আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর মামলা : বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও রায় নিয়ে গড়িমশি কেন?

জন্মের প্রয়োজনে ছোট ছিলাম এখন মৃত্যুর প্রয়োজনে বড় হচ্ছি ২০১০ সালের ২৫ মার্চ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার পর প্রথম যে মামলাটির কাজ শেষ হয়েছে তা হচ্ছে দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর বিরুদ্ধে করা মামলাটির। ২০১১ সালের ৩রা আক্টোবর মামলার কাজ শুরু হয় আর মামলার কাজ শেষ হয় ৬ ডিসেম্বর ২০১২ সালে। মামলাটির কেবল রায় ঘোষনার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে গত আড়াই মাস ধরে। কিন্তু আজ পর্যন্ত মামলটির রায় ঘোষনার কোন তারিখ জানানো হয়নি। মামলাটির কিছু খুটিনাটি দেখে নেওয়া যাক।

সাঈদীর গ্রেফতার ও মামলার শুরুর প্রক্রিয়া: বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর দায়ের করা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে একটি মামলায় মাওলানা সাঈদীকে ২০১০ সালের ২৯শে জুন গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছর অর্থ্যাৎ ২০১০ সালের ২রা আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১১ সালের ১১ই জুলাই সাঈদীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ১৪ই জুলাই, ২০১১ সালে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগের বিষয়ে শুনানি শেষে ৩রা অক্টোবর সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।

সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনকালে মুক্তিযুদ্ধকালে পিরোজপুর জেলায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ এবং এ ধরনের অপরাধে সাহায্য করা ও জড়িত থাকার ঘটনায় ২০টি অভিযোগ আনা হয়। ২০১১ সালের ২০ ও ২১শে নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) উত্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু ও প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান। সাঈদীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগনামা: মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিন হাজারেরও বেশি নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা বা হত্যায় সহযোগিতা, ৯ জনেরও বেশি নারীকে ধর্ষণ, বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, ভাঙচুর এবং ১০০ থেকে ১৫০ হিন্দুকে ধর্মান্তরে বাধ্য করার ২০টি ঘটনার অভিযোগ আনা হয় সাঈদীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ করা হয়েছে, সাঈদী ছিলেন আরবি ও উর্দু ভাষায় পারদর্শী এবং বাক্পটু। এটাকে ব্যবহার করে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে তিনি সখ্য এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন এজাজের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করেন।

এ কারণে তিনি রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার হতে সক্ষম হন। তার নেতৃত্বে এবং তার সহযোগিতায় পিরোজপুরের পাড়েরহাট বন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং রাজাকার বাহিনী হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ, লুট, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করে। অভিযোগগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, সাঈদী মুক্তিযুদ্ধকালে পাড়েরহাট বন্দরের বিপদ সাহার মেয়ে ভানু সাহাকে নিয়মিত যৌন নির্যাতন করতেন। বিপদ সাহার বাড়িতেই আটকে রেখে অন্যান্য রাজাকারসহ ভানু সাহাকে নিয়মিত ধর্ষণ করতেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়। একসময় ভানু সাহা দেশত্যাগে বাধ্য হন।

বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে একদল রাজাকার পিরোজপুরের হুগলাবুনিয়া গ্রামে হানা দেয়। রাজাকারদের আগমন দেখে গ্রামের অধিকাংশ হিন্দু নারী পালিয়ে যান। কিন্তু মধুসূদন ঘরামীর স্ত্রী শেফালী ঘরামী ঘর থেকে বের হতে পারেননি। তখন সাঈদীর নেতৃত্বে রাজাকাররা তাকে ধর্ষণ করেন।

এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে তিনি একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। এ নিয়ে গ্রামে বিভিন্ন কথা ওঠায় শেফালী ঘরামী দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হন। সাঈদীর নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনী হিন্দু সমপ্রদায়ের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালাতো। তাদের বাড়িঘর লুট করাসহ আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতো। পরে লোকজন সর্বস্ব হারিয়ে ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন।

