বন্যপ্রাণীদের বাঁচান, পরিবেশ রক্ষা করুন
সম্ভবত বন্যপ্রাণী ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এবং লজ্জাজনক অধ্যায় হল 'পেসেঞ্জার পিজিয়ন' নামক কবুতর জাতীয় অতিব সুন্দর পাখিটার বিলুপ্তি ।
অবিশ্বাস লাগলেও:
'পেসেঞ্জার পিজিয়ন' এর একটি দলে/ঝাঁকে পাখি থাকত ১ থেকে ২ বিলিয়ন (১০০-২০০ কোটি) !
ঝাঁকটি এত বড় যে প্রস্থে হত এক মাইলের বেশী এবং দৈর্ঘ্যে হত ৩০০ মাইল !
ঝাঁকটি এত ঘন হত আকাশের সূর্যের আলো মাটিতে পরতে পারত না !
মাথার উপর দিয়ে যখন উড়ে যেত তখন উড়ে যাওয়া শেষ হতে অপেক্ষা করতে হত ৪ থেকে ৫ ঘন্টা !
উত্তর আমেরিকার মোট পাখি জনসংখ্যার ৪০% ছিল 'পেসেঞ্জার পিজিয়ন' !
প্রজনন ঋতুতে শত শত বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে এরা বাসা বানাত আর এক একটি গাছে থাকত ১০০ এরও বেশী বাসা !
লম্বা লেজের 'পেসেঞ্জার পিজিয়ন' পরিযায়ী বা মাইগরেটরী ছিল পাওয়া যেত উত্তর আমেরিকা মহাদেশে। গ্রীস্মে এটি আমেরিকার উত্তরদিকে এবং কানাডার দিকে চলে যেত এবং শীত মৌসুমে আমেরিকার দক্ষিনদিকে এবং মেক্সিকোর দিকে থাকত। 'পেসেঞ্জার পিজিয়ন' সবসময় দলবদ্ধ ভাবে থাকত।
নিষ্ঠুর মানুষদের হিংস্র থাবা:
১৮০০ সালের দিকেও পাখিটি পর্যাপ্ত পরিমানে ছিল,
ইউরোপ থেকে যাওয়া ঘাতক আমেরিকানরা একে নিয়ে খেলত এক ভয়ঙ্কর শিকার খেলা।
শত শত শিকারী বন্দুক হাতে মাথার উপর দিয়ে মেঘের মত ঘন ঝাঁকটিতে গুলি চালাত একের পর এক যতক্ষন না ঝাঁকটি শেষ হত আর বৃষ্টির মত মৃত পাখি পড়তে থকত নিচে !
দাসদের সস্তা খাবারের জন্য এবং মুনাফাজনক ব্যবসার জন্য ইউরোপিয়রা বাণিজ্যিক ভাবে 'পেসেঞ্জার পিজিয়ন' তাদের বাসা থেকে শিকার করত এবং জাহাজ ভরে ভরে ইউরোপে নিয়ে আসত এমনকি এক দিনে ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) পরিমান পর্যন্ত পাখি ধরা পরত । এলকোহল মিশানো শস্য এবং ধোয়া ব্যবহার করে সহজ উপায়ে তাদের ধরা হত।
চিরতরে হারিয়ে যাওয়া :
মাত্র কয়েক বছরেই পাখিটি দ্রুত হ্রাস পায় এবং প্রকৃতি থেকে দ্রুত হারিয়ে যেতে থাকে মানুষের ব্যপক বিধ্বংসী মনোভাবে । ১৯০০ সালের দিকে একসময় চিরতরে হারিয়ে যায় প্রকৃতি থেকে।
মার্থা নামের শেষ 'পেসেঞ্জার পিজিয়ন' পাখিটি ১৯১৪ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর বেলা ১.০০ ঘটিকায় আমেরিকার 'চিনচিনাতি চিরিয়াখানায়' মৃ্ত্যুর মধ্য দিয়ে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যায় 'পেসেঞ্জার পিজিয়ন' নামক পাখিটি।
'মার্থা' পৃথিবীর শেষ 'পেসেঞ্জার পিজিয়ন'
যে পাখিটে আকাশে ডানা মেললে সূর্যের আলো মাটিতে পড়ত না সে পাখিটি শুধু মানুষের কারনে মাত্র কয়েক দশকে এভাবে চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেল এর দায়ভার কার ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।