আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাবি ছাত্রীর পর্নো ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল

এক সুময় ব্যান খাইতে চ্রম টেস্ট লাগতো, এখন খাইতে কিরাম যেন তিতা তিতা লাগে.. তাই খাওন ছাইড়া দিচি...
অচেনা এক শহর ঢাকা। উচ্চশিক্ষার আশায় এখানেই ছুটে আসেন তাপসী (ছদ্মনাম) নামে এক তরুণী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই মুখোমুখি হন আবাসন সমস্যার। এ সময় তাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন দূরসম্পর্কের এক ভাই শরিফুল ইসলাম। তিনি তাপসীকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শিববাড়ি এলাকায় একটি বাসায় সাবলেটে থাকার ব্যবস্থা করেন।

সেই থেকে তাপসীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্র শরিফুলের। ঢাকায় কোনো নিকটাত্মীয় না থাকায় তাপসী তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এই অসহায়ত্বের সুযোগে শরিফুলের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তাপসীর ওপর। একদিন পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাপসীকে অচেতন করে তার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন শরিফুল। সেই ছবি ও ভিডিও ক্লিফকে পুঁজি করে মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেইল শুরু করেন তিনি।

ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাপসীর সঙ্গে শরিফুল গড়ে তোলেন শারীরিক সম্পর্ক। কেবল শরিফুল নন, তার দুই বন্ধু তুহিন ও আকরামের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা হয় তাপসীকে। এখানেই থেমে ছিল না শরিফুলের লাম্পট্য। শরিফুলের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে তাপসীর আপত্তিকর ছবি পাঠানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও অনুষদ অফিস, শামসুন্নাহার হল প্রভোস্টের কাছে। এমনকি পাঠানো হয় তাপসীর বাবা, বন্ধু ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ূয়া ছোট ভাইয়ের কাছেও।

অচেতন মুহূর্তে তোলা দুটি নগ্ন ছবি নাম-ঠিকানাসহ ফেলে রাখা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে দু'বার স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি হন তাপসীর মা। এই ঘটনার খলনায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের এমবিএ প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র সূর্য সেন হলের ১৫৯ নম্বর রুমের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম (২৪) বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে। প্রতারণার শিকার ওই ছাত্রীর দায়ের করা মামলায় হাজারীবাগ থানা পুলিশ গতকাল বিকেলে তাকে গ্রেফতার করে। গতকাল তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

হাজারীবাগ থানায় তিন পৃষ্ঠার এক এজাহারে তাপসী তার সম্ভ্রমহানির বিশদ চিত্র তুলে ধরেন। যেভাবে শুরু প্রতারণা : ২০০৯ সালের জুনে একটি কোচিংয়ে ক্লাস নেওয়ার কথা বলে শরিফুল তাপসীকে খুলনায় নিয়ে যান। সেখানে একটি বাসায় রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাপসীকে পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন শরিফুল। অচেতন অবস্থায় সেখানেই তাপসীর আপত্তিকর ছবি তোলেন তিনি। বিষয়টি তখনও জানতেন না তাপসী।

এক পর্যায়ে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন শরিফুল। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আপত্তিকর ছবি তোলার কথা ফাঁস করেন প্রতারক শরিফুল। তাপসীকে দেখানো হয় তারই দুটি আপত্তিকর ছবি। ইন্টারনেটে ভিডিও ক্লিফ ছাড়াও স্থিরচিত্র বিভিন্ন জায়গায় পাঠানোর হুমকি দেন তিনি। পরে সামাজিক সম্মানের কথা চিন্তা করে শরিফুলের কুপ্রস্তাবে রাজি হতে বাধ্য হন তাপসী।

স্ত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নেওয়া হয়। সেখানে জোরপূর্বক তাপসীর ওপর যৌন নির্যাতন চালান শরিফুল। দুই বন্ধুর সঙ্গেও তাপসীকে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাধ্য করেন তিনি। যেভাবে ফাঁস হয় প্রতারণা :শরিফুলের ফাঁদে পড়ে যৌন নির্যাতনের শিকার তাপসী বিষয়টি তার পরিবারকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে পরিবারের সিদ্ধান্তে তাপসী প্রতারক শরিফুলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করেন।

এরপর শরিফুল তাপসীর কাছে টাকা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে তার ছোট ভাইকে অপহরণ করে হত্যা ও তাকে রাস্তায় টানাহেঁচড়া করে অপমান করার হুমকি দেন। শরিফুলের এমন হুমকির পরও সিদ্ধান্তে অটল থাকেন তাপসী। গত ৭ নভেম্বর একটি খামে দুটি আপত্তিকর ছবি ও একটি চিঠি পাঠানো হয় তাপসী ও তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ূয়া ভাইয়ের হলের ঠিকানায়। পরদিন একই ধরনের আপত্তিকর ছবি পাঠানো হয় তাপসীর বাবার কাছে। তাপসী যে অনুষদের ছাত্রী, সেই অনুষদের মাঠে একটি চিঠিতে ভিডিও ক্লিফ প্রকাশের হুমকিসহ ফেলে রাখা হয় দুটি আপত্তিকর ছবি।

পরে সেই ছবি পাঠানো হয় ডিন অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রথমে শাহবাগ থানাকে অবহিত করে। পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের উপস্থিতিতে সূর্য সেন হল থেকে শরিফুলকে গ্রেফতার করে। ঘটনাস্থল হাজারীবাগ থানাধীন হওয়ায় তাপসী সেখানে মামলা দায়ের করেন। শরিফুল ঘটনার সঙ্গে তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, এ ঘটনায় শিগগির একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হতে পারে। হাজারীবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক সমকালকে জানান, শরিফুলকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত Click This Link
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.