আর যারা যেতে পারেননি তাদের সাঈদী ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করেন। তাদের নিয়ে তিনি মসজিদে নামাজ পড়তেন। তাদের মুসলমান নামও দেন তিনি। এছাড়া অভিযোগ করা হয়েছে, পিরোজপুরেই বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এবং মুহাম্মদ জাফর ইকবালের পিতা পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর রহমানকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাজাকারদের সহায়তায় হত্যা করে। রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ, সাঈদীর আসল নাম দেলোয়ার হোসেন শিকদার।

একাত্তরে তিনি পিরোজপুরে এ নামেই পরিচিত ছিলেন। লোকে তাকে ‘দেইল্লা রাজাকার’ নামেও চিনতেন। স্বাধীনতার পর তিনি নিজের অপরাধকে আড়াল করার জন্য বোরকা পরে গরুর গাড়িতে চড়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে অস্ত্রসহ যশোরের মো. রওশন আলীর বাড়িতে আত্মগোপন করেন। অনেকদিন পর তার অপরাধের কাহিনী জানাজানি হলে তিনি পরিবার নিয়ে অন্যত্র চলে যান।

এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি আত্মগোপন অবস্থা থেকে বের হয়ে আসেন এবং ভুয়া মাওলানা পরিচয়ে ওয়াজ মাহফিল শুরু করেন। নিজের নাম পাল্টে করেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। এভাবেই তিনি আল্লামা মাওলানার পরিচয়ে নিজের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করেন। বিচার কার্যক্রম শুরু: এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২০১১ সালের ৭ ডিসেম্বর। প্রায় সাড়ে চার মাসে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৮ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।

তাদের মধ্যে ২০ জন ঘটনার বিষয়ে এবং সাতজন জব্দ তালিকার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন। ঘটনার সাক্ষীরা হলেন, মাহাবুব উদ্দিন হাওলাদার, রুহুল আমীন নবীন, মিজানুর রহমান তালুকদার, সুলতান আহমেদ হাওলাদার, মাহতাব উদ্দিন হাওলাদার, মানিক পসারি, মফিজ উদ্দিন পসারি, মোঃ মোস্তফা হাওলাদার, মোঃ আলতাফ হোসেন হাওলাদার, বাসুদেব মিস্ত্রি, আব্দুল জলিল শেখ, আব্দুল আওয়াল এমপি, গৌরাঙ্গ চন্দ্র সাহা, আব্দুল হালিম বাবুল, মোঃ সেলিম খান, জুলফিকার আলী, মধুসূদন ঘরামী, মোঃ হোসেন আলী, মোঃ মোবারক হোসেন ও সাইফ হাফিজুর রহমান। জব্দ তালিকার সাক্ষীরা হলেন, পিআইবির ক্যাটালগার মোঃ রবিউল আলম খান, পিআইবির চতুর্থ শ্রেণীর বুক সার্টার এসএম আমিরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের গাইড কাম কম্পিউটার অপারেটর ফাতেমা বেগম, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের গাইড মোঃ নেছার, বাংলা একাডেমির গ্রন্থাগারিক ইজাব উদ্দিন মিয়া, বাংলা একাডেমির গ্রন্থাগারিক ডিস্ট্রিবিউটর মাসুম উল কবির এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান। রাষ্ট্রপক্ষের ২৮তম ও শেষ সাক্ষী হিসেবে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন সাক্ষ্য দেয়া শুরু করেন ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল। নয় কার্যদিবসে ২৪ এপ্রিল তার সাক্ষ্য শেষ হয়।

আসামিপক্ষ ২০১২ সালের ২৫ এপ্রিল তাকে জেরা শুরু করেন। ২০১২ সালের ১৩ আগস্ট তার জেরা শেষ হয়। এর মাধ্যমে শেষ হয় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া ১৫ সাক্ষীর জবানবন্দি ট্রাইব্যুনালের আদেশে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তারা হচ্ছেন, উষা রানী মালাকার, সুখরঞ্জন বালি, আশীষ কুমার , সুমতি রানী ম্লল, সমর মিস্ত্রি, সুরেশ চন্দ্র ম্লল, গণেশ চন্দ্র সাহা, শহিদুল ইসলাম খান সেলিম, মোঃ মোস্তফা, আব্দুল লতিফ হাওলাদার, আইয়ুব আলী হাওলাদার, সেতারা বেগম, অনিল চন্দ্র ম্লল, রানী বেগম ও অজিত কুমার শীল।

