'জীবন' হলো এক কাপ গরম চা আর একটা জ্বলন্ত বেনসনের মতো। গরম চা একসময় জুড়িয়ে যাবে, বেনসনের তামাকও পুড়ে শেষ হয়ে যাবে।
"'কোথায় যাবেন দাদা?" - চ্যংরাবান্ধায় ভারতীয় ইমিগ্রেশন অফিসারের প্রশ্নের উত্তরে কইলাম "দাদা, দার্জলিং যাব"। হালার পুতে কয়, "কেন যাবেন দাদা?" মর জ্বালা। মনে মনে কইলাম "শুওরে কয় কি? ওইখানে মাইনষে যায় ক্যান? ডট ডট ফেলাইতে যায়?" কিন্তু মুখে একখান মেকি হাসি মাইরা কইলাম, "দাদা একটু চেঞ্জ-এ এসছি কিনা; ও এলাকাটা বড্ড মনোরম, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অকৃত্রিম, অফুরন্ত এবং অপূর্ব।
তাই ওখানে কিঞ্চিত বিচরণের অভিপ্রায় জোগছে মনে। "
পশ্চিমবঙ্গের ওই এলাকায় আমি আগেও গেসলাম। জটিল জায়গারে ভাই। অবশ্য পাহাড় আমারে বরাবরই টানে। তাই অফিস থেইক্কা বহুত কষ্টে বস্-রে 'ম্যানেজ' কইরা, কাজ গুছায়া, ছুটি নিয়া গেলাম ঘুরতে।
এই ফাঁকে একটু জানায়া রাখতাছি, আমি কইলাম চান্স পাইলেই চক্কর মারি। যাউকগা, ওইসব কাহানি পরে শুনামু। এলা দাদাদের দ্যাশের কাহানি কই কিছু।
আমি গেসলাম গেল অক্টোবর এর শ্যাষের দিকে। আমার বিবেচনায় এই সেপটেম্বর থেকইক্কা নভেম্বর- এই টাইমটাই দার্জলিং এর ওই সাইডটাতে যাওন ভাল।
এর আগে গেলে হুনছি বৃষ্টি-বাদল থাকে। আর পরে গেলে এমুন শীত পড়ে, যে প্রাকৃতিক কাজ শারনের লাইগা প্যান্ট খুইলা কমোডে বইতে গেলে খবর হয়া যায়।
যারা যান নাই, তাগো লাইগা শর্ট-কাটে কইতাছি, ইন্ডিয়ান ভিসা নেওনের পর গাবতলীতে গিয়া লালমনিরহাট/বুড়িমারীর বাসে উইঠা বুড়িমারী-চ্যংরাবান্ধা বর্ডারে যাওয়া লাগবো। তারপর বাংলাদেশের বুড়িমারী বর্ডার দিয়া ওইপারের চ্যংরাবান্ধায় ঢুকা লাগবো। আল্লাহপাকের ৩৬৫ দিনের প্রত্যেকদিন বর্ডার খোলা থাকে সকাল ৯ টা থেইকা বিকাল ৬ টা পর্যন্ত।
সন্ধ্যা ৬টার পর যতই চিল্লাচিল্লি করেন, লাভ নাই। বাকী নিয়য়-কানুন জানোনের লাইগা আমারে পরে ফোন দিয়েন। সংক্ষেপে বিস্তারিত কয়া দিমুনে।
চ্যংরাবান্ধা থেইকা বাসে যাইতাছি শিলিগুড়ি শহরে। শালার এমুন খারাপ রাস্তা আমার বাপের জন্মে দেখি নাই।
বিকাল ৪ টায় পৌছাইলাম শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়ি নামের একটা জায়গাতে। ভাবছিলাম ওইদিনই যামুগা পাহাড়ে। কিন্তু শইলে কুলাইলোনা। বয়স হইছেতো। তাই চিন্তা করলাম, আইজকা রাইতটা থাইক্কা যাই এই শহরে।
বোজকা-পাতি নিয়া হোটেল খুঁজতে বাইর হইলাম। একটা হোটেলে গিয়া জিগাইলাম, "রুম মিলেগা?" হেব্বি চেহারার এক মহিলা রিসেপশনিস্ট কয়, "মিলেগা"। এরপর বাকিটা একটু দরদাম কইরা যখন এনট্রি বুকে জাতীয়তা লিখতে গিয়া গর্বের সাথে লিখলাম, "বাংলাদেশী", তখন ওই বেটি দেখি একটু লইরা-চইরা বইলো। যতবারই গেলাম এই পর্যন্ত, ভারতের অন্য এলাকার কথা জানিনা, এই পশ্চিমবঙ্গ, কলকাতার মানুষজন বাংলাদেশ থেইকা আসছি শুনলেই 'বাঁকা চোখে' তাকায়। আল্লাহপাক তাদের মন-মানসিকতা উন্নত করার তৌফিক দান করুন, সবাই বলেন, 'আমিন'।
পরের দিন একটু বেলা কইরা রওনা দিলাম 'কালিমপং' এর উদ্দেশ্যে। যদিও শুরুতে পাঠকরা মনে করছিলেন, আমি দার্জলিং যামু, আসলে এইবার প্ল্যান ছিল, 'সিকিম' যামু। কিন্তু সবার জন্যেই জানায় রাখতাছি, ভারতীয় দাদা-রা বাংলাদেশী, চাইনিজ, বার্মিজ এবং পাকিস্তানী আদমদেরকে সিকিম-এ ঢুকতেই দিবেননা (সূত্র: সিকিম ন্যাশনাল ট্যুরিজম, শিলিগুড়ি)।
পর্ব-২
পর্ব-৩
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।