তুমি মুক্ত মানুষ, তুমি ওখানে বসে আছ কি করতে- চলে এসো আমার দিকে। এক ডাক্তাররের সাথে দীর্ঘদিনের অনৈতিক সম্পর্কের কারণে এক নার্স অন্তসত্তা হয়ে পড়েন। যথারীতি নার্স তাকে বিয়ে করার জন্য ডাক্তারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন এবং স্বভাবতই ডাক্তার এড়িয়ে গিয়ে ভুলিয়ে বালিয়ে বাচ্চা নষ্ট করার জন্য নার্সকে রাজী করানোর চেষ্টা করতে থাকেন।
নার্স নাছোড় বান্দি, বাচ্চা সে কোনভাবেই নষ্ট করবে না। ডাক্তার পিচ্ছিল বান্দা বারবার বিয়ে থেকে পিছলে যাচ্ছে।
নার্সের বিয়ের জন্য জোর জবরদস্তী আর ডাক্তারের পিছলে যাওয়ার দুরবিসন্ধি চলতে থাকল।
ডাক্তার অনেক ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করে বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিল এবং সময়মত এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ফন্দিফিকির আঁটতে থাকল।
এভাবেই দিন-মাস পেড়িয়ে গেল এবং নার্সের গর্ভের বাচ্চা দুনিয়ার আলো দেখার জন্য উকি ঝুকি দিতে লাগলো।
এই যখন পরিস্থিতি,
একদিন সকাল বেলা এক গুহাবাসি নাস্তিক নিতাই আসলেন ডাক্তারের কাছে। সবিস্তারে ডাক্তারকে তার তলপেটের প্রচণ্ড ব্যাথার কাহিনী শোনালেন এবং এর থেকে পরিত্রাণের উপায় চাইলেন।
ডাক্তার পরীক্ষা করে দেখলেন গুহাবাসি নাস্তিক নিতাই হার্নিয়ার যন্ত্রণায় ভুগছেন। সাথে সাথে ডাক্তারের মাথায় একটি বিকৃত বুদ্ধি খেলে গেল। তিনি গুহাবাসি নাস্তিক নিতাইকে অসুখের কারণটি উল্লেখ না করে শুধু বললেন, ব্যাথা সারানোর জন্য অপারেশান লাগবে। আপনি আপাতত এই ওষুধগুলি খান। আগামী সপ্তাহের বুধবারে আসবেন আপনার অপারেশন হবে।
তিনি গুহাবাসি নাস্তিক নিতাইকে নার্সের বাচ্চা ডেলিভেরির সম্ভাব্য দিনের তারিখে অপারেশান এর তারিখ দিয়ে বিদায় করে দিলেন।
যথাসময়ে গুহাবাসি নাস্তিক নিতাইয়ের হার্নিয়ার অপারেশন করার পর ডাক্তার তার নিজের হার্নিয়া (নার্সের বাচ্চা) অপারেশন করতে গেলেন। অত্যন্ত সফলতার সাথে বাচ্চার ডেলিভারি করার পর, বাচ্চাটিকে অজ্ঞান গুহাবাসি নাস্তিকের কেবিনে নাস্তিকের কোলের পাশে চালান করে দিয়ে, নার্স মৃত বাচ্চা প্রসব করেছে বলে ঘোষণা দিয়ে দিলেন। তার সাথে একটি মৃত বাচ্চা নার্সের পাশে রেখে দিলেন।
নার্সের জ্ঞান ফেরার পর যখন দেখলেন তার মৃত বাচ্চা হয়েছে, তখন হাউমাউ করে কিছুক্ষণ কেঁদেকেটে বাসার দিকে রওয়ানা দিলেন।
এদিকে নাস্তিকের জ্ঞান ফেরার পর যখন শুনলেন তিনি জীবন্ত বাচ্চা প্রসব করেছেন তখন আবার অজ্ঞান হয়ে গেলেন। আবার যখন জ্ঞান ফিরল, নাস্তিক কিছুতেই মানতে রাজী নন যে তিনি একটি জলজ্যান্ত ছেলে বাচ্চা প্রসব করেছেন।
তিনি ডাক্তারের সাথে প্রচণ্ড তর্কে জড়িয়ে পড়লেন, কিন্তু কিছুতেই মানতে চাইলেন না যে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেছেন।