২০১২ সালের ২ সেপ্টেম্বর থেকে সাঈদীর পক্ষের সাক্ষীদের সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এর আগে সাঈদীর পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিতে আসামিপক্ষ ৪৮ জনের নামের তালিকা দিলেও ২০ সাক্ষীকে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য অনুমোদন দেয় ট্রাইবুনাল। এদের মধ্যে ১৭ জন হাজির হয়ে সাফাই সাক্ষ্য দেন। গত ২৩ অক্টোবর ২০১২ সালে তারা আর কোনো সাফাই সাক্ষী আনতে না পারায় সেদিনই সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ বন্ধ করে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। সাঈদীর পক্ষে যে ১৭ জন সাক্ষ্য দেন তারা হলেন শামসুল আলম তালুকদার, আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ, নুরুল হক হাওলাদার, আবুল হোসেন, খসরুল আলম, রওশন আলী, জামাল উদ্দিন ফকির, কুবাত আলী, হেমায়েত উদ্দিন, গোলাম মোস্তফা, আনোয়ার হোসেন, হাফিজুল হক, সাঈদীর ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী, এমরান হোসাইন, আব্দুস সালাম হাওলাদার, আব্দুল হালিম ফকির ও গণেশ চন্দ্র সাহা।

এদিকে গণেশ চন্দ্র সাহা ছিলেন প্রসিকিউশনের সাক্ষী। পুলিশের কাছে দেয়া তার জবানবন্দি ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণও করেছিলো। যে জবানবন্দিতে তিনি তার মায়ের হত্যার জন্য সাঈদীকে দায়ী করেছিলেন। তবে পরে সাঈদীর পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন। ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা যে জবানবন্দি দিয়েছেন তা সঠিক নয়।

তার মায়ের হত্যায় সাঈদী জড়িত নন। পাকিস্তান সেনা বাহিনীর সদস্যরাই তার মাকে হত্যা করেছেন। এ মামলায় সাঈদীর পক্ষে শুনানি ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক, মিজানুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন, মনজুর আহমেদ আনসারি এবং রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিসকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, রাণা দাশগুপ্ত, সৈয়দ হায়দার আলী, জেয়াদ আল মালুম, মোখলেছুর রহমান বাদল প্রমুখ। বিচার কার্যক্রম শেষ ও রায় এর দীর্ঘসূত্রীতা: সাঈদীর মামলায় এর আগেও একবার বিচার কার্যক্রম শেষে সিএভি রাখা হয়েছিল রায় ঘোষনার জন্য। কিন্তু স্কাইপ বিতর্কে বিচারপতি মো. নিজামুল হকের পদত্যাগের কারণে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হলে সাঈদীর মামলার রায় আর ঘোষণা করা হয়নি।

পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে এ মামলার যুক্তিতর্ক নতুন করে শোনা হয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধর অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচারকাজ শেষ হয়েছে গত ৬ ডিসেম্বর ২০১২ সালে। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক ৬ ডিসেম্বর ২০১২, বৃহস্পতিবার বিচারকাজের সমাপ্তি টেনে বলেছেন, "যে কোন দিন মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। " আদেশে বলা হয়, ‍"এ মামলার রায়ের বিষয়ে অপেক্ষমাণ রাখা হলো। রায় ঘোষণার দিন আগে থেকে জানিয়ে দেয়া হবে।

" কিন্তু আজ পর্যন্ত রায় ঘোষনার কোন তারিখ জানানো হয়নি। সবার আগে শেষ বিচার কাজ শেষ হবার পরও এই রায় নিয়ে গড়িমশি কেন? যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে যখন সারা দেশ সোচ্চার তখন এই রায় নিয়ে এমন দোদুল্যমান আচরন কেবল সন্দেহ নয় অজানা সংকেতও বহন করে। আর এরই সুযোগ নিয়ে জামায়াতে ইসলাম সারা দেশে তান্ডব চালাচ্ছে, জাতীয়পতাকা পোড়ানোর সাহস পাচ্ছে আর শহীদ মিনার ভাঙ্গার মত স্পর্ধা দেখাচ্ছে। তাই অনতিবিলম্বে রায় ঘোষনা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হোউক, ভেঙ্গে দেওয়া হোউক জামায়াত শিবিরের কালো থাবা।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.