আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশ দল জেতার পরও দলে বড় ধরনের পরিবর্তন করা দরকার এবং অবিবেচক নির্বাচকের সেরা একাদশ

একমুখাপেক্ষি না হয়ে যা কিছু ভাল তা গ্রহন করা উচিৎ...

জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দলের প্রথম সারির ছয় ব্যটসম্যান এর মধ্যে তিন জনেরই ব্যাটিং গড় ছিলো ২২-২৩ এর মধ্যে। কমপক্ষে ৫০ টি একদিনের ম্যাচ খেলা ২২-২৩ গড়ের ব্যাটম্যানদের বৈশিষ্ট হচ্ছে এরা একম্যাচ ভালো করার পর পরবর্তী পাঁচ ম্যাচ খারাপ খেলবে। এটাই হচ্ছে তাদের ধারাবাহিকতা। যদি এরা এক ম্যাচ ভালো করার পর পরের ম্যাচগুলোতেও ভালো করা শুরু করে তবে ধরে নিতে হবে এটা একটা দুর্ঘটনা!! শুনে হয়তো খারাপ লাগতে পারে, কিন্তু এটাই সত্য। এদের ১০ ম্যাচের পরিসংখ্যানটা এরকম হতে পারেঃ ৫ ম্যাচে ১০ এর কম রান।

২ ম্যাচে ২০+ রান। ২ ম্যাচে ৩০+ রান। ১ ম্যাচে ৮০+ রান। দশ ম্যাচে মোট রানঃ ৮০+৩০*২+২০*২+৯*৫= ২২৫+ এবং ব্যাটিং গড়ঃ ২২৫/১০=২২.৫+। নির্বাচকেরা যখনই এদেরকে বাদ দেয়ার চিন্তাভাবনা করবে তখনই এরা তাদের সেরা খেলাটা খেলে ফেলবে।

কিন্তু এদের দ্বারা ধারাবাহিক পার্ফরম্যান্স কখনই পাওয়া যাবে না। এদের মূল সমস্যা হলো মানসিকতায়। উদাহরনস্বরূপ আশরাফুল এর কথা বলা যায়। ওর মূল সমস্যা হলো মানসিকতায়। এটা ঠিক যে আশরাফুলের দিনে আশরাফুলই সেরা, কিন্তু সে কোনদিন পারফর্ম করবে সে আশায় ১১ জনের মধ্যে তাকে দলে অর্ন্তভুক্ত করাটা কখনই ঠিক নয়।

১৬৪ টি একদিনের ম্যাচ খেলে যার ব্যাটিং গড় ২৩.৩৩ তার কাছ থেকে কতটুকুই বা ভালো ব্যাটিং আশা করা যায়? সুতরাং আজকের ম্যাচে তাকে বাদ দেয়াটা একটা ভালো সিদ্ধান্ত ছিলো। আর আমাদের অবশ্যই পরিসংখ্যান এ বিশ্বাসী হওয়া উচিত। একই যুক্তিতে দলে নিজের অবস্থান ধরে রাখার যোগ্যতা রাখে না জুনায়েদ এবং মুশফিকও। আজকের ম্যাচ ভালো খেলার পরও আমি তাকে বাদ দেয়ার পক্ষে। ৪৩ ম্যাচ খেলা জুনায়েদের ব্যাটিং গড় ২২.৫২।

ওয়ান ডাউনে নামা একটা ব্যাটসম্যান এর ব্যাটিং গড় এতো কম কখনই হতে পারে না!!! ওকে কেনো দল থেকে বাদ দেয়া হয়না তা আমার বোধগম্য নয়!! হয়তো রাজনৈতিক কোনো ব্যাপার স্যাপার হতে পারে। ওর জায়গায় শাহরিয়ার নাফিসকে সুযোগ দেওয়া উচিত। আর মুশফিককে বাদ দেয়ার পক্ষে যথেষ্ঠ কারণ রয়েছে। প্রথমত, বড় দলগুলোর দিকে তাকালেই দেখা যায় যে, বড় বড় দলগুলোর উইকেটকিপাররা সাধারণত জাত ব্যাটসম্যান হয়ে থাকে। জাত ব্যাটসম্যান বলতে দলের সেরা ব্যাটম্যানদের মধ্যে সে হয়তো একজন।