ডাক্তার তার বাধ্যগত সহকারীদের নিয়ে নাস্তিকে বুঝালেন, দেখেন আপনি একজন গুহাবাসী নাস্তিক, তাই ভগবান তার লিলা-খেলা দেখানোর জন্যই এই কাজটি করেছেন। আপনি বিশ্বাস করেন আর না করেন এটা ভগবানের লীলা।
এরা সবাই, আমরা সবাই সাক্ষী আপনি এই বাচ্চার জন্ম দিয়েছেন। আমরা এখন মনে প্রানে বিশ্বাস করি ভগবান আছেন এবং তিনি আপনাকে তার ক্ষমতার শিক্ষা দেওয়ার জন্যই এই চমৎকারের সৃষ্টি করেছেন। এখানে যারা আছে তারা সবাই সাক্ষী যে আপনি এই চমৎকারের জন্ম দিয়েছেন। এখন আপনি একে অস্বীকার করলে তো অনর্থ হয়ে যাবে। এমনও হতে পারে আপনার উপর এর চাইতেও বড় চমৎকার হয়ে যেতে পারে, যেমনঃ মাথায় শিং, পেছনে লেজ।
ডাক্তার – নাস্তিকের তর্ক-বিতর্ক। অবশেষে নাস্তিক ভগবানের লীলার কাছে হার মানতে বাধ্য হলেন। তিনি ভগ্নমনোরতে বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে গুহার দিকে রওয়ানা দিলেন।
এরপর পেড়িয়ে গেল দীর্ঘ আঠার বছর।
নাস্তিক তার ছেলেটিকে লালন-পালনে কোন ত্রুটি করেননি।
ছেলেটিও কখনো তার মায়ের অভাব বুঝতে পারেনি। ছেলেটি তখন আপন মনে গুহার বাইরে পাহাড়ের কাছে বসে খেলছিল। নাস্তিক দূর থেকে তার মায়াবী মুখের দিকে তাকালেন। তার খুব মায়া লাগলো। তার মনটা বিষণ্ণ হয়ে গেলো।
তিনি মনস্থির করলেন, নাহ যত কষ্টই হোক আজ তিনি ছেলেটিকে সব সত্যি কথা বলে দিবেন। যা হয় হোক, ছেলে এখন বড় হয়েছে, সবকিছু বুঝতে শিখেছে, এখন তাকে সব খুলে বলা যায়।
নাস্তিক ধীর পায়ে ছেলের দিকে এগিয়ে গিয়ে তার পাশে বসলেন। বিষণ্ণ হাতে মাটি থেকে কিছু ঘাস ছিঁড়ে হাতে নিলেন। ছেলে বাবার দিকে থাকিয়ে প্রশ্ন করলোঃ কি হয়েছে বাবা তোমাকে এমন বিষণ্ণ দেখাচ্ছে কেন? তোমার কি শরীর খারাপ? নাস্তিক শুন্য দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকিয়ে একটি বড় নিঃশ্বাস নিলেন।
ধীরে ধীরে গম্ভীর স্বরে বললেন বাবা আজ আমি তোকে একটি সত্যি কথা বলব। যা আমি দীর্ঘ ১৮ বছর তোর কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছি। বাবা তুই আমাকে মাফ করে দিস।
ছেলে স্বকৌতহলে নাস্তিকের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে কি সত্য বাবা? নাস্তিক বুকে সাহস নিয়ে বলে, বাবা তুই আমাকে দীর্ঘ ১৮ বছর যাবত তর বাবা বলে জানস, আসলে আমি তর বাবা না।
ছেলে কেঁদে কেঁদে চিৎকার করে বলে নাহ, আমি মানি না।
তুমিই আমার বাবা, আমি আর কাউকে চিনি না, জানি না। চিনতেও চাইনা। জানতেও চাই না। তুমিই আমার বাবা।
নাস্তিক নিতাই বললঃ না বাবা আমি তোর বাবা না, আমি তোর মা।
আর ঐ যে পাশের গুহার নাস্তিককুল শিরোমণি “খবিছ” সে তর বাবা।
আমার এই গল্পের শিরোনামের সাথে বিষয়বস্তুর কোন মিল নেই, যেমনটা নেই অবিশ্বাসীদের চিন্তা চেতনার সাথে তাদের কথা, কাজ এবং আচরনের। আপেল এবং নিউটন দুজনই আমার পরিচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।