচ্ছে সবাই জানালা দিয়ে দেখছে!!! ভর দুপুরে সবার সামনে দিয়ে কেও কিছু বলছে না। সবাই যার যার মত পালাচ্ছে। দুইদিন পর শুনি ছেলেটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। পত্রিকাতেও পড়লাম। পুলিশও আনাগোনা করেছে কয়েকদিন।
তারপর আমরা সবাই ভুলে গেছি, থেকে গেছে আইনী তৎপরতাও হয়তো হাজারো অপরাধের মাঝে। কোথায় গেল আমাদের মানবত!! ওরা হয়তো ৪/৫জন ছিল; কিইবা হত ওদের বাধা দিলে; ১০জন লোক যদি লাঠি হাতেও তারা করত তা হলেও বেঁচে যেত মানুষটি। আর সন্ত্রাসীরাও তাদের কার্যকলাপ নির্ভয়ে চালাতে পারতো না আর ভষ্যিতে।
তবে এখন মাঝে মাঝে আশার বাণী শোনা যায় তবে সেটিও নির্মম ভাবে। ওমুক জায়গায় গণপিটুনিতে ডাকত/ছিনতাইকারী নিহত।
যার ফলে অনেক ছিনতাইকারী প্রবণ এলাকাতেও নাকি ছিনতাই কমে গেছে- ধরা পড়লে রক্ষা নাই সেই ভয়ে। এটি একটি ভাল দিক হলেও শত্রুতাবশত ছিনতাইকারী বলে চালিয়ে দিয়ে খুন করা হচ্ছে প্রতিপক্ষকে।
সবকিছু দেখে শুধুই ভাবি কোনদিক আগুচ্ছে আমাদের সভ্যতা, আমরা মানবতাহীন যন্ত্রমানব হতে চলেছি?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।