যেমনঃ অষ্ট্রেলিয়ার এডাম গিলকিস্ট একসময় ছিলেন, বর্তমানে হাডিনকেও সেরাদের একজন ধরা যায়। শ্রিলঙ্কার সাঙ্গাকারার কথা বলা যায়, ভারতের ধোনি অথবা নিউজিল্যান্ড এর ম্যাককালামকেও উদাহরন হিসেবে তুলে ধরা যায়। আর আমাদের মুশফিক? কিপিংতো বাজে করেই, আর ৮১ ম্যাচে তার ব্যাটিং গড় ২২.৬৮!!! এদের কি এখনো দলে রাখার প্রয়োজন আছে? প্রশ্ন হতে পারে যে এদের নিয়ে দল কিভাবে দু'শোর বেশী রান করে? অথবা, মোটামুটি এদের নিয়েইতো আমরা নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করলাম। উত্তরটা এরকম হতে পারে, 'মূলত নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করার পেছনে কয়েকজনের ব্যাক্তিগতো পার্ফরম্যান্স কাজ করেছিলো, বিশেষ করে সাকিব আল হাসানের কাছেই দুই ম্যাচ হেরেছিলো নিউজিল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডও বাজে খেলেছিলো। আর বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেভাবে ভালো ব্যাটিং না করলেও বোলিং, ফিল্ডিং এবং টিম পার্ফরম্যান্সটা ভালো ছিলো।

কয়েকজনের ব্যাটিং পার্ফম্যান্স বাদ দিলে সেই আগের বাংলাদেশকেই হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে। আজকের ম্যাচের খেলোয়ারদের নিয়েই হয়তো পরবর্তী ম্যাচটাও জেতা সম্ভব। কিন্তু যেহেতু ভালো ভালো অপশন আছে তাই আমার মনে হয় দলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা উচিৎ। যেমন শাহরিয়ার নাফিসকে দলে অন্তভুক্ত করা যেতে পারে। এখন পর্যন্ত ৬৪ ম্যাচে তার ব্যাটিং গড় ৩৩.৪৯।

ব্যাটিং গড়ের দিক থেকে তার অবস্থান দ্বিতীয়। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তো তার একটা বাজে রেকর্ডও আছে, যেটা মোটমুটি অবিশ্বাস্য!! জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তার ব্যাটিং গড় ৬২.৪১। সুতরাং নিউজিল্যান্ড সিরিজ ভালো করার পরও তাকে বাদ দেওয়াটা মনে হয় একটা বড় ধরনের ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো। তাছাড়া ইতিহাস যেটা বলে তাহলো বাংলাদেশে যখন ৩০+ গড়ের কোনো ব্যাটসম্যান ছিলো না তখন এই শাহরিয়ার নাফিসই ছিলো বাংলাদেশ দলের জন্য ব্যাটিং স্তম্ভ। তার সামর্থ্যের কথা অনেকেরই জানা আছে।

সম্ভবত ২০০৬-০৭ এ একবছরে ১০০০+ রান করে একটা রেকর্ডেও তিনি নাম লিখিয়েছিলেন। যাই হোক। যে দলটি কখনই নির্বাচিতো হবে না সেটিই আমার পছন্দের দল। ব্লগে এখন আমিই একজন অবিবেচক নির্বাচক. . . আমার পছন্দের দলটা সবার সাথে শেয়ার করলামঃ ১. তামিম ইকবাল ২. ইমরুল কায়েস ৩. শাহরিয়ার নাফিস (কিপার) ৪. রকিবুল হাসান ৫. সাকিব আল হাসান ৬. মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৭. নাইম ইসলাম ৮. সোহরাওর্য়াদী শুভ ৯. মাশরাফি বিন মর্তুজা ১০. আব্দুর রাজ্জাক ১১. শফিউল ইসলাম ১২. রুবেল হোসেন এই দলের প্রথম চারজন হলো স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান, যাদের মূল কাজ, শুধুই ব্যাটিং করা। এদেরকে দিয়ে বোলিং করার চিন্তাভাবনা কখনই করা যাবে না।

৫-৭ (তিন জন)পর্যন্ত হলো স্পেশালিষ্ট অলরাউন্ডার। ৮-৯ কে অলরাউন্ডার বলা যেতে পারে, তবে ৯, ১০ এবং ১১ হলো মূলত স্পেশালিষ্ট বোলার। -------------------------------------------------- দল পছন্দ না হলে দুঃখিতো। আর পছন্দে/ভালোলাগায় পার্থক্য থাকাটাইতো স্বাভাবিক। ভাইরাসে আক্রান্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম ভাইরাসটি দূর হওয়ায় আজ আমরা জিতেই গেলাম।

অভিনন্দন, তবে আমরা সিরিজ জিততে চাই এবং অবশ্যই সেটা ৪-১ এ। কেনোনা, আমাদের দলের সেরকম সামর্থ্য রয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.